বৃহস্পতিবার বিকেলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে হাজির ছিলেন সৌমিত্রবাবুর স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়, কন্যা পৌলমী বসু, পুত্র সৌগত চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন মন্ত্রী-নাট্যকার-অভিনেতা ব্রাত্য বসু, নাট্যকার-অভিনেতা কৌশিক সেন ও দেবশঙ্কর হালদার। চিত্র শিল্পী যোগেন চৌধুরী ও শুভাপ্রসন্ন। সেখানেই দীপাদেবী জানান, "নানা রকম পোস্টার ও ছবি দেখে আমি মুগ্ধ। আপনাদের আবেগ, স্মৃতি যে ভাবে ধরে রেখেছেন, যে ভালোবাসা দিয়েছেন তা মনে রাখার মতো৷ আপনারা সফল হবেন।"
advertisement
আবেগমথিত গলায় দীপাদেবী বলতে থাকেন, "যারা এসেছেন তাঁরা আমার পরিবার। আমি আগে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করিনি। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাছে বারবার শুনেছি৷ সৌমিত্রর জন্যে চিকিৎসা ও শেষ যাত্রায় উনি যা করেছেন তাতে আমি বিশেষ কৃতজ্ঞ। অনেক অন্ধকারের মধ্যে উনি আমাদের আলো দিয়েছেন৷ অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। ও যেন লড়াই করে যেতে পারে। এটাই ভগবানের কাছে প্রার্থনা। আমার ভালোবাসা ও পরিবারের ভালোবাসা ওর জন্যে থাকল।"
মুখ্যমন্ত্রী যদিও তার বক্তব্যে জানিয়েছেন, "কোনও কিছুর প্রয়োজন হলে দীপাবউদি আপনি আমাকে আদেশ করবেন। আমি করে দেব।" এদিনের আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, উত্তমকুমারের প্রয়াণের পরে তাঁর পরিবারকে সাহায্য করার কথা। সুপ্রিয়া দেবীর জন্যে বাড়ি খুঁজে দেওয়া হোক বা অন্য শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো, সবটাই তিনি সাধ্যমতো করেছেন।
এমনকী সৌমিত্র বাবুর নাতি যখন দূর্ঘটনায় পড়ে তখনও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি৷ তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "ওঁরা অনেকেই যোগাযোগ রেখেছেন। কতটা করতে পেরেছি আমি জানিনা। তবে আন্তরিকতা আমার ছিল। এটা কৃতিত্ব দেওয়ার ব্যাপার নয়৷ এটা করা আমার দায়িত্ব। এইটুকু কাজ যদি আমি না করতে পারি, তাহলে আমি কিসের মানুষ।"
প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন সৌমিত্র চ্যাটার্জির ট্রাস্টের জন্যে যে ধরণের সাহায্য লাগবে সেই ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। আগামী ১৫ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ অবধি চলবে এই প্রদর্শনী। এদিন সৌমিত্রবাবুর কন্যা পৌলমী বসু জানিয়েছেন, "বাবার জন্মদিন সুন্দর করে শুরু করতে পারলাম। ছয় বছর ধরে চেষ্টা করছিলাম বাবার কাজ নিয়ে আর্কাইভ করার। তাই আর্ট ফাউন্ডেশন করার ইচ্ছে ছিল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফাউন্ডেশন করা হল। কৌশিক সেন ও দেবশঙ্কর হালদার যাদের দু'জন কে আমার বাবা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। তারাও এগিয়ে এলেন। শিল্পকলায় প্রমিসিং কাউকে পেলে তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের ট্রাস্ট কাজ করবে।"
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন দীপাদেবীর। দীপাদেবীও তাকে কন্যাসম বলে অভিহিত করেন। সৌমিত্রবাবুর পরিবারের সদস্য হিসাবে তিনি একদিন তাঁর নাতিকে দেখতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।