TRENDING:

ব্লু দ্য কালার অফ গিল্ট! সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার! জীবনের গল্প বলবেন পরিচালক নীলাক্ষী সেনগুপ্ত!

Last Updated:

কচু কাটা হতেন বান্দ্রা স্টেশনে! ভাগ্যের জোড়ে বেঁচেছেন বহু বার! এবার স্বাধীনতার গল্প বলবেন নীলাক্ষী সেনগুপ্ত! সামনেই শুরু হচ্ছে তাঁর ছবির শ্যুটিং! স্থান মুর্শিদাবাদ!

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#মুম্বই:  আর পাঁচটা মেয়ের থেকে একটু আলাদা! ১৪ বছর বয়সেই কিছু করতে হবে, এই খিদেটা তাড়া করে বেরিয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকে ছোটা গানের পিছনে। ছোটা অভিনয় থেকে পরিচালনায়! কিন্তু ৮০-র দশকের শুরুর দিকে প্রোডাকশন হাউসে মেয়েরা কই? মহিলা টেকনিশিয়ানস ও নেই, নেই মহিলা পরিচালক। কলকাতার চিত্রটা এমনই, তাই ধেয়ে যাওয়া মুম্বই! স্বপ্ন সত্যি করতে গিয়ে আজ নীলাক্ষী সেনগুপ্তর ঝুলিতে রয়েছে অনেক কিছু। সিনেমা থেকে ডকু ছবি! ঝুলি খুলতেই বেরিয়ে এল হাজার একটা গল্প!
advertisement

প্রথম শুরুটা কীভাবে হয়?

প্রথমে বলি আজ যা কিছু হয়েছে, সব কিছুই সম্ভব  হয়েছে আমার মা ও বোনের সাপোর্টের জন্য।  ছয় বছর বয়সে বাবাকে হারাই। তারপর মা আমায় উৎসাহ দিয়েছেন। অন্যদিকে আমার বোন এনাক্ষী খুব ভাল স্টোরি টেলার! এখন ও Chair of American University। বোন আমার সাহস। মা আমার প্রেরণা! তাঁদের ছাড়া আমি কিচ্ছু না!  এবার আসি লড়াইয়ের কথায়! তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সে সময় আমার মনে হয় কিছু একটা করতেই হবে। যদিও ১৪ বছর বয়স থেকেই নানা কিছু করছি। সে সময় ক্লাস পালিয়ে চলে যাই আকাশবাণীতে। সেখানেই প্রথম কাজের হাতেখড়ি। আমি ইংলিশেই কন্টেন্ট লিখতাম, প্রোগ্রাম করতাম দূরদর্শনে। যেহেতু ইংলিশ মাধ্যম ছিল। তবে বাংলাতেও করেছি। অভিজিৎ দাশগুপ্ত ও অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ওঁদের অবদান ভোলার নয়। এর পর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থাতে কাজ। কিন্তু কিছুই যেন শিখতে পারছিলাম না।

advertisement

কলকাতা ছেড়ে মুম্বই কেন চলে গেলেন?

আসলে যা চাইছিলাম কলকাতায় সেটা পাচ্ছিলাম না। শিখতে পারছিলাম না। স্টাক হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাকে বেরোতেই হবে। এই ভাবনা থেকেই মুম্বই চলে আসি। তবে তিনবারের চেষ্টায় মুম্বই আসতে পারি। কলকাতা ছাড়তাম না, যদি কাজের সুযোগ থাকত। যদিও আজকাল মনে হয় গোটা বিশ্বের এক কথা। শুধু কলকাতা নয়।

advertisement

তিনবারের চেষ্টায় কী ভাবে ঠাঁই হল মুম্বইতে?

সে এক গল্প বটে। প্রথমবার যখন আসি ডিসেম্বর মাস। কিছুই হচ্ছে না কাজ। ঠিক করি ফিরে যাব। আমার রিটার্ন টিকিট আগেই করা থাকত। যেদিন আমি ট্রেনে উঠি সেদিন দাঙ্গা বাঁধে। আমার মা দু'তিন দিন কোনও খোঁজ পাননি। ৪০ ঘণ্টা পর কলকাতা পৌঁছালাম। গিয়ে জানতে পারি সেদিন মানুষকে কচু কাটা করা হয়েছে মুম্বইতে। ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাই। এভাবেই তিনবারের বেলা আমি প্রোডাকশন হাউসে কাজ শুরু করি। তারপর কাগজে লেখালেখি, বিজ্ঞাপনের কাজ। ফ্লিম ফেয়ারের কাজ। এই কাজ করতে গিয়েই বহু নামী মানুষ আমার কাছের বন্ধু হয়ে যান। শাহরুখকে আমার সামনে শার্ট পরে ছুটতে দেখেছি স্টেজে। এমন অনেক অভিনেতা আজ কাছের।

advertisement

কী ধরনের বিজ্ঞাপনের কাজ করতেন?

একটা উদাহরণ দিই। সে সময় লিরিল-এর শ্যুট হবে। এই বিজ্ঞাপন দিয়েই বলিউডে আসে প্রীতি জিন্টা। ৪০ ঘণ্টা ড্রাইভ করে এমপিতে গিয়ে ওয়াটারফল খুঁজে বের করি। শ্যুট হয়। এমন অনেক আছে, কত বলবো।

সিনেমায় কবে এলেন?

সিনেমা বলতে ডকু ছবি তো অনেক দিন ধরেই করছি। যার জন্য বহু বার বিদেশ থেকেও কাজ করেছি। মিটিং ইন দ্য মাউনটেইন- আমার করা শর্ট ফ্লিম প্রশংসিত হয়।  এই গল্প আমার বোন এনাক্ষীর লেখা! তবে বড় ছবি করার কথা মাথায় আসে লকডাউনে।

advertisement

কী ভাবে?

লকডাউনে অনেক সময় পেলাম। কোভিডে কাজ বন্ধ।  লিখতে শুরু করলাম। প্রথম ছোটদের গল্প লিখলাম 'টিনা অ্যান্ড হার ওয়ার্ল্ড" সেটি হল একটি সাত বছরের মেয়ে টাইম ট্রাভেলে পৌঁছে যায় ইতিহাসে। কাল্পনিক হলেও ইতিহাসটা একদম সত্যি রেখেছি। এই গল্পটি এরই মধ্যেই সাতটি ভাষায় প্রকাশ হয়েছে। চাই এমন ৫০টা গল্প করতে এবং ১৫ ভাষায় ট্রান্সলেট করতে। যার মধ্যে অনেকটাই এগিয়েছে। TINA- মানে, দেয়ার ইজ নো অলটারনেটিভ। মানে গল্পটা আমাকে বলতেই হত। এর পরেই ছবির গল্প মাথায় আসে।

কেমন আপনার গল্প?

গল্পটা হল একজন ব্যক্তির। যিনি সেক্সপিরিয়ান থিয়েটার করেন। ম্যাকবেথের চরিত্রে অভিনয় করেন। হঠাৎ করেই তাঁর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়। সে সেটের মধ্যে ১৮৩০ সালের নীলকরদের সময়কার নানা ইতিহাস দেখতে শুরু করেন। এর পর তাঁর যে ডাক্তার দু'জনে মিলেই এই প্রেক্ষাপটে জড়িয়ে পড়েন। আমাদের স্বাধীনতার কথা উঠে আসে। বলা যেতে পারে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। ভূতের গল্প নয়। ছবির নাম "ব্লু: দ্য কালার অফ গিল্ট।"

কোন ভাষাতে হবে?

ইংরেজিতেই তো করার কথা ছিল। কিন্তু ভারতে নাকি ইংরেজি সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটর পাবো না। অনেক কিছু পেরোতে হয়েছে আমাকে। সেভাবে সাপোর্ট কিছুই পাইনি। বাংলার কথা বলবো, বাংলা থেকে সাপোর্ট তো চাই। তাই ঠিক করলাম বাংলা, হিন্দি ও ইংলিশ তিনটেই রাখবো। স্বাধীনতার লড়াইয়ে বাংলার অবদান কিন্তু সব থেকে বেশি। অথচ আমরা ভুলতে বসেছি। সেই কথাই এই ছবি মনে করাবে মানুষকে।

কোথায় শ্যুটিং হবে?

বেশিরভাগটাই মুর্শিদাবাদে। কারণ পলাশীর যুদ্ধ তো ওখানেই। তাছাড়া ব্রিটিশদের ছেড়ে যাওয়া অনেক কিছুই আছে ওখানে। তাই মুর্শিদাবাদ।

অভিনয় কে করবেন?

আপাতত আদিল হুসেন করছেন প্রধান চরিত্র। বাকি কাস্টিং চলছে। এই বছরের শেষের দিকেই শ্যুটিং শুরু করবো।

এই যে এত লড়াই, মু্ম্বইতে কখনও পথ হারাননি?

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

হারাতে হারাতে বেঁচেছি। সে সময় বাড়ি ভাড়া খুঁজছি অফিসের কাছে। ফোনে এক মহিলার সঙ্গে কথা হয়। সে আমায় যে সময় দেখা করতে বলে তার একটু পরে যাই। মহিলা চলে যান। একটি ঠিকানা পাই যেখানে আমায় যেতে বলা হয়। ট্যাক্সি চালক ঠিকানা দিতেই, তিনি বলেন কেন যাবেন এখানে? আমি তো কিছুই বুঝতে পারিনি। উনি বলেন ওটা খারাপ পাড়া। মানে রেড লাইট এরিয়া। সেদিন ওই ঠিকানায় পৌঁছে গেলে আজ আর কিছুই করা হত না! অন্ধকার গ্রাস করতো। তবে আমি আলোর পথযাত্রী। কিন্তু লড়াই এখনও চলছে। জীবন মানেই তো লড়াই!

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
ব্লু দ্য কালার অফ গিল্ট! সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার! জীবনের গল্প বলবেন পরিচালক নীলাক্ষী সেনগুপ্ত!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল