ETimes-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋতুপর্ণকে নিয়ে স্মরণে অভিনেত্রী জানান, তার নিজের জীবনেও ঋতুপর্ণের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষত ঋতুপর্ণের ব্যতিক্রমী নারী চরিত্রের সিনেমাগুলি থেকেই আমাদের দুজনের আন্তরিক যোগাযোগের শুরু, “হয়তো ও আমাদের থেকেও আরো ঘনিষ্ঠভাবে মেয়েদের বুঝতে পারত। মেয়েদের চরিত্রের খুব সামান্য খুঁটিনাটি বিষয়, ইমোশনের হেরফের ঋতুপর্ণ অসম্ভব ভালো জানত। আমাকে ও যখন ‘রমিতা’ (‘দহন’ সিনেমায় ঋতুপর্ণার চরিত্রের নাম) চরিত্র বুঝিয়ে দিচ্ছিল তখনই ওর চোখে স্পষ্ট রমিতার এক্সপ্রেশন দেখতে পারছিলাম।”
advertisement
‘দহনে’র অভিনেত্রী ঋতুপর্ণকে বুঝতে চেষ্টা করছিলেন, তাঁর সিনেমা বিশ্লেষণ করছিলেন নিজের মতো করে। সিনেমায় ক্রমশ ছেয়ে যাওয়া গণ সংস্কৃতি, সংবেদনশীলতার উত্থান-পতন, আগ্রেসিভ মাসকুলিনিটি এইসব কিছু দিয়েই ঋতুপর্ণের ছবি বিশ্লেষণ করতে চেয়েছেন অভিনেত্রী।
“আমার মনে হয় ঋতুপর্ণের পক্ষেই খুব ন্যাচেরাল ব্যাপার ছিল রুদ্র চ্যাটার্জীর (‘চিত্রাঙ্গদা’ সিনেমায় ঋতুপর্ণের নাম)) মতো চরিত্র বানানো। ওর লিঙ্গ বৈষম্যের উর্দ্ধে থাকা চরিত্ররা আমাদের সবসময় প্রভাবিত করে। ঋতুপর্ণ বাংলা চলচ্চিত্রের প্রচলিত ভাষাটাই একেবারে বদলে দিয়েছে।”
তবে একথা অস্বীকার করা সম্ভবই নয় যে আধুনিক বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋতুপর্ণের ছবি সত্যি অন্যমাত্রা যোগ করেছে। সে ক্যেরিয়ারের শুরুতে ফেমিনিস্ট ফ্লিমমেকার থেকে শেষ অবধি গে ফ্লিমমেকারে পরিণত হওয়া পর্যন্ত ঋতুপর্ণ সবসময়ই ওনার সিনেমায় সেক্সুয়াল আইডেন্টিটি ও সমাজের নানান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অনবরত প্রশ্ন তুলে গিয়েছেন।
দেখতে দেখতে ৮ বছর হয়ে গিয়েছে পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যু হয়েছে। ৩০ মে ২০১৩-র রাতের বেলা ঘুমের মধ্যেই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন শুধু টলিপাড়া নয় ভেঙে পড়েছিল গোটা ভারতের চলচ্চিত্র জগৎ। ঋতুপর্ণকে নিয়ে কথা উঠলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত 'দহন' ও 'উৎসব' ছবির নায়িকা ছিলেন ঋতুপর্ণা।