আজকের দিনটা কীভাবে কাটাচ্ছেন?
ঊষসী: উৎসবের দিনগুলো কাছের মানুষদের সঙ্গে কাটাতেই ভাল লাগে। আজ বাড়ির সকলের সঙ্গে খুব মজা করব। আর যদি ইচ্ছে করে তাহলে বাইরে গিয়ে কোথাও খাওয়া-দাওয়া করতে পারি।
হ্যাঁ, পয়লা বৈশাখ মানেই তো খাওয়া দাওয়া, আজকের দিনে কী ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করেন?
advertisement
ঊষসী: নতুন বাংলা বছর শুরু হচ্ছে আজ থেকে বাঙালি খাবার না হলে কি জমে! তাই আজ পরিবারের সকলের মিলে কব্জি ডুবিয়ে বাঙালি খাবারই খাব।
খাবারের পাশাপাশি সাজটাও কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে সাজবেন আজ, সাবেকি নাকি ওয়েস্টার্ন?
ঊষসী: অবশ্যই সাবেকি, বলা ভাল শাড়ি। শাড়ি ছাড়া আমার নববর্ষ সম্পূর্ণ হয় না। আজকের সকালটা শুরুই হয়েছে পাট ভাঙা নতুন শাড়িতে।
এখন তো শাড়ি, কিন্তু ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখের সাজটা কেমন হত?
ঊষসী: তখন পয়লা বৈশাখ আসছে মানেই নতুন জামা। মনে আছে, পয়লা বৈশাখের কয়েক দিন আগে মায়ের হাত ধরে নতুন জামা কিনতে যেতাম। বৈশাখ মানেই তো গরম। তাই মা আমাকে সুতির ফ্রক কিনে দিতেন। এখন তো কাজের জন্য বছরের নানা সময়ই নতুন পোশাক পড়তে হয়, সঙ্গে জুড়েছে পছন্দও। কিন্তু তখন এত পছন্দ-অপছন্দ ছিল না। মা ভালবেসে যা কিনে দিতেন তাতেই খুশি হয়ে যেতাম। নতুন বছরে নতুন জামা পেয়েছি এটাই ছিল সবচেয়ে বড় আনন্দ।
পয়লা বৈশাখ মানেই তো হালখাতা, এখনও কি হাল খাতা করতে যাওয়া হয়?
ঊষসী: না, এখন বলে নয়, কখনওই সেভাবে হালখাতা করতে যাওয়া হয় না। তবে ছোটবেলায় বাড়ির বড়রা হালখাতা করে হাতে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে আসত। সেই মিষ্টিগুলো সব ফ্রিজে রাখা থাকত। আমরা ভাই-বোনরা সবার নজর এড়িয়ে সেগুলো মাঝে মাঝেই ফ্রিজ থেকে বার করে খেতাম।
ছোটবেলায় তার মানে পয়লা বৈশাখটা বেশ জমজমাট হত…
ঊষসী: হ্যাঁ, ছেলেবেলায় এই সময়টায় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে একটা ছুটি পড়ত। তাই আমি পয়লা বৈশাখে ঠাকুরমার কাছে বা আমার মামার বাড়ি কৃষ্ণনগরেই থাকতাম। মনে আছে, হালখাতার পর যত বাংলা ক্যালেন্ডার আসত, সব নিয়ে ঠাকুরমার সঙ্গে গুনতে বসতাম। গনেশ যে যে ক্যালেন্ডারে থাকত, সেগুলো দেখে আলাদা করে গুনে রাখতাম। আবার মামার বাড়ি থাকলে বিষয়টা হত অন্যরকমের। এই সময় ওখানে গাজনের মেলা বসত। সেখানে আমার মামাতো দিদিদের সঙ্গে যেতাম। সবাই মিলে খুব আনন্দ করতাম। মামার বাড়ির বাগানে ভাই-বোনদের সঙ্গে আম কুড়াতাম। আসলে সব মিলিয়ে ছেলেবেলার পয়লা বৈশাখটা খুব মিস করি।