TRENDING:

বদল ঘটুক ভাবনার, নারী দিবসে 'না' বলতে শিখুন

Last Updated:
impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: সকাল সকাল বউয়ের বানানো চায়ে চুমুক না দিলে দিনের আবার শুরু কী হে! ন'টার লোকাল ট্রেনে তাস খেলে আর রাজ্য-রাজনীতির গুষ্টির তুষ্টি করতে করতে মানিকতলায় অফিস আসতে হয় ভাই! ধকল তো আর কম নয়! সকাল সকাল বউয়ের হাতের চা না হলে ঠিক মন ভরে না। তবে হ্যাঁ বিয়ের আগেই একেবারে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি করা গিন্নি জুটিয়েছেন সরকারি কেরানিবাবু। হু হু বললে হবে, দেখতেও তো হবে ভাই! বউটি আমার বড্ড ভাল। নিজের অফিসের টিফিন গোছাবার সময় পাক না পাক, কর্তা এবং শাশুড়ির দিকে তার সব সময় নজর। কর্তার টিফিন, শাশুড়ি মার দুপুরের খাবার সব রেডি করে তবেই গিন্নি অফিস ছোটে। হক কথা ভাই! কেরানি বাবু কিন্তু হেব্বি নারীবাদী। চাকরি করা বউকে তো আর ঘরের বউ করে রাখেনি। সে তো দিব্যি অফিস যায়। ঘোরে ফেরে। আবার রাত আটটায় বাড়ি ফিরে নিজে হাতে রুটি করে। যাকে বলে পুরো নারী স্বাধীনতা। বউমা চাকরি করে সংসারে টাকাও দেয়, আবার সংসারও সামলায়। একেই তো বলে নারী স্বাধীনতা।
advertisement

সত্যি বলছি সমাজ আমার ধন্য সমাজ! ৮ মার্চ মানে আজ তো আবার নারী দিবস। মানে, মেয়েদের জন্য ঘটা করে উৎসব হবে। না-না, পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেল ফেলে, পাড়ার সেরা মেয়েকে ধরে এনে পুজো করা হবে, এমনটা ভেবে ভুল করবেন না যেন! আজ আর কী নারী দিবস। মেয়েদের সম্মানার্থে অর্পিত একটি দিন। ওই যেমন 'ভ্যালেনটাইনস ডে' হয় না তেমনই। ওই দিন প্রেমিকাকে জড়িয়ে ফেসবুকে ছবি না দিলে যেন জন্মটাই বৃথা। 'তোর কেউ নেই? কি বলিস রে!' শুনতে শুনতে কান ব্যথা হয়ে যাবে। সে আপনার বয়েস যাই হোক না কেন! ওই আবার যেমন 'চিলড্রেনস ডে' মানেই হল গিয়ে ওই দিন সব শিশু শ্রমিকদের একটু ছুটি দিয়ে দাও। রাস্তায় দুটো বাচ্চাকে ধরে চকলেট খাইয়ে দাও। যে ভাত খেতে পায় না রোজ তার হাতে একদিন বড় একটা চকলেট ধরিয়ে কী লাভ! যাক কে যাক সে সব কথা জলে যাক! আর আমাদের দেশে আবার শিশু শ্রমিক আছে নাকি! সব বাজে কথা! খুঁজে দেখাও দেখি একটা। বুঝবো বুকের পাটা। সব চায়ের দোকানে কাজ করা বাচ্চা গুলোকে এই দিন ভাল জামা কাপড় পড়িয়ে মালিকের ছেলে বানিয়ে দিলেই হল। এই নারী দিবস খানিকটা এই রকমই। এই দিন একটু বেশি আদরটাদর করে দিলেই হল। আর একটা গিফ্ট দিলেই হল। সব ঠান্ডা।

advertisement

তবে নারী দিবসে নারী দিবসে বউমা রুটি বেলবেন না। বর মহাশয় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে রুটি বেলবেন এমনটা ভাবলে কিন্তু মহাভুল করবেন! ও রান্নাবাটি আবার ছেলেদের কাজ নাকি! ও তো মেয়েরাই করে। গোটা একটা দিন দিচ্ছি তাতেই খুশি থাক না বাপু! পুরুষ মানুষের কী অত ধকল সয়! অফিস ফেরত রান্নাবাটি! ওসব বাবা মেয়েরাই পারে! নিউ ইয়র্কে ১৯০৮ সালে প্ল্যাকার্ড হাতে ছেলেদের সমান কাজ ও সমান মাইনের দাবিতে রাস্তায় হাঁটার সময় মনে ছিল না। দেওয়া তো হয়েছে সমান অধিকার। ঘরে ও বাইরে সমান কাজ করার অধিকার। আবার জার্মান নেত্রী ক্লারা জেটকিন মেয়েদের উদ্দেশে গোটা একটা দিন চেয়ে বসলেন! তা দেওয়া কী হয়নি! দেওয়া তো হল। ৮ মার্চটা তো সেই জন্যই মেয়েদের দেওয়া হল। আর নারী স্বাধীনতার কথা তো ছেড়েই দাও আছে বলেই তো রাত ৯টা তে একটা মেয়ে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফেরে। নয়তো শেয়াল কুকুরে ছিড়ে খেত। হ্যাঁ একটা দুটো ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটে যায় আর কী! ওগুলো ধরতে নেই! তাই কাজের ভাগাভাগি করে লাভ কী মেয়েরাই তো চেয়েছে সমান সমান কাজ করতে। না হয় ঘর বার দুটোই তাদের দেওয়া হল। তার উপরে যদি বউ চাকরি করে তবে পুরুষ মহলে আমি কত উদার বলে প্রশংসাও পাওয়া যায়। নারী স্বাধীনতা নিয়ে কথাও বলা যায়। কিন্তু যদি সেই মেয়ে স্লিভলেস জামা পড়ে রাস্তায় বেরোয় তাহলে আর রক্ষা নেই! তোমাদের এত স্বাধীনতা দিচ্ছি তাই বলে যা ইচ্ছে পোষাক পড়ে রাস্তায় বেরোবে! তারপর যদি কিছু ঘটে তো পুরুষদের দোষ দিও না কিন্তু। মানে হল গিয়ে ওপর ওপর সবই তো হচ্ছে রানি রাসমনির জন্য। কিন্তু আসলে করছেটা কে? রাজা রাজচন্দ্র! ব্যাপারটা অনেকটা এই রকম! তিনি না থাকলে কে রক্ষে করবে ঠাকুর। এই তিনিরাই এখনো ঠিক করে চলেছেন সব কিছু!

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
১৭ রাজ্য পাড়ি দিয়ে শান্তির বার্তা — স্কুটিতে একা অভিযানে বর্ধমানের শিক্ষিকা
আরও দেখুন

বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো বউমা অফিস যাবে? তাও আবার হয় নাকি। সব বন্ধ। ইচ্ছে না করলেও সিঁদুর পরতেই হবে। জিন্স পড়ে বাইরে যাওয়া কেন! আপনিও ওমনি মিন মিন করে সব কিছু মেনে নেন। ভাবেন না না আমাকে কত স্বাধীনতাই না দিয়ে রেখেছেন তারা। বলি সময় এসেছে এবার 'না' বলতে শিখুন। আর কতদিন মেনে নেবেন! নারী দিবসে অফিসে গিয়ে মেয়ে বলে শুভ নারী দিবস কথাটা শুনলে চেঁচিয়ে বলুন 'আপনার দিনটা কবে!

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
বদল ঘটুক ভাবনার, নারী দিবসে 'না' বলতে শিখুন
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল