বৃহস্পতিবার সকালে ইদের পবিত্র নামাজের সময় কিশোরগঞ্জের ইদগাহে ঘটে বোমা বিস্ফোরণ ৷ গুলশন হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বোমা বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাদেশে ৷
তবে এদিনের ঘটনায় জঙ্গি হানার বদলে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তথ্যই উঠে আসছে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যে ৷ পবিত্র ইদের দিন রাজধানী ঢাকার থেকে কিছুটা দূরে কিশোরগঞ্জে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে চক্রান্ত করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে ৷ শাসক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে পবিত্র ইদের দিনে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে নষ্ট করার উদ্দেশেই এই হামলা বলে মত হাসানুল হক ইনুর ৷ তিনি আরও বলেন, এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশ ৷ পুলিশবাহিনীকে লক্ষ করেই এই হামলা চালিয়েছে হামলাকারীরা ৷
advertisement
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত ৷ বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে চক্রান্ত ৷ জঙ্গি হামলা ইসলাম-বিরোধী ৷ আজকের ঘটনাও জঙ্গি হামলা, যা ইসলাম-বিরোধী ৷ পুলিশবাহিনীকে লক্ষ করে এই হামলা চালানো হয়েছে ৷’
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী এই হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ৷ পুলিশবাহিনীই ছিল আক্রমণের টার্গেট ৷ ইদের নমাজ পড়তে এদিন সকালে ইদগাহে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল ৷ ইদের দিন নমাজের জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জমায়েতের স্থান এই কিশোরগঞ্জই ৷ এই হামলাই বিস্ফোরণের প্রকৃতি দেখেই জঙ্গি হামলার তথ্য মানছে না বাংলাদেশ সরকার ৷
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, হামলায় ঝর্ণারাণি ভৌমিক বলে একজন সাধারণ মহিলা ও দুইজন পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন ৷ এছাড়া আরও এক সন্দেহভাজনেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে ৷
ঘটনায় দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ ৷ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ধারালো অস্ত্র, বোমা সদৃশ বিস্ফোরক ও গুলি ভর্তি রিভলভার ৷ এলাকাজুড়ে বাকি হামলাকারীদের খোঁজে চলছে তল্লাশি ৷ শহরের প্রধান রাস্তা, বাজার, স্টেশনে চালানো হচ্ছে তল্লাশি ৷ একটি স্কুল বাড়ি ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী ৷ সেখানেই হামলাকারীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷
বাংলাদেশে বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত ছিল আট জন ৷ ধৃত সন্দেহভাজনকে জেরা করে এই তথ্য জানতে পেরেছেন বাংলাদেশ পুলিশ ৷ সূত্রের খবর, ধৃত সন্দেহভাজন বাংলাদেশের দিনাজপুরের বাসিন্দা ৷
একের পর এক ব্লগার খুন। হত্যা করা হচ্ছে সমকামী আন্দোলনের সমর্থক, পুরোহিত, অধ্যাপকদের। বার বার নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে সরকারের ধর্মনিরপেক্ষ ইমেজ। এর পিছনে আইএস নয়, দায়ী স্থানীয় কোনও সংগঠন। এমনটাই মত বাংলাদেশের পুলিশ, প্রশাসনের।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি হামলা ইসলাম বিরোধী ৷ জঙ্গিরা ইসলামের শত্রু ৷ ইদে নমাজ না পড়ে যারা খুন করে তারা মুসলিম নয় ৷’
রাজাকারের ফাঁসির নির্দেশ। জামাতের মতো দলের শরিয়তি শাসনের দাবি। অন্য একটি গোষ্ঠীর খলিফা রাষ্ট্রের তকমার দাবি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিএনপি জমানায় জামাতের মতো সংগঠনকে মদত দেওয়াতেই এই অবস্থা। বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডও জারি করেছেন এক জামাত নেতা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের ধর্মনিরপেক্ষ পদক্ষেপে আঘাত হানতেই এই আক্রমণ বলে দাবি সরকারের।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শোলাকিয়ার মাঠের জমায়েতের এক কিলোমিটারের মধ্যে আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশের গেটে এই হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে ৷ এদিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এই বিস্ফোরণ ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর ৷
পুলিশের অনুমান, ককটেল জাতীয় কিছু বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে ৷ তবে এখনও সেব্যাপারে নিশ্চিত নন তাঁরা ৷ বিস্ফোরণের পর ধাক্কাধাক্কিতেও অনেকে আহত হন ৷ প্রধান মৌলবী আসার সুযোগেই এদিন হামলা চালায় জঙ্গিরা ৷ হেলিকপ্টারে করে প্রধান মৌলবী নমাজস্থলে যাচ্ছিলেন ৷ অধিকাংশেরই নজর ওই সময় ছিল কপ্টারের দিকেই ৷ তাই পুলিশের অসতর্কতার সুযোগ নিয়েই বিস্ফোরণ ঘটানো হয় ৷ বোমার স্প্লিন্টার ছিটকে জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন ৷