তিনি বললেন, ‘‘সকালবেলা উঠে আমি স্তম্ভিত, বাপ্পিদা চলে যাবেন, আমি সত্যি ভাবতে পারিনি। প্রসেনজিৎ-বাপ্পি লাহিড়ী জুটিটা খুব অদ্ভুত ভাবে কাজ করেছে, 'অমর সঙ্গী' থেকে শুরু করে এই শেষ, 'ধিন তাক তাক তিতাক তিতাক', বাপ্পিদা গেয়েছেন। তা ছাড়াও হিন্দি-বাংলায় বাপ্পিদা সমান ভাবে গান গেয়েছেন। আমি যে কটা হিন্দি ছবি করেছি, বাপ্পিদা মোটামুটি সব ছবিগুলোরই মিউজিক করেছেন। তা ছাড়াও বাংলায় অজস্র হিট আছে, যেটা নিয়ে কিছু নতুন করে বলার নেই।’’
advertisement
কাজের বাইরেও বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে একটা ব্যক্তিগত সখ্য ছিল প্রসেনজিতের। নায়কের কথায়, ‘‘সব চেয়ে বড় কথা, বাপ্পিদা আমার পরম আত্মীয় ছিলেন। ছোটবেলা যখনই বম্বে যেতাম, বাপ্পিদার সঙ্গে দেখা হতো। মানুষ হিসেবে বাপ্পিদা বড্ড ভাল ছিলেন। আমাকে খুব স্নেহ করতেন। ওঁর ছেলে বাপ্পাটা বড্ড ছোট। ওঁদের পরিবার, বৌদি, বাপ্পা, বোন সকলকেই বলতে চাই, আমি পাশে আছি।’’
আরও পড়ুন : ৩ বছর বয়সে হাতেখড়ি তবলায়, মামা কিশোর কুমারের দেখানো পথেই পা রেখেছিলেন ভাগ্নে বাপ্পি
আরও পড়ুন : বলিউডে যাত্রাপথের শুরুতেই লতার সঙ্গে দ্বৈত, মুম্বই থেকে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কলকাতায় চলে এলেন কেন?
সঙ্গীতশিল্পীর সৃষ্টি প্রসেনজিতকে চিরকালই মুগ্ধ করে। তিনি বললেন, ‘‘বাপ্পিদা যা সৃষ্টি করে গিয়েছেন, যা দিয়ে গিয়েছেন, সেটা একটা ভাণ্ডার। আমাদের সঙ্গীতের ইতিহাসে, চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বাপ্পিদার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ওঁর দান অসামান্য। বাংলা, হিন্দি গান তো বটেই তবে বিদেশেও বাপ্পিদার গ্রহণযোগ্যতা অসম্ভব। দেশের বাইরে ওঁর যা জনপ্রিয়তা, তা ভাবা যায় না। ডিস্কো ডান্সারের পরে বিশেষ করে এই জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই মানুষটা আমাদের ভারতীয় ছবিতে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে গিয়েছেন। সত্যি বাপ্পিদার চলে যাওয়াটা বড্ড আগে হয়ে গেল। আমি এটা এখনও বিশ্বাস করতে চাইছি না। আশা করি যেখানেই থাকবেন, বাপ্পিদা ভালো থাকবেন। আমরা মনে রাখবো বাপ্পিদাকে।’’
আরও পড়ুন : নবীন প্রজন্মের সঙ্গে ছিল নিবিড় যোগাযোগ, তাঁর প্রজন্মজয়ী সুরের আনন্দঝর্নায় সিঞ্চন অনন্ত
‘‘ঘুরে ফিরে একটাই লাইন মনে পড়ছে, চিরদিনই তুমি যে আমার, যুগে যুগে আমি তোমারই। ভালো থেকো বাপ্পিদা, যেখানে থেকো ভালো থেকো।’’-বলতে বলতে গলা ধরে এল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের।