ঐন্দ্রিলার মায়ের কথায় জানা যায়, নিউরোসার্জন ঐন্দ্রিলাকে খুবই ভালবাসতেন। মেয়ের মতো। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে ওটি করান। সফল হয় অস্ত্রোপচার। জ্ঞানও ফিরেছিল ঐন্দ্রিলার। অত্যন্ত ক্রিটিকাল ওটি-ও জয় করে ফেরেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু তার পর কী ঘটল? চলে গেলেন 'জিয়নকাঠি'র নায়িকা। বাঁচানো গেল না ২৪ বছরের অভিনেত্রীকে। পোস্ট অপারেটিভ ট্রিটমেন্ট নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলছেন নায়িকার মা।
advertisement
আরও পড়ুন: গোঁয়ার্তুমি করে মেয়েকে ‘ডিপ কোমায়’ পাঠাল! চিকিৎসককে নিয়ে বিস্ফোরক ঐন্দ্রিলার মা
গত ২০ নভেম্বর কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ঐন্দ্রিলা। দু'বার ক্যানসারজয়ীর মৃত্যুতে থমকে যায় গোটা বাংলা। আজও তাঁর পুরনো ভিডিও, ছবিকেই আঁকড়ে বসে রয়েছেন কত মানুষ। পরিবার বা তাঁর প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর কথা তো বলাই বাহুল্য।
সম্প্রতি ছোট মেয়ের স্মৃতিচারণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন নায়িকার মা শিখা শর্মা। আর সেখানেই তাঁর অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতিতেই তাঁর মেয়ে ডিপ কোমায় চলে গিয়েছেন। শিখা শর্মার দাবি, পরবর্তী একটি পরীক্ষা করা হয় ওটি-র ব্যবস্থাপনা ছাড়াই। আর সেই সময়েই কতটা সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে, সেটা নিয়ে ধন্দে শিখা শর্মা। ঐন্দ্রিলার মায়ের কথায়, ''এর পরেই মেয়ে জ্বরে পড়ল। সংক্রমণ হয়ে গেল। এক জন চিকিৎসকের জন্যেই এটা হয়েছে। উনি যদি একটু সাবধানি হতেন, তা হলে এটা হত না মনে হয়। কিন্তু বাকি সবাই খুব চেষ্টা করেছে। অন্য ডাক্তার এসে প্রেসক্রিপশন করে দিলে উনি সেটা অনুসরণ করতেন না। খুব ইগো ছিল ওনার! যেহেতু উনি ওই হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছেন।''
আরও পড়ুন: কেমন আছে ঐন্দ্রিলার দুই পোষ্য বোজো-তোজো? জানালেন প্রয়াত নায়িকার মা
আরও ভয়াবহ অভিযোগ তুললেন শিখা শর্মা। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ''তিন দিন আগেই উনি ধরে নিলেন যে মারা যাবে। আমাদের পরিবারের লোকজনকে দেখা করার অনুমতি দিতে থাকলেন। সবাইকে ছেড়ে দিচ্ছিলেন। ভাবটা যেন এরকম, শেষ সময়ে এসে দেখে নাও। ওনার মধ্যে কোনও মানবিকতা দেখিনি আমরা। ওদিকে আমার ২৪ বছরের মেয়ে ওভাবে পড়ে রয়েছে! সব্য দাঁড়িয়ে আছে একটু দূরে। ও শুনতে পাচ্ছে উনি কাউকে বলছেন, ''এ তো আর কয়েকটা দিন। এই ঘরটাকে পরিষ্কার করে দিও।'' সব্য তো নীচে এসে থরথর করে কাঁপছে! আমাকে বলছে, ''কাকিমা আর কী করব?'' কিন্তু আমি ওকে বোঝাই যে, হার্ট ভাল, ফুসফুস ভাল, শুধু তো ব্রেনে সমস্যা। নিউরোর ব্যাপার। সময় লাগে। কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাবে।''
রক্ত দেওয়া নিয়েও গাফিলতি হয়েছে বলে দাবি ঐন্দ্রিলার মা। নায়িকার বাবা সকাল থেকে রক্ত জোগাড় নিয়ে কথা বলার পরেও হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে যাওয়ার পরে তাঁকে রক্ত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ শিখা শর্মার। এছাড়াও তিনি জানালেন, প্রোটিনের ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হলেও তা দিতে দেরি করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ঐন্দ্রিলার অক্সিজেন লেভেল ক্রমাগত ৮০-র কোঠায় থাকায় তাঁর দিদি সেই চিকিৎসককে বারবার সেই বিষয়ে নজর দিতে বললেও পরবর্তী ৬-৭ ঘণ্টা একই ভাবে রেখে দেওয়া হয় ঐন্দ্রিলাকে। ''যখন পর পর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে থাকে, তখন অক্সিজেন সাপ্লাই করা হচ্ছে! এদিকে কত আগে থেকে আমার বড় মেয়ে আর স্বামী বলছিল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের কথা!'' প্রবল আক্ষেপের সুর ঐন্দ্রিলার মায়ের গলায়।