কিন্তু মল্লিকবাড়ি কেন? তা হলে গোড়া থেকেই বলা যাক! এই বাড়িটি আদতে ছিল মধুসূদন সান্যালের। ইনিই সেই মধুসূদন সান্যাল যিনি এই বাড়ির উঠোন মাসিক ৪০ টাকায় ভাড়া দিয়েছিলেন 'কলিকাতা ন্যাসনেল থিয়েট্রিক্যাল সোসাইটি'-কে। আর এই উঠোনেই টিকিট বিক্রি করে পত্তন হয়েছিল কলকাতার প্রথম কমার্শিয়াল থিয়েটারের ।
আরও পড়ুন-বিদ্যুতের বিল কমানোর ২০-টি অব্যর্থ টিপস! ফল হাতেনাতে
advertisement
গিরিশচন্দ্র ঘোষ, নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফি, রাধামাধব কর ও নন্দলাল ঘোষ মিলে তৈরি করেন 'কলিকাতা ন্যাসনেল থিয়েট্রিক্যাল সোসাইটি'। ১৮৭২-এর ৭ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হয় 'নীলদর্পণ'। এক টাকা ও আট আনা দামের টিকিটে প্রথম অভিনয়ের রাতেই তাঁরা পেয়েছিলেন ২০০ টাকা।
পরবর্তীকালে, মধুসূদন সান্যালের থেকে বাড়িটি কিনে নেন আশুতোষ মল্লিক। তাঁরই ছিল এই ঘড়ির শখ। কিন্তু, আশুতোষ মল্লিক বাড়ি কিনে নেওয়ার পরও, স্থানীয়রা এ'বাড়িকে মধুসূদন সান্যালের বাড়ি বলেই চিনত, ডাকত। আর তাতে বোধহয় নতুন মালিকরা খুশি হননি। তাই, একদিন বাড়ির ছাদে, রাস্তার ধার ঘেঁষে বসিয়ে দিলেন বড় গোল ঘড়িটি । আর সেই থেকে বাড়ির নতুন নাম-- 'ঘড়িওয়ালা বাড়ি'। অদ্ভুত বিষয়, এখনও পর্যন্ত খারাপ হয়ে যায়নি ঘড়িটা! দেখিয়ে যাচ্ছে নির্ভুল সময়!
আরও পড়ুন- গরমকালে বাচ্চাদের হিট র্যাশ কেন হয়? রইল সমাধানের উপায়
এ'বাড়িতে এখন থাকেন আশুতোষের চার ভাইয়ের বংশধরেরা। একটি অংশে থাকেন গোড়াচাঁদ মল্লিক। আশুতোষের এক ভাই মতিলালের নাতি। গোড়াচাঁদের অ্যান্টিক-সংগ্রহ দেখার মতো! তাঁর কাছে আছে সম্রাট আকবরের একটি দুষ্প্রাপ্য মিনিয়েচার ছবি, ড্যানিয়েলের এনগ্রেভিং।
আজ আর ঘড়ি অলা বাড়ির সেই জৌলুশ নেই! ঠাকুরদালানের সামনে যে উঠোনে প্রথম 'নীলদর্পণ'-এর অভিনয় হয়েছিল, সেই উঠোনটি এখনও আছে। তবে, গড়িমা হারিয়েছে। কালের সঙ্গে সঙ্গে বাহ্যিক জীর্ণতা আসতে পারে! কিন্তু, যে বাড়িতে 'নীলদর্পন'-এর প্রথম পেশাদারি অভিনয় হয়েছিল, তার মননের গর্ব কমাবে কে? তাই আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ২৭৯ রবীন্দ্র সরণির নস্টালজিক ঘড়িওয়ালা বাড়ি।