শুভ জন্মদিন গুলজার সাহেব ! নিজের সম্পর্কে যিনি বলেন, ‘আমি আসলে একজন বাঙালি, যে কিনা বাই চান্স জন্মে গিয়েছি একটা পঞ্জাবি পরিবারে।’ আজ সারটা দিন 'গুলজার ময়' ! তাঁর নেশা, তাঁর আবেশ! রইল তাঁর জীবনের কিছু 'লমহা'...
গুলজার সাহেব ‘পান্তা ভাতে’-তে সঞ্জীবকুমার ওরফে হরি–র সঙ্গে নিজের হৃদ্যতার কথা লিখতে গিয়ে লিখেছেন -- একবার এক পার্টিতে পৌঁছতে তাঁর দেরি হয়েছিল। সঞ্জীবকুমার-কে বলেছিলেন, শুটিং ছিল, তাই দেরি হল। গুলজারের ‘মৌসম’, ‘আঁধী’, ‘কোশিশ’, ‘নমকীন’ ছবির হিরো হরি বলেছিলেন, '' তা কী করে হয়! আমি অভিনয় করছি না মানে তোর সিনেমাও হচ্ছে না। আমি ছাড়া তোর আবার কীসের সিনেমা! '' গুলজার লেখাটা শেষ করছেন এই বলে— ''আমি কেমন মানুষ, যে হরি চলে যাওয়ার পরেও সিনেমা করতে পারলাম? ''
advertisement
‘বাঙালি স্ত্রী’ ওরফে রাখি গুলজার-কে প্রেমপত্র লিখতে গিয়েই নাকি গুলজারের বাংলা আরও সপ্রতিভ হয়েছিল।
গুলজার-এর কাছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-- ‘সাদা ধুতি আর শার্ট পরা একটা ভীষণ লম্বা লোক মার্সিডিজ চালিয়ে বম্বে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ষাটের দশকে এমন কলার–তোলা বাঙালি দেখা যেত না।’
বিমল রায় তঁকে চিরকাল ‘গোলজার’ বলে ডেকে গিয়েছেন, আর সত্যজিৎ রায় তাঁর নামের ইংরেজি ‘জেড’ অক্ষরটির উচ্চারণে ছিলেন নিখুঁত। একবার, নিউ থিয়েটার্সে শশী কাপুর ও আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন, ‘If we don't have money to spend on it, we have to spend our brain.’ এই মহার্ঘ শিক্ষা বাঙালি কতটা যত্ন করে মনে রেখেছে জানা নেই, কিন্তু মাথায় রেখেছেন গুলজার।
বিমল রায় ভেবেছিলেন কালকূটের ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’ নিয়ে ছবি করবেন। বেশ খানিকটা কাজ হয়েও গিয়েছিল, যুক্ত ছিলেন গুলজারও। ছবিটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। সত্যজিৎ রায় ভেবেছিলেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ হিন্দিতে করবেন। আলোচনা হত গুলজারের সঙ্গে। সেটাও হয়নি।
তথ্যঋণ-- পান্তাভাতে, গুলজার