বাংলাদেশকে তিস্তার জল দিতে যে আপত্তি নেই, তা বহুবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কোনও ধরনের চুক্তি করতে, কোনওদিনই রাজি ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। মূলত তাঁর আপত্তিতেই আটকে রয়েছে বহু আলোচিত তিস্তা-চুক্তি। এবার সেই জট ছাড়াতে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিকল্প প্রস্তাব দিলেন খোদ মমতাই। শনিবার প্রথমে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসের মধ্যাহ্নভোজে এবং সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় এই বিকল্প প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। কী সেই প্রস্তাব?
advertisement
তিস্তার বদলে তোর্সা
- পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে একাধিক ছোট নদী বয়ে গিয়েছে
- তিস্তার বদলে অন্য নদী থেকে জল দেওয়া যেতে পারে বাংলাদেশকে
- তিস্তার বদলে তোর্সা থেকে জল দেওয়ার প্রস্তাব মমতার
- একইসঙ্গে মানসাই ও ধরলার মতো নদীর জল ভাগাভাগির প্রস্তাব
- জল ভাগাভাগি নিয়ে সমীক্ষা করতে কমিটি গড়ার প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘তিস্তায় জল নেই। উত্তরবঙ্গের লাইফ-লাইন এই নদী। জল দিতে সমস্যা। তবে আমি চাই বাংলাদেশও জল পাক ৷
তিস্তার পানি নিয়ে ঢাকার দাবি দীর্ঘদিনের।
- বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলার কৃষি ও মাছ চাষ তিস্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত
- দেশের চাষযোগ্য জমির প্রায় ১৫ শতাংশ রয়েছে এই ৫ জেলায়
- তিস্তার জলের প্রবাহ কমে যাওয়ায় জীবিকায় টান পড়েছে উত্তরাঞ্চলের বহু মানুষের
- তাই তিস্তা থেকে বাড়তি জল চায় বাংলাদেশ
- ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত তিস্তার জলের প্রায় ৫০ ভাগ দাবি ঢাকার
কিন্তু রুখাসুখা তিস্তার জল ছাড়তে অপারগ রাজ্য। এই জট ছাড়াতেই বিকল্প প্রস্তাব মমতার। যা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টারস্ট্রোক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আগামী বছর বাংলাদেশে নির্বাচন। সেখানে তিস্তার পানি বড় ইস্যু শেখ হাসিনার কাছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর এই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে ওয়াকিবহল মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের মাঝে তিনি বাঁধা হয়েও দাঁড়াতে চান না। কিন্তু রাজ্যের স্বার্থ দেখাই তাঁর অগ্রাধিকার। তাই সবদিক সামলে ভারসাম্য বজায় রাখতেই, বিকল্প প্রস্তাবের মাস্টারস্ট্রোক খেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।