TRENDING:

Tarun Majumder Passed Away || যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন...

Last Updated:

Tarun Majumder Passed Away || বেঁচে থাকাকালীনও ছিলেন প্রচারধর্মী হতে চাননি৷ তিনি আজীবন বিশ্বাস করেছেন একটাই কথা, 'আমার তো গল্প বলা কাজ৷'

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
"পলেক বিচ্ছেদে হায়
advertisement

তখনি তো বুঝা যায়

সে যে অনন্তের..."

আজ আকাশ অংশত মেঘলা৷ চলে গেলেন তরুণ মজুমদার৷ একটা আপাদমস্তক প্রচারমুখর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকেও প্রচারবিমুখভাবে চলে গেলেন৷ অবশ্য বেঁচে থাকাকালীনও ছিলেন প্রচারধর্মী হতে চাননি৷ তিনি আজীবন বিশ্বাস করেছেন একটাই কথা, 'আমার তো গল্প বলা কাজ৷'

গল্পই তিনি বলেছেন৷ সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন ততদিনে নিজেদের ঘরানা তৈরি করে ফেলেছেন। সেই ঘরানার মধ্যে থেকেও তাঁর যাত্রা ছিল সতন্ত্র৷ যেখানে সবটাই কথার কথা৷ আবার তার ব্যপ্তিও সমুদ্রের মতো৷ শুধু বিনোদনের কথা তিনি ভাবেননি৷ শুধু ব্যবসাও না৷ বরং গল্প থেকে বানিয়েছেন অন্য এক নতুন গল্প৷ পরিচালনায় তাঁর অভিষেক ‘যাত্রিক’-এর হাত ধরে ৷ ১৯৬৩ পর্যন্ত শচীন মুখোপাধ্যায়, দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘যাত্রিক’-এর মাধ্যমেই ছবি পরিচালনা করেন তরুণ মজুমদার ৷ এর পর ১৯৬৩ সালে তিনি একক পরিচালক হিসবে কাজ শুরু৷ ১৯৬৫ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নায়ক করে ‘একটুকু বাসা’এবং ‘আলোর পিপাসা’পরিচালনা করেন বসন্ত চৌধুরীকে নায়কের ভূমিকায় রেখে ৷ এর পর টালিগঞ্জে তাঁর যাত্রা ক্রমশই মজবুত হয়ে ওঠে -

advertisement

‘পলাতক’ (১৯৬৩), ‘বালিকা বধূ (১৯৬৭), ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ (১৯৭৩), ‘গণদেবতা’ (১৯৭৮), ‘দাদার কীর্তি’ (১৯৭৯), (১৯৮৫), ‘আলো’ (২০০৩)৷ তাঁর গল্পে দর্শক দেখেছে সাহিত্যের সেরা এক সময়৷ তরুণ মজুমদারের পরিচালনাতেই বাংলা চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পরিচিত হন তাপস পাল, দেবশ্রী রায়, মহুয়া রায়চৌধুরীর মতো শিল্পীরা ৷ বাংলা সাহিত্যনির্ভর ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধুর্য ছিল তরুণ মজুমদারের ছবির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ৷ পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘কাচের স্বর্গ’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘গণদেবতা’ এবং ‘অরণ্য আমার’ ছবিগুলি জাতীয় পুরস্কার পায়৷

advertisement

প্রথমেই মনে পড়ে গেল আদরের কাঙাল সেই নরম মেয়েটির গল্প৷ যাকে দেখে ভুরু কুঁচকে ছিল সবাই৷ আর যে সবাইকে দিয়েছিল আঁজলা ভরা ভালবাসা৷ দিনের শেষে যে বিশ্বাস করেছিল একটাই কথা, "আমরা ফুরায়ে যাই, প্রেম তুমি হয়ো না আহত৷" বিভূতিভূষণ কিন্নরদলে লিখেছিলেন, "গরিব বলেই এরা বেশি কুচুটে ও হিংসুক, কেউ কারও ভাল দেখতে পারে না বা কেউ কাউকে বিশ্বাসও করে না।" অথচ এই 'গরিব' আর 'কুচুটে' মানুষগুলোই কী নিবিড় ভালবেসে ফেলেছিল তাকে৷ "শান্তি একটা গন্ধরাজ আর টগরের মালা গেঁথে এনেছিল বৌদিদিকে পরাবে বলে—গান গাইবার সময়ে সে আবার সেটা বৌয়ের গলায় আলগোছে পরিয়ে দিল—সেই জ্যোৎস্নায় সাদা সুগন্ধি ফুলের মালা গলায় রূপসী বৌয়ের মুখে ভজন শুনতে শুনতে মন্টুর মায়ের মনে হলো এই মেয়েটিই সেই মীরাবাই, অনেককাল পরে পৃথিবীতে আবার নেমে এসেছে, আবার সবাইকে ভক্তির গান গেয়ে শোনাচ্ছে।" লাইনগুলো বিভূতিভূষণেরই, আর এঁকেছিলেন তরুণ মজুমদার৷ 'শ্রীপতির বউ' হয়ে উঠেছিল তাদের আপনজন৷ "ঐ মেয়েটি কোথা থেকে দুদিনের জন্যে এসে তার গানের সুরের প্রভাবে সকলের অকরুণ, কুটিলভাবে পরিবর্তন এনে দিয়েছিল, সে পরিবর্তন যে কতখানি," তা বোঝা গিয়েছিল সেদিনই যেদিন আচমকাই ফুরিয়েছিল তার রাত৷ আলো চলে গিয়েছিল, থেকে গিয়েছিল তার কিন্নরদল৷ আজ আরও এক আলো নিভল৷

advertisement

মায়ার বুননে বুনেছিলেন দাদার কীর্তিকে৷ আশির দশকের শুরু৷ তখনও ডিজিটাল দুনিয়ার রমরমা নেই৷ বাঙালি সবে কাটিয়ে উঠছে উত্তম-শোক৷ তখনই এল‘দাদার কীর্তি’৷ আদ্যোপান্ত সরল, আবেগপ্রবণ এক বাঙালি যুবককে আঁকলেন তরুণ মজুমদার৷ যে শান্ত, কিন্তু ছোবল দিতেও জানে৷ উত্তম-সুচিত্রাকে নিয়ে 'চাওয়া পাওয়া'ই হোক কিংবা একেবারে অন্য ঘরানার 'বালিকা বধূ'- তাঁর ছবিতে ক্লান্তি থাকত না কখনওই৷ ৯২ বছর বয়সে একদিকে বয়সজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি ৷ দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত, হাই ডায়াবেটিসও ৷ নতুন করে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা এবং ফুসফুসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল তরুণ মজুমদারের ৷ আর তার পরেই পূর্ণচ্ছেদ৷

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
কালীপুজোর রাতে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বাড়ি! বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ২ পরিবারের সর্বনাশ
আরও দেখুন

'তালুক ছেড়ে মুলুক ফেলে ঘরের বার' ই হলেন তিনি৷ আবার কোনও এক শারদপ্রাতে হয়তো মনে পড়বে তাঁর আলোকে৷ এও এক ব্যথার উপশম, সমস্ত ক্ষতের মুখে পলি... আপাতত কালের কষ্টিপাথরে লিখে দিয়ে গেলেন এক নাম, সেই নাম চিরতরুণই৷

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Tarun Majumder Passed Away || যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন...
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল