গত সোমবার সন্ধ্যায় শক্তিগড়ের হীরাগাছি এলাকার একটি মাঠ থেকে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও শক্তিগড় থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধারের পাশাপশি কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত, খুনের পিছনে কারণ কী, তা জানতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে মৃত যুবকের ব্যাগ, চটি উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় খুনের জন্য ব্যবহৃত কুড়ুলও।
advertisement
আরও পড়ুন: স্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ স্বামীর ! মামলা গেল আদালতে
এই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তকে কালনা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম পিন্টু ওরফে রাখি মুর্মু। খুন করার পর সে এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছিল।জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ধৃতকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত যুবকের নাম তন্ময় মালি। বয়স ২০বছর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবক স্থানীয় ঘোষপাড়ার বাসিন্দা। সে আইটিআই পাস করে লিলুয়ায় চাকরি করছিল। সোমবারই বাড়ি ফিরেছিল তন্ময়। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টা নাগাদ তন্ময় মালির ক্ষতবিক্ষত দেহ মাঠে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। শক্তিগড় থানায় খবর দেওয়া হয়। এ দিকে খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুলের পিছনে ওটা কী? সামনে যেতেই হাড়হিম দৃশ্য! রক্তাক্ত রহস্য
জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘খুনের পরেই পিন্টু ওরফে রাখী এলাকা থেকে পালিয়ে ট্রেন ধরে শক্তিগড়ে নামে। সেখান থেকে ব্যান্ডেল হয়ে কালনায় আসে। পুলিশ তার মোবাইল নেটওয়ার্ক ধরেই তাকে গ্রেফতার করেছে।’
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছোট থেকেই গ্রামের ছেলে তন্ময়ের সঙ্গে পিন্টুর ভাল সম্পর্ক ছিল। দু’ জনে যেখানেই যেত, একসঙ্গেই থাকত। বছর খানেক আগে তন্ময়ের বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তির পরে তার মা বাপের বাড়ি চন্দননগরে চলে যান। মায়ের কাছে থাকলেও সপ্তাহে দু-তিন করে হীরাগাছির বাড়িতে আসত তন্ময়। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে কাজের সন্ধান পেয়ে সেখানে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিল আইটিআই পড়ুয়া তন্ময়। ট্রেনের টিকিট কাটতেও গিয়েছিল সোমবার। টিকিট না পাওয়ায় বাড়ি ফিরে আসে।
বন্ধুকে পাকাপাকিভাবে ছেড়ে থাকতে হবে সেটা ভেবেই হীরাগাছির গ্রামের রাস্তার ইটভাটার ফাঁকা মাঠে আগে থেকে রাখা কুড়ুল দিয়ে পিন্টু প্রথমে তন্ময়কে আঘাত করে। পরে গলায় কোপ মারে। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা কুড়ুলও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।