বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে তাপমাত্রা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় চা গাছের সহনশীলতা কমে যাচ্ছে, মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইন্দ্রজিৎ রায় চৌধুরীর মতে, “টেম্পারেচারের বৃদ্ধি চা উৎপাদনের জন্য মারাত্মক। এতে শুধু গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, চায়ের মানও নষ্ট হচ্ছে।”
advertisement
একই সুর শোনা গেল নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ টি সাইন্স-এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. চন্দ্রা ঘোষের কণ্ঠেও। তিনি জানান, “গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাবে শুধু গুণগত মানই নয়, দার্জিলিং চায়ের আন্তর্জাতিক চাহিদাও হ্রাস পাচ্ছে।”
চা শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তিরাও সমস্যার গভীরতা অনুভব করছেন। রেড ব্যাঙ্ক ও সুরেন্দ্রনগর টি এস্টেটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুশীল কুমার পাল জানান, ‘‘আগে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করে সহজেই উৎপাদন বজায় রাখা যেত, এখন তা কার্যকর হচ্ছে না। এর ফলে বাগান মালিকদের উৎপাদনে মারাত্মক বেগ পেতে হচ্ছে।’’
চা বাগান কর্মীরা জানাচ্ছেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ধরন বদলেছে। কখনও অতিরিক্ত বৃষ্টি, কখনও দীর্ঘ খরা, চা গাছের বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক চক্র ভেঙে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে, বিশ্ববিখ্যাত দার্জিলিং চা আজ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এক অসম লড়াই চালাচ্ছে।
পাহাড়ের ঢালে যে চা পাতার গন্ধ একসময় কবিদের অনুপ্রেরণা দিত, সেটি যদি এভাবে হারিয়ে যায়, তবে শুধু অর্থনীতিই নয়, হারাবে এক অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও।