যদি সভ্যতার ইতিহাসের দিকে তাকানো যায়, তা হলে দেখা যাবে যে বসতি ছেড়ে আসা মানুষের সভ্যতার শিকড়ের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে। আদিম যুগে যে জায়গায় জল এবং শিকার বেশি, সেখানে ঘুরে ঘুরে ডেরা বাঁধত মানবগোষ্ঠী। এ ভাবেই তারা মিলেমিশে গিয়েছে একে অপরের সঙ্গে। আবার ঐতিহাসিকরা এটাও বলে থাকেন যে আর্যরাও প্রকৃতপক্ষে অভিবাসী (Migrants); স্বভূমি ছেড়ে এসে তারা নিজেদের জায়গা তৈরি করেছিল দ্রাবিড়-অধ্যুষিত ভারতভূমিতে।
advertisement
অভিবাসী এবং যাযাবর আর্যদের (Arya) সেই ইতিহাস বর্তমানে পরিণত হয়েছে গৌরবগাথায়। কিন্তু যদি বিশ্বের আধুনিক প্রেক্ষাপটে দৃষ্টিনিক্ষেপ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে অভিবাসীজীবনের ছবিটাও মোটেই নয়নমনোহর হয়ে সামনে আসে না। বরং তা জীবনযাপনের গ্লানিতে পরিপূর্ণ। দেশভাগ, বাংলাভাগের সময়ের অভিবাসী সমস্যা তো আছেই, পাশাপাশি বর্তমান সময়ের রোহিঙ্গাজীবনও (Rohingya) মর্মান্তিক জীবনযুদ্ধে পরিপূর্ণ। সেই সব দিক বিচার করলে আজকের এই দিনটির উদযাপন সব দিক থেকেই বিশেষ তাৎপর্যবহ হয়ে ওঠে।
বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে ৫০০টি অফিস আছে ইউনাইটেড নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলির (United Nations General Assembly)। নানা দেশের নানা সরকারি, বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে সংগঠন অভিবাসীদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু সেই লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠেছে করোনাকালে (Covid 19)। যাঁদের মাথার উপরে ছাদ নেই, বসতিশিবিরে রয়েছে জলের পর্যাপ্ত অভাব, অভাব থাকার জায়গার, উপার্জনেরও- সেখানে হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো ব্যাপারগুলি সম্ভব হয়ে উঠছে না। পরিণামে করোনাভাইরাসের (Coronavirus) আক্রমণের মুখে পড়ছে অভিবাসীশিবিরগুলো।
এই সমস্যা প্রতিরোধে চলতি বছরের থিম- Reimagining Human Mobility। করোনাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে যাতে মানবিক এবং স্বাস্থ্যের আলো থেকে বঞ্চিত না হন অভিবাসীরা, চলছে সেই প্রচেষ্টা।