TRENDING:

Zakir Hussain Obituary: প্রহরশেষে ভুবনজুড়ে হৃদমাঝারে অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে ছড়িয়ে থাকে তালবৈশাখীর বাদ্য

Last Updated:

Zakir Hussain Obituary:মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয় জাকিরের প্রথম অ্যালবাম ‘লিভিং ইন দ্য মেটেরিযাল ওয়ার্ল্ড’। শিল্পীর আমৃত্যু দশকগুলি এর পর সাক্ষী থেকেছে একের পর এক মাইলফলকের। অগণিত আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান, অ্যালবাম, চলচ্চিত্র অনুরণিত হয়েছে জাকিরের হাতের জাদুতে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
হৃদকমলে তালবৈশাখীর ঝড় তোলার ব্যাটন যে বাবার হাত থেকে তিনি গ্রহণ করবেন, সে কথা বোধহয় ঠিক হয়ে গিয়েছিল জন্মলগ্নেই। নবজাতক জাকিরকে কোলে নিয়ে তাঁর কানে কানে তবলার বোলই বলেছিলেন কিংবদন্তি তবলাশিল্পী আল্লা রাখা কুরেশি। ১৯৫১ সালের ৯ মার্চ যখন জন্ম জাকিরের, তখন তাঁর বাবা উস্তাদ আল্লা রাখা কুরেশির বিশ্বজোড়া নাম। সুরের মাঝে এসেছে শোকও। হারিয়েছেন প্রথম সন্তান কন্যা বিলকিসকে। ভূস্বর্গে শিকড় ফেলে মুম্বইয়ে থাকা এই পরিবারে তার পর একে একে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন জাকির, তৌফিক এবং ফয়জল। তাঁদের দুই বোন রাজিয়া ও খুরশিদ। মাত্র ৩ বছর বয়স থেকেই তবলার সঙ্গে দিনযাপন জাকিরের। বাদ্যযন্ত্রের মাঝে একরত্তি সন্তানকে ছেড়ে দূর থেকে দেখতেন আল্লা রাখা। অমূল্য রত্ন চিনতে ভুল হয়নি জহুরি চোখের। শিল্পী বুঝেছিলেন যে কচি হাত আজ খেলার ছলে বোল তুলছে, সেই হাতই একদিন বিশ্বশাসন করবে।
প্রয়াত উস্তাদ জাকির হুসেন
প্রয়াত উস্তাদ জাকির হুসেন
advertisement

মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয় জাকিরের প্রথম অ্যালবাম ‘লিভিং ইন দ্য মেটেরিযাল ওয়ার্ল্ড’। শিল্পীর আমৃত্যু দশকগুলি এর পর সাক্ষী থেকেছে একের পর এক মাইলফলকের। অগণিত আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান, অ্যালবাম, চলচ্চিত্র অনুরণিত হয়েছে জাকিরের হাতের জাদুতে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিস্তীর্ণ আকাশ থেকে জাকির সহজাত প্রতিভায় বিতরণ করেছেন মূর্ছনার বিভিন্ন প্রাঙ্গণে। তাঁর হাতের মায়ায় সঙ্গতবাদ্য থেকে প্রধান বাদ্যযন্ত্র হয়ে উঠেছে তবলা। ১৯৭৩ সালে ব্রিটিশ জ্যাজ গিটারবাদক জন ম্যাকলকলিন, বেহালাবাদক এল শঙ্কর, ঘটমবাদক টিএইচ বিনায়ক্কমের সঙ্গে জাকিরের তবলার বোল মিলেমিশে তৈরি হয় ফিউশন ব্যান্ড ‘শক্তি’র। ভারতীয় সঙ্গীতসাধনার ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখেছিল ‘শক্তি’। হিন্দুস্তানি ও কর্নাটকি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সঙ্গে মিশে যায় আমেরিকান কনটেম্পোরারি জ্যাজ। ১৯৭৬-এ প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ পায় ‘শক্তি’র। ২০২৩-এ চতুর্থ তথা শেষটি। ম্যাকলকলিন তাঁদের দলকে ‘লাইভ ব্যান্ড’ হিসাবেই উল্লেখ করেছিলেন। ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত দিয়ে পাশ্চাত্য দুনিয়া জয় করার ধারা জাকির বজায় রেখেছিলেন দশকের পর দশক। পরবর্তীতে ‘শক্তি’-তে যোগ হয় শঙ্কর মহাদেবনের কণ্ঠ। বিশ্বজুড়ে বহু পুরস্কারের ভূষণে ভূষিত জাকির হুসেন ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী পান। ২০০২-তে পদ্মভূষণ এবং ২০২৩-এ সম্মানিত হন পদ্মবিভূষণে। গ্র্যামি পুরস্কারের দ্যুতি একাধিক বার বসেছে নামের পাশে।

advertisement

আরও পড়ুন : হল না শেষরক্ষা, তাল থামল কিংবদন্তির, সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালেই প্রয়াত উস্তাদ জাকির হুসেন

গৌরবর্ণ নাতিদীর্ঘ চেহারায় ঘন কোঁকড়া চুলে দিব্যকান্তি সুপুরুষ জাকির হুসেন ধরা দিয়েছেন অভিনয়েও। যত দিন বিজ্ঞাপনী ক্যাচলাইন থাকবে, তত দিন থাকবে উস্তাদের হাতের বাদ্য এবং কণ্ঠের ‘তাজ-বন্দনা’। ১৯৮৩ সালে মার্চেন্ট-আইভরির ছবি ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’-এ তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৯৮-এ সাই পরাঞ্জপে পরিচালিত ‘সাজ’ ছবিতে রাহুল দেব বর্মনের ভূমিকায় দেখা যায় জ়াকিরকে। এই ছবির অন্যতম সুরকারও তিনি। ‘সাজ’ এবং অপর্ণা সেন পরিচালিত ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’ ছবির সুরকার হিসেবেও তাঁর কাজও দর্শক-শ্রোতাদের হৃদয়ে ভালবাসার আসন পেতেছে।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
দশমীতে রাবণ বধ! ১০১'তম বছরে 'মিনি ইন্ডিয়া'য় জ্বলল লঙ্কাধীস
আরও দেখুন

কত্থক শিল্পী তথা তাঁর ম্যানেজার আন্তোনিয়া মিনেকোলাকে বিয়ে করেন জাকির। তাঁদের দুই মেয়ে আনিশা ও ইসাবেলা কুরেসি। আনিশা চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত, ইসাবেলা পড়াশোনা করছেন নৃত্যকলা নিয়ে। জাকিরের দুই ভাই তৌফিক এবং ফজলও যুক্ত বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে। ছন্দোময় পরিবার, অগণিত মুগ্ধ শ্রোতাভক্তকে রেখে তবলা থেকে শেষ বারের মতো তাঁর হাত তুলে নিলেন উস্তাদ। তাল-সুর-ছন্দ যেটুকু ফুরলো, সে শুধু চোখের। বাকি মধুরের তো শেষ পাওয়া যায় না প্রহরশেষে ভুবনজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনের আনন্দ আবেশেও।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Zakir Hussain Obituary: প্রহরশেষে ভুবনজুড়ে হৃদমাঝারে অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে ছড়িয়ে থাকে তালবৈশাখীর বাদ্য
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল