এরই মাঝে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এহেন আশঙ্কাকে আরও বাড়াচ্ছে ৷ অসমে ডিটেনশন সেন্টারের নয়া ভবনের অনুমোদন দিল কেন্দ্র ৷ ১৬০ কোটি টাকায় অসমের গোলপারায় তৈরি হচ্ছে দেশের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প। এর জন্য কেন্দ্র দিয়েছে ১২৮ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, সন্দেহজনক ভোটারদের রাখা যাবে ওই ভবনে ৷ নয়া ভবনে প্রায় ৩ হাজার সন্দেহজনক ভোটারকে রাখা যাবে ৷
advertisement
বর্তমানে অসমে ৬ জায়গায় ডিটেনশন সেন্টার আছে ৷ চুড়ান্ত খসড়ার দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশের পর বর্তমানে অসমে সন্দেহজনক ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৷ নাগরিকপঞ্জী বিতর্কের পর কী এবার দুনিয়ার বৃহত্তম ডিটেনশন সেন্টারে পরিণত হতে চলেছে অসম? নাগরিকপঞ্জীতে পরিচয় হারানো মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ কী? পরিকল্পনার ব্লু-প্রিন্ট অনেকটাই স্পষ্ট হচ্ছে কেন্দ্রের ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির নয়া সিদ্ধান্তে ৷
বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের প্রথমে দণ্ডকারণ্য ও পরে মরিচঝাঁচিতে পাঠায় তৎকালীন বাম সরকার। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস মরিচঝাঁপি। তাই কার্যত ফিরিয়ে আনার সওয়াল।
কিছু মানুষকে দাগিয়ে দিয়ে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো। সিরিয়া, ইরান, ইরান থেকে কঙ্গোয় এমন ঘটনা থেকেই শুরু হয়েছিল গৃহযুদ্ধের । বছরের পর পর বছরেও আগুন নেভেনি। গুয়ানতানামো বে’তেও একই কৌশল নেয় মার্কিন প্রশাসন। একদিন আগে এমন আশঙ্কার সুরই শোনা যায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় ৷
৪০ লক্ষ মানুষ নাগরিকত্ব নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায়। ডি - ভোটার অর্থাৎ সন্দেহের তালিকায় থাকা ভোটারদের পরিণতি কী? রাজ্যে বর্তমানে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ডি-ভোটার রয়েছে ৷ গত ৯ মাসে একাধিক শুনানি নির্বাচন কমিশনের ৷ তবে তাদের তালিকাভুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি ৷
আরও পড়ুন
অসম NRC: বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষের কাছে ফের নাম তোলার ‘সুযোগ’!
আফগানিস্তান, ইরাক বা সিরিয়ার মতো গৃহযুদ্ধ নেই। অথচ, কলমের খোঁচায় আচমকাই নাগরিকত্ব হারানোর মুখে ৪০ লক্ষ মানুষ। অসমের খসড়া নাগরিকপঞ্জি-তে চল্লিশ লাখ মানুষের নামের পাশে লালকালির দাগ। কার্যত রাতারাতি ভারতীয় নাগরিকত্ব হারানোর পথে তাঁরা। নাগরিক পঞ্জিতে নাম তোলার জন্য আবেদন করেন ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষ ৷ তালিকায় প্রকাশিত হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম ৷ কার্যত রাতারাতি উদ্বাস্তু ৪০ লক্ষ মানুষ ৷
আরও পড়ুন
অসম NRC নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ, জানেন কী এই NRC?
অনুপ্রবেশকারীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে রাজ্যের ডিটেনশন সেন্টারগুলো। গোলপারায় বৃহত্তম সেন্টার তৈরি হলেও আরও ৮ হাজার মানুষকে রাখা যাবে। কিন্তু সংখ্যাটা যখন ৪০ লক্ষ? তখন ফের ঘিরে আসছে আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তার মেঘ ৷
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি আশ্বাস দিচ্ছেন, আবারও নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ মিলবে। কিন্তু তার আগেই যদি পরিণতি ঠিক হয়ে যায়? ৪০ লক্ষ মানুষের সঙ্গী এবার সেই আশঙ্কাও।