সুশীলা কারকির স্বামীর নাম দুর্গাপ্রসাদ সুবেদি৷ তিনি নেপালি কংগ্রেসের প্রাক্তন যুবনেতা ছিলেন৷ বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ই দুর্গাপ্রসাদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল সুশীলার৷
নেপালের প্রথম বিমান অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৩ সালের ১০ জুন৷ সেই বিমান অপহরণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের অন্যতম ছিলেন কারকির স্বামী দুর্গাপ্রসাদ সুবেদি৷ সেই বিমানে বলিউড অভিনেত্রী মালা সিনহাও ছিলেন৷
advertisement
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজের দুই সঙ্গী নগেন্দ্র ধুঙ্গেল এবং বসন্ত ভট্টরাইয়ের সঙ্গে মিলে বিমানটিকে অপহরণ করেন নেপালি কংগ্রেসের তৎকালীন যুবনেতা দুর্গাপ্রসাদ৷ অপহরণ কাণ্ডের মূল চক্রী ছিলেন গিরিজা প্রসাদ কৈরালা, যিনি পরবর্তী সময়ে চার বার নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন৷ নেপালের তৎকালীন রাজ মহেন্দ্রকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটাতে সেই সময় সশস্ত্র বিপ্লব শুরু হয়েছিল নেপালে৷ সেই আন্দোলনের অর্থের জোগানের জন্যই বিমান অপহরণের ছক কষা হয়েছিল৷
১৯৭৩ সালের ১১ জুন দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ নেপালের দূতাবাসকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপালের কাঠমান্ডুগামী একটি দুই ইঞ্জিনের যাত্রীবাহী বিমানকে তিন জন মিলে অপহরণ করে৷ বিমানটিতে নেপালের স্টেট ব্যাঙ্কের প্রায় ৪ লক্ষ ডলার রাজধানী কাঠমান্ডুতে পাঠানো হচ্ছিল৷ সুবেদি এবং তাঁর দুই সঙ্গী যাত্রী সেজে বিমানটিতে ওঠেন৷ এর পর বিমান আকাশে উড়তেই পাইলটকে বন্দুক দেখিয়ে বিমানটিকে বিহারের ফোর্বসগঞ্জে নিয়ে আসার জন্য হুমকি দেওয়া হয়৷ সেখানে অপহরণের পিছনে থাকা আরও পাঁচ চক্রী অপেক্ষা করছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে ছিলেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালাও৷ এই অপরাধে পরবর্তী সময় সুশীল কৈরালাকে ভারতে তিন বছর জেল বন্দি থাকতে৷
বিমানটি বিহারের ফোর্বসগঞ্জ পৌঁছতেই বিমানে থাকা তিনটি বাক্স ভর্তি টাকা নিয়ে নেমে যায় তিন অপহরণকারী৷ এর পর বাকি সঙ্গীদের নিয়ে জঙ্গলের ভিতরে গা ঢাকা দেন তাঁরা৷ এর পর বিমানটি কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশে রওনা দেয়৷ বিমানের কোনও যাত্রী অথবা বিমানকর্মীর কোনও ক্ষতি করেনি অপহরণকারীরা৷
নগেন্দ্র ধুঙ্গেল ছাড়া এই বিমান অপহরণের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককেই এক বছরের মধ্যে গ্রেফতার করে ভারত৷ দু বছর ভারতের জেলে বন্দি থাকেন সুবেদি৷ এর জামিন পেয়ে দেশে ফিরে যান তিনি৷