ঘটনাটি ঘটেছে কেমব্রিজশায়ারের হান্টিংডন স্টেশনের কাছে, যেখানে ডনকাস্টার থেকে লন্ডনের কিংস ক্রসগামী একটি ট্রেন হঠাৎ থামানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ট্রেন থামার আগেই যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে—“রক্ত চারপাশে ছিটকে যাচ্ছিল, কেউ কেউ টয়লেটে লুকিয়ে পড়েছিলেন,” জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
advertisement
এক যাত্রী গ্যাভিন (Gavin), যিনি সেই সময় ট্রেনে ছিলেন, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ (Sky News)-কে জানান, “আমি শুনতে পাচ্ছিলাম কেউ চিৎকার করে বলছে, ‘ওদের কাছে ছুরি আছে! আমায় ছুরি মারা হয়েছে!’ তারপরই চতুর্দিকে হুলস্থূল পড়ে যায়।”
গ্যাভিনের বর্ণনা অনুযায়ী, একজন যাত্রী জরুরি ব্রেক টেনে ট্রেন থামান। ট্রেন থামার পরই সশস্ত্র পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পুলিশ ট্রেনে উঠে সন্দেহভাজনদের নিয়ন্ত্রণে আনে।
গ্যাভিন বলেন, “আমি দেখছিলাম, একজন যাত্রী আমাদের কামরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, চিৎকার করে বলছিলেন যে তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তাঁর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। যখন ট্রেন থামল, তখন তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ পরে এক্স (X)-এ পোস্ট করে জানায়,“কেমব্রিজশায়ারের একটি ট্রেনে একাধিক যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আহত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ৯ জনের আঘাত প্রাণঘাতী হতে পারে।”
পুলিশ আরও জানায়, সন্ত্রাসদমন বিভাগের (Counter Terrorism Police) সদস্যরাও তদন্তে সহায়তা করছেন। অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস (The Times)-কে বলেন, “একজন মানুষকে বিশাল ছুরি হাতে দেখেছিলাম। রক্ত চারদিকে ছিটকে যাচ্ছিল। লোকজন আতঙ্কে টয়লেটে লুকোচ্ছিল, কেউ কেউ পালানোর সময় অন্যের পায়ে পা দিয়ে পড়ে যাচ্ছিল।”
স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে আতঙ্কের পরিবেশ এতটাই ছিল যে, ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক যাত্রী কামরা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন, ফলে এক সময় হুড়োহুড়ির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পরে গ্যাভিন জানান, কীভাবে পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের কাবু করে। তাঁর কথায়,“ট্রেন থেকে নামার সময় দেখলাম, সশস্ত্র পুলিশ একজন সন্দেহভাজনের দিকে অস্ত্র তাক করে চিৎকার করছে—‘Get down! Get down!’ সে তখনও হাতে বড় ছুরি নাড়াচ্ছিল। পুলিশ টেজার ব্যবহার করে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক করে।”
ঘটনার পর পুরো রেলস্টেশন এলাকা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। তদন্তে নেমেছে ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ও কাউন্টার টেরর ইউনিট। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা চলছে।
