অবশ্যই গাজোয়ারি ব্যাপার। কিন্তু পাশাপাশি বুদ্ধি এবং সাহসের প্রশংসা করতে হবে এই ছোট্ট দেশটির। মিশরের প্রেসিডেন্ট নাসেরের নেতৃত্বে তৈরি করা হল বিশেষ যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি। দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গেল, পশ্চিম দিক থেকে মিশর, পূর্ব থেকে জর্ডান এবং উত্তর দিক থেকে সিরিয়া একযোগে আক্রমণ করবে, তৈরি হল নীল নকশা। মার্কিন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের মাধ্যমে রিপোর্ট পেল ইজরায়েল। হাতে বেশি সময় নেই। জনসংখ্যার তুলনায় বাকিদের থেকে কম ইজরায়েল সেনা। যৌথ আরব সেনার সংখ্যা যেখানে ৩ লাখের কিছু বেশি, সেখানে মেরেকেটে ইজরায়েলের হাতে ৬৫,০০০ সেনা। যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংকের সংখ্যাতেও এগিয়ে আরব জোট।
advertisement
পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক ভয় পায়নি ইজরায়েল। সেনা প্রধান মোশে দায়ান বুঝতে পারলেন যদি মিশর, সিরিয়া এবং জর্ডান আগেই হামলা করে দেয় তাহলে ইজরায়েলের হার নিশ্চিত। তাই দাবার পাল্টা চাল দিলেন তিনি। ওয়ার রুমে কয়েক ঘণ্টা বৈঠকের পর স্ট্র্যাটেজি চূড়ান্ত করে ফেলল ইজরায়েল। ঠিক হয়ে গেল আরব জোট আক্রমণ করার আগেই আক্রমণ করবে ইজরায়েল। পরের দিনই ১৬০ টি ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান মিশর, জর্ডান এবং সিরিয়ার ওপর একসঙ্গে হামলা চালাল। মিশরের হাতে রাশিয়ার থেকে পাওয়া মিগ ফাইটার জেট ছিল। কিন্তু আকাশে ওড়ার আগেই ২০০ টি মিশরীয় জেট মাটিতেই ধ্বংস করে দিল ইজরায়েল বিমান বাহিনী। ৮০ টি ইজরায়েলি জেট মাত্র কুড়ি মিনিটেই মিশরের কোমর ভেঙে দিল। বাকি ৮০ টি সিরিয়া এবং জর্ডান বিমানবাহিনীকে ধুলিস্যাৎ করে দিল।
প্রেসিডেন্ট নাসের সিনাই অঞ্চল দিয়ে ইজরায়েলের জাহাজ যেতে দেবেন না পণ করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল আর্থিক দিক থেকে ইজরায়েলকে পিছিয়ে দেওয়ার। কিন্তু শোচনীয় পরাজয়ের পর নাসের নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন। তারপর থেকে ছোটখাটো হামলা চালালেও একযোগে আরব দেশগুলোর সাহস হয়নি ইজরায়েলকে আক্রমণ করার। ওই হারের পর মিশরের দিক থেকে সিনাই এবং গাজা, জর্ডানের দিক থেকে ওয়েস্ট ব্যাংক এবং সিরিয়ার গোলান উপত্যাকা ছিনিয়ে নেয় ইজরায়েল। একসময় যে জায়গায় প্যালেস্তাইন ছিল ১০০ শতাংশ, আজ কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। পৃথিবীর একমাত্র দেশ হিসেবে ইজরায়েল জানিয়েছে তাঁদের দেশের সীমা এখনও চূড়ান্ত নয়।