সাগরলাল দত্ত ১৮৬২ সালে এই পুজো শুরু করেন। সাগরলাল দত্ত ছিলেন একজন বড় ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে তিনি কলকাতায় থাকতেন অনেক সময়। সেখানেও তাঁর বাড়ি ছিল। তার স্ত্রী জহরমনি দাসী চুঁচুড়ায় থাকতেন। শোনা যায় একবার দত্ত বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন। জহরমনি দেবী তাকে খুব সেবা-যত্ন করেন। চলে যাওয়ার সময় সন্ন্যাসী সাগরলালের স্ত্রীকে একটি অষ্টধাতুর অভয়া মূর্তি দিয়ে যান। সেই মূর্তি দিয়ে চুঁচুড়া দত্ত বাড়িতে নিত্য পুজো শুরু হয়।
advertisement
আরও পড়ুনঃ মহালয়ার সাত দিন আগেই মা দুর্গার বোধন হয় আমাদপুরের চৌধুরি বাড়িতে
অষ্টধাতুর অভয়া মূর্তি পুজো করতে করতেই সাগর লালের স্ত্রী একদিন স্বপ্নাদেশ পান। অভয়া রূপে দেবীর আরাধনা করার। দেবীর সেই রূপ ও স্বপ্নাদেশেই দেখতে পান জহরমনি দেবী। তারপরেই দত্ত বাড়িতে অভয়া রূপে মা দুর্গার পুজো শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ ৭২ বছরের দুর্গাপুজো, দক্ষিণ কলকাতার ৬৬ পল্লি সাজছে 'এক অন্ন বর্তী' থিমে
কথিত আছে, পুজো করার পরেই সাগর দত্তের পাটের ব্যবসা শ্রী বৃদ্ধি ঘটে। প্রচুর সম্পত্তির মালিক হন তিনি। মায়ের কৃপায় তিনি এতটাই অর্থবান হয়ে ওঠেন যে তার কাছ থেকে বৃটিশ সরকারও ঋণ নিত। সাগর দত্ত নামে কামারহাটিতে হাসপাতাল রয়েছে। সাগর দত্তের নামে ট্রাস্টি থেকে এখন দত্ত বাড়ির পুজো এবং বাড়ির রক্ষনাবেক্ষণ হয়।
দত্ত বাড়িতে কাঠামো পুজো হয় রথের দিন। মহালয়ার আগের দিন হয় চক্ষুদান। আর মহালয়া দিন থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। আগে দত্ত বাড়ির দালানে প্রতিমা তৈরি করা হত। এখন কয়েক বছর ধরে ঠাকুর তৈরি হয় পটুয়া পাড়ায়। দেবী দুর্গার এখানে দু-হাতে কোনও অস্ত্র থাকে না। পরিবারের মঙ্গল কামনায় তিনি শুধু এক হাত তুলে আশীর্বাদ করেন আর এক হাতে দান করেন। দেবীর বাহন এখানে দুটি সিংহ। দেবীর পদতলে মহিষাসুর থাকেনা। বৈষ্ণব মতে, পুজো হয় তাই দত্ত বাড়ির পুজোয় কোন বলি হয় না। অষ্টমীর দিন ধুনো পোড়ানো দেখতে এখনও ভিড় জমে ঠাকুর দালানে। দশমীর দিন বিসর্জনের সময় কাঁধে করে এক চালার প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় চুৃঁচুড়া দত্ত ঘাটে।
রাহী হালদার