শক্তিশালী কণ্ঠ এবং ঠুমরি গানের জন্য খ্যাত পণ্ডিত মিশ্র দীর্ঘ স্বাস্থ্যগত সমস্যার সঙ্গে লড়াই করার পর বৃহস্পতিবার বারাণসীতে মারা যান। কয়েকদিন আগে তাকে বিএইচইউতে ভর্তি করা হয়েছিল এবং সুস্থ হওয়ার পর তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি তাঁর মেয়ে নম্রতা মিশ্র তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মৃত্যু সঙ্গীত জগতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে বিবেচিত হয়।
advertisement
তিনি কিডনির জটিলতার সঙ্গে সঙ্গে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অস্টিওআর্থারাইটিস, বিপিএইচ এবং এআরডিএস-সহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগের সঙ্গে লড়াই করছিলেন।
পদ্মবিভূষণ প্রাপক, পণ্ডিত মিশ্র ছিলেন হিন্দুস্তানি ধ্রুপদী এবং আধা-ধ্রুপদী সঙ্গীতের একজন বিখ্যাত শিল্পী। ১৯৩৬ সালের ৩ অগাস্ট উত্তর প্রদেশের আজমগড় জেলার হরিহরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণকারী, তিনি প্রথমে তার বাবা পণ্ডিত বদ্রী প্রসাদ মিশ্রের কাছে তালিম নেন এবং তারপর কিরানা ঘরানার ওস্তাদ আব্দুল গনি খানের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে তিনি সঙ্গীতজ্ঞ ঠাকুর জয়দেব সিংহের কাছ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
পণ্ডিত মিশ্র ছিলেন বেনারস ঘরানার একজন উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধি এবং তাঁর গভীর, প্রাণবন্ত কণ্ঠস্বর লক্ষ লক্ষ মানুষকে মুগ্ধ করেছিল। তাঁর ‘রাগ বিরাট’ এবং’ঠুমরি মেহফিল’ অ্যালবামগুলি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে এখনও প্রিয়।
আজমগড়ে থাকতেম তিনি এবং ধীরে ধীরে পবিত্র কাশী নগরীকে তাঁর কর্মস্থল করে তোলেন, যেখানে তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় বেশ কয়েকটি শীর্ষ সম্মাননা লাভ করেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০২০ সালে পদ্মবিভূষণ, ২০১০ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০০ সালে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার।
পণ্ডিত মিশ্র বলিউডেও অবদান রেখেছিলেন এবং ২০১৪ সালের বারাণসী নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাবক ছিলেন। ছান্নুলাল মিশ্র তাঁর ভজন এবং গজলের জন্য ব্যাপক পরিচিত ছিলেন, তবে তিনি অমিতাভ বচ্চন, সাইফ আলি খান এবং দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত আরক্ষণ ছবির ‘ সানস আলবেলি ‘ গানটি দিয়ে বলিউডে একটি ছাপ রেখে গেছেন।
দীপিকা এবং সাইফের উপর চিত্রায়িত, ট্র্যাকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আজও পণ্ডিত মিশ্রের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্র এক সমৃদ্ধ সঙ্গীতের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, তাঁর পুত্র রামকুমার মিশ্র একজন বিখ্যাত তবলা বাদক হিসেবে তাঁর বংশধারা অব্যাহত রেখেছেন।