অভিনেতা শেখর সুমনের গলায় স্পষ্ট বিষাদের সুর। একের পর এক মৃত্যু দেখে ক্লান্ত তিনি। পর পর দুজন সহকর্মীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন শেখর। নিউজ 18 বাংলা-র সঙ্গে ভাগ করে নিলেন মনের কথা! তাঁর ভাষায়, 'এখন সবই স্মৃতি ! কোনও কিছুরই আর স্থায়িত্ব নেই। সত্যি বলতে আমার কথা বলতেই ইচ্ছেই করছে না। কেমন যেন গলা শুকিয়ে আসছে। কীভাবে রিয়্যাক্ট করা উচিত, বুঝতে পারছি না। খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ইরফান, ঋষি এমন করে চলে যাবেন, আমি ভাবতে পারিনি।'
advertisement
আশপাশের পরিস্থিতিতেও বেশ বিরক্ত শেখর। করোনার জন্য সহকর্মী, বন্ধুদের শেষবারের মতো দেখতে যেতে পারেননি, সে আক্ষেপ সারা জীবন রয়ে যাবে তাঁর। শেখর বললেন, 'হঠাৎ করে আশপাশ ভীষণ নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে। ইরফান, ঋষি চলে গেলেন। তাঁদেরকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারলাম না। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ সবকিছুই হচ্ছে। একটা মিশ্র অনুভূতি, শব্দে বলে বোঝাতে পারবো না।'
শেখরের মনে হচ্ছে, তিনি যেন কোনও দুঃস্বপ্ন দেখছেন। এমনিতেই গৃহবন্দি হয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন মানুষজন। চারিদিকে শুধু খারাপ খবর। শেখরের কথায়, 'রোজ শুনছি, আমেরিকা, ইতালিতে প্রচুর মৃত্যু হচ্ছে। বাদ নেই ভারতও । এমন সময় আমার বন্ধুরাও চলে গেলেন। ইরফান চলে গেলেন। তার কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওঁর মায়ের। ইরফানের পরদিন চলে গেলেন ঋষি । কিছুদিন আগেই মৃত্যু হয় ঋষির বোনের। একের পর এক প্রিয় মানুষরা চলে যাচ্ছেন। মৃত্যু দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত। আর সহ্য করতে পারছি না । আমার মন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে। কেমন যেন ট্রমার মধ্যে রয়েছি।'
বলতে থাকেন শেখর,'' রণবীর, নীতুজির জন্য, আমি খুব চিন্তিত। ঋষির পরিবার খুব কঠিন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ক্যান্সারের লড়াইয়ে ঋষির পাশে সর্বক্ষণ ছিলেন রণবীর, নীতুজি। ওঁর চলে যাওয়াটা ওদের জীবনে এক অপূরণীয় ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। ' শেখর আরও বলেন, 'ঋষি কাপুর অভিনেতা হিসেবে অসাধারণ, এ নিয়ে কারও কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। পাশাপাশি তিনি একজন ভাল বাবা, ভাল ভাই, ভাল স্বামী, ভাল বন্ধু। মানুষ হিসেবেও ঋষি অনবদ্য। বাস্তব জীবনের সমস্ত চরিত্রে তিনি যথাযথ। ঋষি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে লড়েছেন। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজের মন্তব্যর জন্য নানা কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে। তবু কখনও ভেঙে পড়েননি। '
ARUNIMA DEY
