TRENDING:

Bangladesh Unrest: ‘আমরা কারা? রাজাকার!,’ মুক্তিযুদ্ধের এই শব্দ কী ভাবে আগুন ছড়াল বাংলাদেশে? এর অর্থই বা কী?

Last Updated:

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ ‘রাজাকার আইন’ও চালু করেছিলেন যেখানে রাজাকারদের মাসিক বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একটা সময়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশে এই ‘রাজাকার’দের সংখ্যা পৌঁছেছিল প্রায় ৫০ হাজার৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
বাংলাদেশ: ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার! রাজাকার’! বাংলাদেশের কোটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ছাত্র-পড়ুয়াদের এখন অন্যতম স্লোগান এইটাই৷ ইন্টারনেটে কাঁপা হাতে মাইক তুলে নেওয়া এক তরুণীকে দৃপ্ত কণ্ঠে প্রশ্ন তুলতে দেখা যাচ্ছে, ‘আজকের রাজাকার কে?’ কীভাবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের এই একটা শব্দ ‘স্ফুলিঙ্গে’র আকার নিল বাংলাদেশে? এই শব্দের অর্থ কী? উৎস কী? কেন এই শব্দের উচ্চারণে এমন অগ্নিশর্মা হয়ে উঠল বাংলাদেশের ছাত্রমহল…জানেন কি?
advertisement

বাংলাদেশের কোটা বিরোধী আন্দোলনে ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে ১৩৩ জনের৷ শনিবার কমপক্ষে ৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে৷ এর মধ্যে একজন পুলিশকর্মী বলে জানা গিয়েছে৷ শুক্রবার থেকেই বাংলাদেশ জুড়ে জারি করা হয়েছে কার্ফু৷ ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ সেনাকে দেওয়া হয়েছে ‘শ্যুট অ্যাট সাইট অর্ডার’ও৷ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে যে কোনও রকমের জমায়েত অথবা বিক্ষোভ মিছিলে৷ বৃহস্পতিবার থেকেই বন্ধ নেট পরিষেবা৷

advertisement

বাংলাদেশের কোটা ব্যবস্থা নিয়ে ছাত্র আন্দোলন সবে তখন ধিকি ধিকি জ্বলতে শুরু করেছে৷ গত রবিবার ১৪ জুলাই সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোটা ব্যবস্থা এবং ছাত্রবিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা (কোটা) সুবিধা না পায়, তাহলে কে পাবে? রাজাকারদের নাতি?’’

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জারি ‘শ্যুট অ্যাট সাইট’ অর্ডার! দেশজুড়ে কারফিউ, কোটা নিয়ে আজই নিদান সুপ্রিম কোর্টের

advertisement

হাসিনার এই মন্তব্যের পরেই ছাত্রযুবদের বিক্ষোভ ব্যাপক আকার নিতে শুরু করে৷ ওই দিন রাতেই হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে স্লোগান দিতে থাকেন, “কে তুমি? তুমি কে? রাজাকার, রাজাকার’’। এটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিখ্যাত স্লোগানের একটি রূপান্তর হয়ে ওঠে, ‘আমরা কারা? বাঙালি’৷ তারপরের দিনই শুরু হয়ে যায় পুলিশ ও আন্দোলকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা৷ তারপর একের পর এক মৃত্যু৷

advertisement

এবার আসা যাক ‘রাজাকার’ শব্দটির প্রসঙ্গে৷ বাংলাদেশে ‘রাজাকার’ শব্দটি অত্যন্ত অপমানজনক৷ প্রায় গালিগালাজের সমান৷ কিন্তু, এই শব্দের অর্থ কী? ‘রাজাকার’ উৎপত্তিগত ভাবে একটি আরবি শব্দ৷ সাধারণ অর্থ ‘স্বেচ্ছাসেবী’৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি, আখরা চিনিয়ে দিতে পাকিস্তানের সেনাকে সাহায্য করেছিল একদল পাকিস্তানপন্থী পূর্ববঙ্গীয় বাসিন্দা৷ পরবর্তী কালে এমন পাকিস্তানপন্থী মানুষদের দলও গঠন করেছিল পাকিস্তানি সেনা৷ তাদের বলা হত ‘রাজাকার’ বাহিনী৷ স্বাধীনতার যোদ্ধাদের কাছে এই ‘রাজাকার’ বাহিনী ছিল বিশ্বাসঘাতকদের দল৷

advertisement

বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, খুলনা জেলার আনসারি আলি রোডে সর্বপ্রথম ১০০ জন পাকিস্তানপন্থীদের নিয়ে ‘রাজাকার’ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেছিল পাকিস্তান বাহিনী৷ জামায়াতে ইসলামির নেতা একে এম ইউসুখ রাজাকারদের প্রতিষ্ঠার প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন৷

আরও পড়ুন: আগুন দর টম্যাটোর! রেহাই নেই আলু-পেঁয়াজেও…আরও খারাপ দিন আসছে কি?

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ ‘রাজাকার আইন’ও চালু করেছিলেন, যেখানে রাজাকারদের মাসিক বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একটা সময়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশে এই ‘রাজাকার’দের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ৫০ হাজারে৷ এই ‘রাজাকার’ বাহিনী স্বাধীনতাপন্থী আন্দোলনকারীদের উপরে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিল সেই সময়৷ এটি পাকিস্তানি সেনার অন্যতম সমান্তরাল বাহিনী হিসাবে কাজ করত৷

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মুন্তাসির মামুন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ‘রাজাকার’ শব্দটি হায়দরাবাদে ব্যবহৃত ‘রেজাকার’ শব্দ থেকে এসেছে৷ হায়দরাবাদের নিজামের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী পরিচিত ছিল ‘রেজাকার’ নামে৷ ভারতে অন্তর্ভুক্তির আগে ভারতকে প্রতিরোধ করতে এই বাহিনীর সাহায্য নিয়েছিলেন নিজাম৷ কিন্তু, ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন পোলো’য় পরাজিত হন৷ মামুন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রেজাকাররা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী ছিল এবং পাকিস্তানের সেনার হয়ে কাজ করত৷

২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করতে রাজাকার শব্দটি ব্যবহার করা হতো।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রায় ৫৬ শতাংশই ছিল কোটা৷ তার মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত৷ ৫ শতাংশ মহিলা এবং বাকি জনজাতি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী৷ ২০১৮ সালে এই কোটার বিরোধিতায় তীব্র আন্দোলন শুরু হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও নারীদের কোটা বাদ দেয় হাসিনা সরকার৷ ২০২১ সালে এই কোটা বাতিলের পদ্ধতিগত ত্রুটির প্রসঙ্গ তুলে সে দেশের হাইকোর্টে যান দুই মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরি৷ সেই মামলায় ২০২৪ এ তাঁদের পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট৷ ফলে পুরনো কোটা ব্যবস্থাই বহাল হয়ে যায়৷ এরপরেই এ নিয়ে শুরু হয়ে যায় ফের বিক্ষোভ৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
শেষ সুবর্ণ সুযোগ! হাতছাড়া হলে কেঁদে কুল পাবেন না...
আরও দেখুন

আজ, রবিবার সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট এই কোটা বিষয়ক রায় দেওয়ার কথা৷ অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুদ্দিন মানিকের দাবি, কোটা সংস্কার নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিলের আবেদনই করবে সরকার। আপাতত বাংলাদেশ-সহ গোটা দুনিয়ার চোখ সে দিকে।

বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
Bangladesh Unrest: ‘আমরা কারা? রাজাকার!,’ মুক্তিযুদ্ধের এই শব্দ কী ভাবে আগুন ছড়াল বাংলাদেশে? এর অর্থই বা কী?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল