ছবির শুরুতেই দেখা যায় এক প্রাচীন প্রচলিত রীতি। পশ্চিমবঙ্গের চন্দ্রপুর নামে এক এলাকা এক দৈত্যের দাপটে ভীত-সন্ত্রস্ত। তাই তার হাত থেকে বাঁচতে সেখানকার রাজপরিবারে জন্ম নেওয়া কন্যাসন্তানদের মা কালীর সামনে বলি দেওয়া হয়। তবে এই চন্দ্রপুর থেকে অনেকটাই দূরে থাকেন কাজল অভিনীত চরিত্র অম্বিকা। সঙ্গে থাকেন তাঁর স্বামী শুভঙ্করও। এই চরিত্রটিতে দেখা যাবে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে।
advertisement
যদিও সেই রাজপরিবারেরই ছেলে শুভঙ্কর। তাঁদের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। আর তাকে বলির প্রথা থেকে বাঁচাতে পরিবারের থেকে কন্যার জন্মের কথা গোপন করে রেখেছেন অম্বিকা-শুভঙ্কর। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে আচমকাই মৃত্যু হয় শুভঙ্করের। অম্বিকা এবং তাঁর ১২ বছর বয়সী কন্যা শ্বেতা একা হয়ে পড়েন। এদিকে বাবার পৈতৃক প্রাসাদোপম বাড়ি বিক্রি হতে চলেছে শুনে সেটি দেখার জন্য আবদার করে শ্বেতা। ফলে মেয়েকে নিয়ে অম্বিকাকে চন্দ্রপুরে যেতেই হয়। সেখান থেকেই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়।
আরও পড়ুন-নৈহাটিতে হাজির প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী, পুজো দিলেন বড়মার মন্দিরে, তারপরই ঘটে গেল…
এই কনসেপ্ট এবং গল্পে যথেষ্ট মালমশলা রয়েছে। কিন্তু গল্প বলার ধরনেই রয়েছে ঘাটতি। এর পাশাপাশি এই ফিল্মে প্রচুর স্টিরিওটাইপ দেখা গিয়েছে। যেটার কোনও প্রয়োজন ছিল না। অতিরঞ্জিত করেই অনেকটা দেখানো হয়েছে। এমনকী ছবিতে চন্দ্রপুরের মানুষ এমন ভাবে কথা বলেন যে, তা দেখে ক্লিশে মনে হবে। এর থেকে শতহস্ত দূরে পালাবেন বাঙালিরা। তবে সবথেকে হতাশার বিষয় হল – এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করা রণিত রায় নিজের সমস্ত হিন্দি সংলাপ এমন ভাবে বলে গিয়েছেন, তাতে বাঙালি উচ্চারণের ছাপ স্পষ্ট।
এবার আসা যাক অভিনয় প্রসঙ্গে। অম্বিকা হিসেবে কাজল তো দুর্ধর্ষ। প্রতিটি পর্যায়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, এই চরিত্রে তিনি ছাড়া আর কাউকেই মানাত না। বলতে গেলে, এই ছবিকে একা নিজের কাঁধে টেনে নিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী। এমনকী নিজের হোম ব্র্যান্ড দেবগন ফিল্মসের ত্রাতা হয়ে উঠেছেন তিনি। যদিও বাকি অভিনেতা-অভিনেত্রী এমনকী রণিত রায়ও গড়পরতা পারফরম্যান্স দিয়েছেন। তবে এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে চিত্রনাট্য এবং ভিএফএক্স-এর গভীরতার ঘাটতিকেই। যেন মনে হবে, বিষয়টা একেবারেই অবাস্তব। সব মিলিয়ে এই ছবিটি একবার দেখার জন্য ঠিক আছে। তবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে গেলে আরও কিছু উপাদানের প্রয়োজন ছিল।