এদিনের বৈঠকের উদ্যোক্তা ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সুগা। ইন্দো প্যাসিফিকে চিন যেভাবে শক্তি সঞ্চয় করছে, সেটা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই নিয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়। মোদি বলেন, কোয়াডের যে উদ্দেশ্য সেটা ভারতের 'বসুদেব কুটুম্বকুম'-অর্থাৎ সারা বিশ্বই একটি পরিবার সেই বিশ্বাসের সঙ্গে খাপ খায় বলে তিনি জানান। মাত্র ১৮ মাস আগেই কোয়াড দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল। কোয়াড ক্রমশই আরও পরিণত ও অভিজ্ঞ হয়ে উঠছে বলে এদিন মন্তব্য করেন মোদি। তিনি বলেন, "কোয়াড একটি শক্তিশালী স্তম্ভ হয়ে উঠেছে অল্প সময়ের মধ্যেই।"
advertisement
অন্যদিকে চিনের নাম না করেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় আন্তর্জাতিক আইন বলবৎ থাকতে হবে, কোনওরকম আধিপত্য চলবে না। ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় চারটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান। তাঁর কথায় কার্যত বারবারই উঠে আসে চিনের প্রসঙ্গ। চিনের গতিবিধি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষের সংক্রান্ত বিষয়টিও এদিনের বৈঠকে উঠে আসে।
যদিও ভারতের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা জানান, এদিন কোয়াড ভ্যাকসিন পার্টনারশিপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চার দেশই নিজের সম্পদ এতে কাজে লাগাবে যাতে বিভিন্ন দেশকে সুলভে টিকা দেওয়া যায়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২০২২-এর মধ্যে ১০০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরিতে নেতৃত্ব দেবে ভারত। সেই কাজে অর্থনৈতিকভাবে ভারতকে সাহায্য করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। অন্যদিকে আনুষাঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণদিকগুলিতে পাশে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি কোল্ড চেনের জন্য, প্রশিক্ষণও দেবে অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় মহাসাগর ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডে টিকা পৌঁছে দিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে তারা। সস্তায় ঋণ দেবে জাপানও। ভ্যাকসিন বণ্টন করার কাজে ব্যবহার করা হবে COVAX WHO, Gavi, Asean প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলিকে। তিনটি ওয়ার্কিং গোষ্ঠী তৈরি করার সিদ্ধান্ত এদিন নেওয়া হয়েছে। একটি হস ভ্যাকসিন এক্সপার্ট গ্রুপ যেখানে দেশগুলির পারস্পরিক বোঝাপড়ার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। একটি হবে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। সেটির মূল লক্ষ্য থাকবে প্যারিস চুক্তিকে বাস্তবায়িত করা। এছাড়াও নয়া প্রযুক্তি বিষয়ক একটি গোষ্ঠী তৈরি করা হবে যারা ৫জি প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন টেলিকমিউনিকেশন সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনা করবে।