আফগানিস্তান, ইরাক বা সিরিয়ার মতো গৃহযুদ্ধ নেই। অথচ, কলমের খোঁচায় আচমকাই নাগরিকত্ব হারানোর মুখে ৪০ লক্ষ মানুষ। অসমের খসড়া নাগরিকপঞ্জি-তে চল্লিশ লাখ মানুষের নামের পাশে লালকালির দাগ। কার্যত রাতারাতি ভারতীয় নাগরিকত্ব হারানোর পথে তাঁরা। নাগরিক পঞ্জিতে নাম তোলার জন্য আবেদন করেন ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষ ৷ তালিকায় প্রকাশিত হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম ৷ কার্যত রাতারাতি উদ্বাস্তু ৪০ লক্ষ মানুষ ৷ বাকিরা যাবেন কোথায়? ঘিরে ধরছে অনিশ্চয়তা আর দেশছাড়া হওয়ার আশঙ্কা।
advertisement
আরও পড়ুন
অসম NRC: ‘শুধু কি বিজেপি সমর্থকদেরই এদেশে থাকার অধিকার আছে?’ মোদি সরকারকে তোপ মমতার
এই অসম নাগরিকপঞ্জির ইস্যুতে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি ৷ কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পিছিয়ে নেই কংগ্রেস, বাম সহ বাকি বিরোধীরাও ৷ NRC নিয়ে ক্রমাগত চড়ছে রাজনীতির পারদ ৷ শাসক ও বিরোধীর মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যে উত্তাল সংসদ ৷
আরও পড়ুন
সরকার পরিবর্তনের হাওয়ায় এবার বন্ধ হতে চলেছে সরকারি কর্মচারীদের স্থায়ী পিএফ, পেনশন
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, অসমে নাগরিকপঞ্জির দ্বিতীয় খসড়ায় যে চল্লিশ লক্ষ মানুষের নাম নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি রোহিংটন নরিম্যানের ডিভিশন বেঞ্চ আজ নির্দেশ দিয়েছে, চল্লিশ লক্ষ মানুষ তালিকায় নাম তুলতে যেন ঠিক মতো সুযোগ পায়। এনআরসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তা নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। যাঁদের নাম তালিকায় ওঠেনি, তাঁরা ৮ অগাস্ট থেকে নিজেদের দাবিদাওয়া ও অভিযোগ জানাতে পারবেন। যা খতিয়ে দেখা হবে ৩০ অগাস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তালিকা থেকে বাদ পড়াদের দাবি ও অভিযোগ কোন পদ্ধতিতে খতিয়ে দেখা হবে তাও কেন্দ্রকে জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আজকের শুনানিতে এনআরসি কর্তৃপক্ষের তরফ জানানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করা হবে, এই তথ্য ঠিক নয়। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিনক্ষণ ঠিক করবে শীর্ষ আদালতই।
তাতেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না রাতারাতি নিজভূমে পরবাসী হয়ে যাওয়া বিপুল সংখ্যক মানুষ ৷ রাজনীতি ও আইনি মারপ্যাঁচের মাঝে দেশছাড়া হওয়ার ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন অসমের ৪০ লক্ষ পরিচয় হারানো মানুষ ৷