২৬ ডিসেম্বর রাতে ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৮৫তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে রকস্টার নগর বাউল জেমস স্বল্পসময়ের মধ্যে মঞ্চে উঠবেন বলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিক অনুষ্ঠানের শুরু হওয়ার আগে “বহিরাগত” বলে অভিহিত একদল জনতা জোর করে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে চেষ্টা করে এবং মঞ্চের দিকে ইট-পাথর ছুড়ে তাণ্ডব শুরু করে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, দর্শক ও আয়োজকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও নিরাপত্তার তৎপরতায় জেমস নিরাপদে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, আক্রমণে অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন বলে খবর আসে; আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল পড়ুয়া ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে কনসার্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
advertisement
স্ত্রীর নামে পোস্টঅফিসে ১ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোসিট করলে ২ বছরে কত টাকা মিলবে?
মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আয়োজক ও দর্শকদের মধ্যে। সম্ভাব্য বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াতে শেষ পর্যন্ত আয়োজকেরা কনসার্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন। ‘রক গুরুর’ তকমায় পরিচিত জেমস নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন; তিনি শারীরিকভাবে অক্ষত রয়েছেন। এই ঘটনার পর বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তৃত উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান চরমপন্থী প্রভাবের মধ্যে শিল্পীরা আদৌ কতটা নিরাপদে পারফর্ম করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি ওরফে শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। অভিযোগ, ১২ ডিসেম্বর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের কয়েকজন সদস্য দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম-সহ একাধিক শহরে দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ ও গণহিংসার ঘটনা ঘটে। সংবাদমাধ্যমের দফতর যেমন প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার, পাশাপাশি ছায়ানট ও উদীচীর মতো সাংস্কৃতিক সংগঠনও হামলার লক্ষ্য হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বাড়িতেও আক্রমণের খবর সামনে এসেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ফরিদপুরে জেমসের কনসার্টে হামলার ঘটনা শুধু একটি অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার খবর নয়, বরং বাংলাদেশে সংস্কৃতি ও মতপ্রকাশের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর আশঙ্কার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
