ইতিহাসবিদদের গবেষণা বলছে, চিলে ও পেরুর উপকূলে চিঙ্কোরো গোষ্ঠী ছিলেন মৎস্যজীবী৷ তাদের বসতিও ছিল মৎস্যজীবীপ্রধান৷ মিশরীয়দের অন্তত হাজার বছর আগে ৫০৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেই তাদের হাতে মমি হত মৃতদেহ৷ শুষ্ক জলবায়ুর কারণে মমিগুলি তাদের চেহারা ধরে রাখে অনেক দিন৷
কোনও ঐতিহাসিকদের মত, এই মমি প্রায় ৭ হাজার বছরেও প্রাচীন৷ তবে শুধু আবহাওয়ার কারণেই মমির গায়ে চামড়া লেগে থাকত, তা নয়৷ গবেষণা বলছে, মৃতদেহর চামড়া ও ত্বক ছাড়িয়ে নিয়ে কঙ্কালের উপর সিন্ধুঘোটকের চামড়া, মাটি, অ্যালপাকা উল-সহ নানা জিনিসের প্রলেপ দিত৷ পরচুলা তৈরি করে পরিয়ে দেওয়া হত মমির মাথায়৷
advertisement
তবে চিলের আটাকামা মরুভূমির জলবায়ু দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে৷ তার জের পড়েছে মমির উপরে৷ জলবায়ুতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা ক্ষতি করছে প্রাচীন মমির৷ একদিকে যেমন সেগুলি ক্ষয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে অল্পতেই সেগুলি উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে৷ কিন্তু মমি তৈরিতে এত কুশলী হয়েও চিঙ্কোরো সম্প্রদায় সেভাবে ইতিহাসে গুরুত্ব পায়নি কেন? উপকূলীয় অঞ্চলের এই বাসিন্দাদের তৈরি কোনও স্থাপত্য বা বাসনপত্রের হদিশ ইতিহাসবিদরা এখনও পাননি৷ তবে তারা যে মমি নির্মাণকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সে বিষয়ে একমত ঐতিহাসিকরা৷ পূর্ণবয়স্ক তো বটেই৷ কার্যত যাযাবর শ্রেণির এই মানুষদের হাতে মমিকৃত হত মৃত ভ্রূণ বা মৃত সদ্যোজাতরাও৷
মূলত যাযাবর বৃত্তি ছেড়ে থিতু হতে পারেননি বলেই শিকার ও মাছশিকারই ছিল চিঙ্কোরোদের মূল জীবিকা৷ পাশাপাশি, নির্দিষ্ট কোনও স্থানে থিতু হতে পারেননি বলেই তাদের সভ্যতা ইতিহাসের নিরিখে পাল্লা দিতে পারেনি৷ দু’ দশকের চেষ্টার পর তাদের তৈরি মমি ইউনেস্কোর হেরিটেজ সাইট হিসেবে গৃহীত হয়েছে সম্প্রতি৷ এর ফলে ইতিহাস চর্চায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলেই ঐতিহাসিক-গবেষকদের মত৷