এক সময় চীনে এক সন্তান নীতি কার্যকর ছিল, যা এখন বাতিল করা হয়েছে। এখন দম্পতিদের একাধিক সন্তান নেওয়ার অনুমতি থাকলেও, নতুন প্রজন্ম সন্তান নেওয়ার প্রতি খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অর্থনৈতিক চাপ, উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি আগ্রহ—এসব কারণেই চীনা যুবসমাজ পরিবার গঠনে আগ্রহ হারাচ্ছে।
advertisement
চীনের শ্যান্ডং শ্যান্টিয়ান কেমিক্যাল গ্রুপ নামে একটি কোম্পানি তাদের কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছে যে, আগামী ৯ মাসের মধ্যে সন্তান নিতে হবে, অন্যথায় তাদের চাকরি চলে যাবে। এক অভ্যন্তরীণ নির্দেশনায় কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা “দেশের উন্নতির জন্য” সন্তান নিতে ইচ্ছুক হওয়া উচিত।
শুধু এই কোম্পানি নয়, আরও কিছু প্রতিষ্ঠানও এমন নীতির দিকে ঝুঁকছে। কিছুদিন আগে চীনের একটি জনপ্রিয় সুপারমার্কেট চেইন তাদের কর্মীদের জানিয়েছিল, বিয়ে বা বাগদানের উপহার চাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং দ্রুত পরিবার গঠনের কথা ভাবতে হবে।
আরও পড়ুন: থিকথিকে ভিড়ের মধ্যেই ঢুকে গেল গাড়ি, ফের ভয়াবহ দুর্ঘটনা জার্মানিতে! মৃত ১, আহত একাধিক…
চীনা সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নতুন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে চলেছে। বর্তমানে চীনে ছেলেদের জন্য বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ২২ বছর এবং মেয়েদের জন্য ২১ বছর। তবে, সরকার এই বয়স কমিয়ে ১৮ বছর করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যাতে তরুণ-তরুণীরা দ্রুত বিয়ে করে সন্তান নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি এবং উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় এই সমস্যার মূল কারণ। অনেক তরুণ মনে করছেন, সন্তান নেওয়া তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে ব্যাহত করবে। অন্যদিকে, লিভ-ইন সম্পর্কের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে এবং বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে।
২০২৩ সালে চীনে মাত্র ৬১ লাখ বিয়ে হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। ১৯৮৬ সালের পর এটাই সর্বনিম্ন সংখ্যা। গত তিন বছর ধরে চীনের জনসংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে চীনা সরকার বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা নারীদের সঙ্গে কথা বলে গর্ভধারণের পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি, নারীদের এমনও বলা হচ্ছে যে, গর্ভাবস্থায় তারা আরও সুন্দর হয়ে ওঠেন!
চীনের এই কড়া জনসংখ্যা নীতির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, দেশটি দ্রুত কর্মক্ষম জনসংখ্যার সংকটে পড়তে চলেছে এবং এই সমস্যা সমাধানে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।