ঢাকা: শনিবার ভয়াবহ আগুনে বিপর্যস্ত অবস্থা হয়েছিল ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেই অগ্নিকাণ্ডে এবার সামনে এল নতুন তথ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে আনা ১৮ টন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ঘটনায়।
advertisement
শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ বাংলাদেশের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পণ্য রাখার জায়গায় ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে। আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে কার্গো এরিয়ার ভিতর থেকে কর্মীরা কোনও মতে বেরিয়ে আসেন। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় পুরো কার্গো এরিয়াই দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ৩৭টি ইঞ্জিন নিয়ে আসা হয়। সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনা আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। অগ্নিকাণ্ডের জেরে ঢাকা বিমানবন্দরে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে রাখা হয়। তবে সাতঘণ্টা পর বিমানবন্দর খুলে দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের নজির নেই।
বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দুই ইউনিটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ইউনিটটিতে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা চালু করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বাংলাদেশের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন বিভাগের। এরমধ্যেই শনিবারের অগ্নিকাণ্ডে ফের বড় ধাক্কা খেল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ। সূত্রের খবর, ৬ দিন আগে রাশিয়া থেকে সাতটি শিপমেন্টের মাধ্যমে প্রায় ১৮ টনের মতো বৈদ্যুতিক সামগ্রী এসেছিল বাংলাদেশে। এসব পণ্য খালাসের জন্য পরমাণু শক্তি কমিশন থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) নিতে হয়। সেই এনওসি নিতে দেরি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পণ্য খালাস করা যায়নি। রবিবার খালাস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারমধ্যেই সব সামগ্রী আগুনে পুড়ে গেছে।
বিমানবন্দরে আমদানি হওয়া পণ্য খালাসের দায়িত্বে থাকা সংস্থার আধিকারিক বিপ্লব হোসেন জানিয়েছেন, ছ’দিন আগে রাশিয়া থেকে প্রায় ১৮ টন বৈদ্যুতিক সামগ্রী এসে পৌঁছেছিল ঢাকায়। তবে সেই পণ্য খালাস করতে গেলে পরমাণু শক্তি কমিশনের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা এনওসি দরকার হয়। সেই প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পণ্যগুলি খালাস করা যায়নি। রবিবার সেগুলি খালাসের কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই আগুনে সব পুড়ে গিয়েছে।