ঘটনাটি সামনে আসে কয়েক সপ্তাহ আগে। বাড়িওয়ালা তাঁকে বাড়ি খালি করতে নোটিস দেন। পরিদর্শনে গিয়ে তিনি দেখেন—এক নবজাতকের দেহ কাপড় ও প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়া অবস্থায় আলমারির ভিতরে পড়ে আছে! তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন।
এই কারণেই ফ্রিজে বরফ জমে; সহজ কৌশল কাজে লাগিয়ে মুহূর্তের মধ্যে বরফ গলিয়ে নিন, দেখে নিন কী করতে হবে!
advertisement
স্টেশনে দাঁড়ানো কোচি মেলকে পিষে দিল মেঙ্গালুরু মেল! দক্ষিণ ভারতে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। অভিযুক্ত মহিলার নাম জেসিকা মাউথে (Jessica Mauthe), বয়স ৩৯ বছর। পুলিশ এসে বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে আরও তিনটি নবজাতকের দেহ উদ্ধার করে। তিনটি দেহই চিলেকোঠায় টোট ব্যাগ ও প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
পুলিশি জেরায় জেসিকা বলেন, তিনি সব চারটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন নিজের বাথরুমে।
- প্রথম শিশুর জন্মের পর তিনি “একটা ক্ষীণ শব্দ” শুনেছিলেন, তারপর অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর দেখেন, শিশুটি মৃত।
- দ্বিতীয় ও তৃতীয় সন্তানের বিষয়ে তাঁর দাবি—“তারা হয়তো মৃত জন্মেছিল, কারণ কোনও শব্দ শোনা যায়নি।”
- কিন্তু চতুর্থ শিশুর গল্প ভয়াবহ—
জেসিকা বলেন, তিনি টয়লেটে সন্তান প্রসব করেছিলেন, তখন শিশুটি জীবিত ছিল, কাঁদছিলও। কিছুক্ষণ পর তিনি শিশুটিকে তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে কোলে নেন। প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর শিশুটি নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, জানেন না শিশুটি তাঁর চেপে ধরার কারণে, নাকি শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায়।
বিচারে ধরা দিল ভয়াবহ সত্য
পুলিশ জানিয়েছে, জেসিকা প্রত্যেক সন্তানের জন্ম ও মৃত্যুর বিষয়ে আলাদা আলাদা বয়ান দিয়েছেন, যা অত্যন্ত পরস্পরবিরোধী ও বিভ্রান্তিকর।
জেসিকার আইনজীবী চাক পাস্কাল (Chuck Pascal) আদালতে দাবি করেন,
“পুলিশের কাছে কোনও প্রমাণ নেই যে শিশুরা জীবিত ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। কোনও ময়নাতদন্ত রিপোর্টও নেই। আর জেসিকার বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়, কারণ সন্তান জন্মের সময় তিনি রক্তাল্পতা, তীব্র ব্যথা ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন।”
তবে বিচারক জে. গ্যারি ডিকোমো (J. Gary DeComo) প্রতিরক্ষা পক্ষের যুক্তি খারিজ করে দেন। তিনি সমস্ত অভিযোগ বহাল রাখেন এবং জেসিকা মাউথেকে জামিন অযোগ্য অপরাধে জেল হাজতে পাঠান।
বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন, এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ এখনও ঘোষণা হয়নি।
সমাজ স্তব্ধ, প্রশ্ন একটাই—মা কীভাবে এমনটা করতে পারে?
এই ঘটনার পর পেনসিলভেনিয়ার ছোট শহরটি আতঙ্ক ও বিষাদে স্তব্ধ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, জেসিকা বরাবরই একা থাকতেন, খুব কম কথা বলতেন কারও সঙ্গে।
তবুও—চারটি নবজাতকের দেহ আলমারি আর চিলেকোঠায় লুকিয়ে রেখে এত বছর বসবাস—এ যেন বাস্তবের গায়ে থ্রিলারের ছায়া।

