বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিকে স্টার মার্কস নিয়ে সর্বদাই তালিকার শীর্ষে জি বাংলার ‘মিঠাই’ । আর সেই সুবাদে চড়চড় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে গিয়েছেন অভিনেত্রী সৌমিতৃষা । কেমন লাগে এই জনপ্রিয়তা? মিঠাই আর সৌমিতৃষা কতটা এক, কতটাই বা অমিল তাঁদের মধ্যে? মিঠাই-এর খোলসের বাইরের আসল মানুষটি কেমন? সব খুঁটিনাটি জানতে সৌমিতৃষা’কে মুঠোফোনে ধরতেই কলকলিয়ে উঠল এক ছটফটে, আদুরে তরুণীর গলা । এক কথায় রাজি সাক্ষাৎকারে । কে বলবে ইনিই এখন ছোট পর্দার প্রথমস্থানাধিকারী ।
advertisement
তাঁকে প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘বিয়ে নাম ইনস্টিটিউশন-এ কি বিশ্বাস করেন বাস্তবের সৌমিতৃষা ?’ এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে নায়িকার উত্তর, ‘নিশ্চয়ই করি । আমি ভীষণ ভাবে বিয়েতে বিশ্বাসী । এটা একটা গ্রেট গ্রেট ইনস্টিটিউশন । আমার অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই । রক্তের সম্পর্ক নেই...তবু আলাদা পরিবারের, আলাদা সংস্কারের দু’টো মানুষ সারা জীবন একসঙ্গে কাটিয়ে দেয়, এটা একটা মহান বন্ধন । ভালবাসায় সব সম্ভব ।’’
‘‘যদি সেটাই হয় তা হলে তোর্সাও তো যা করছে সেটা ভালবেসেই করছে । যুদ্ধ আর ভালবাসায় তো সব চলে’’ । এই প্রশ্নেও ঘাবড়ালেন না মিঠাই রানি । তাঁর অকপট জবাব, ‘‘এখানে যাঁরা, যে ভাবে রিঅ্যাক্ট করছেন, সবার একটা নিজস্ব গ্রাউন্ড আছে । টেস ছোট থেকেই সিড’কে ভালবাসে । সিদ্ধার্থ’র অবশ্য আলাদা করে কোনও ফিলিংস নেই । তবু তোর্সা মিঠাইকে সহ্য করতে পারে না, কারণ মিঠাই তাঁর জায়গাটা নিয়ে নিয়েছে বলে সে মনে করে । সোম দা আগে মিষ্টির পুরো ব্যবসাটা সামলাত । এখন মিঠাই সেই জায়গাতেও ঢুকে পড়েছে । এখানেই তাঁর রাগ । আবার বড়বাবু নিজের ছেলের পাশে মিঠাইয়ের মতো ‘অশিক্ষিত’ বউমা’কে মেনে নিতে পারেন না । তাই সবাই নিজের নিজের জায়গায় কিন্তু ঠিক আছে । কেউ ভুল নয় ।’’
‘কিন্তু কোথাও কোনও ভুল হয়ে গেলে সৌমিতৃষা নিজে কী করেন ?’ এই দিক থেকে মিঠাইয়ের থেকে যোজন দূরত্ব সৌমি’র । মিঠাই আগেই ভুল স্বীকার করে নেয়, ‘সরি’ বলে, ক্ষমা চায় । কিন্তু সৌমিতৃষা একেবারে ভিন্ন মেরুর । নিজেই বললেন, ‘‘আমি কাউকে সরি বলতে পারি না । মিঠাইয়ের মতো কথায় কথায় চোখে জলও আসে না আমার । খুব কষ্ট হলেও কারও সামনে আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল বেরবে না । আমার অনুভূতিগুলো খুব গোপনে থাকে । বন্ধ দরজার পিছনে । হয়তো খুব বেশি হলে চোখটা একটু লাল হয়ে উঠল । ব্যাস ওইটুকুই । কোথাও ‘সরি’ বলার দরকার হলে হয়তো গলার টোনটা একটু চেঞ্জ হয় । এর বেশি কিছু না । তাতেই বুঝে নিতে হবে (হাসি) ।’’
গত পাঁচ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন সৌমিতৃষা । আগেও কয়েকটি ধারাবাহিক করেছেন তিনি। ‘এ আমার গুরুদক্ষিণা’ ধারাবাহিকের নেগেটিভ চরিত্র দিয়ে সৌমি প্রথম টেলিজগতে পা রাখেন। তারপর ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’, ‘গোপাল ভাঁড়’, ‘অলৌকিক না লৌকিক’ ইত্যাদি একের পর এক সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। পরবর্তীতে ‘কনে বউ’-এর প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান । কিন্তু এই ধারাবাহিক শেষ না হতেই তিনি সুযোগ পেয়ে যান ‘মিঠাই’-এর মূল চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে।
‘কিন্তু সৌমিতৃষার জীবনে যদি ‘অ্যাস্কিডেন্ট’ হয় ? উচ্ছেবাবু’র মতো বর জুটলে কী করবেন তিনি ?’ প্রশ্ন করতেই এক লহমায় নায়িকার উত্তর, ‘‘মিঠাই আর উচ্ছেবাবু সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর । কিন্তু আমার বর তো আমার মতোই হবে । উচ্ছেবাবু’কে আমার একটুও পছন্দ নয় । ও রকম বর জোটার সম্ভাবনা কম । যাঁর সঙ্গে আমার মনের মিল হবে, আমার চিন্তা-ভাবনা মিলবে...সেই তো সঠিক পার্টনার হবে । তবে এটা ঠিক, প্রেমটা একটা অ্যাস্কিডেন্টই ।’’
পাঁচ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন সৌমিতৃষা । কিন্তু কোনও দিনই অভিনয়ের জন্য অডিশন দেননি । প্রথমে একটি ব্র্যান্ডের মডেলিং করতেন । সেখান থেকেই চান্স পান অভিনয়ে । পাঁচ বছর পর প্রথম বড় ব্রেক । তারপরের গল্পটা তো সকলেরই জানা । ‘গোপালের হেলেপ’-এই কেল্লাফতে ।