তিনি আরও বলেছিলেন , ‘যা হয়েছে ভালো হয়েছে, পাপী মারা গেছে ৷ ’ এদিকে বিকাশের মা সরলা দেবী-কে পুলিশ যোগাযোগ করলে তাঁর পক্ষ থেকে জানানো হয় তিনিও ছেলের মৃতদেহ নিতে চান না ৷
এদিকে বিকাশের গাড়ি উল্টে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয় সামেন গরুর পাল এসে যাওয়ায় হঠাৎ গাড়ি থামাতে যাওয়ার চেষ্টাতেই উল্টে যায় গাড়ি ৷ এই বিবৃতি জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ এসটিএফ ৷ এসটিএফ নিজেদের বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে তারা বিকাশ দুবেকে জ্যান্তই গ্রেফতার করে কানপুরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল , কিন্তু খতরনাক বিকাশের ফায়ারিংয়ের উত্তর দিতে গিয়েই তার মৃত্যু হয় ৷
advertisement
বিকাশ দুবের এনকাউন্টারের পরে কানপুরের বিকরু গ্রামে লোক একে অপরকে মিষ্টি খাওয়ায় ৷ তাঁদের পরিষ্কার কথা ছিল তাঁদের পুরো এলাকা দারুণ খুশি, বিকাশের মারা যাওয়ায় ৷ গ্রামবাসীদের সাফ কথা এবার তারা স্বাধীন হয়ে গেলেন ৷ একটা আতঙ্কের যুগের শেষ হল এই বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে মারা যাওয়ায় ৷
এদিকে এর আগে
ছেলের নক্কারজনক কাজকর্মের কথা জেনেছে গোটা দেশ ৷ লম্বা সময় ধরে এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠা বিকাশ দুবের কার্যকলাপ সকলের মুখে মুখে ঘুরছে ৷ শুক্রবার উজ্জয়িনী থেকে কানপুর ফেরার পথে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের ৷ এরপরেই বিকাশ দুবের মা সরলা দেবী ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন ৷ মিডিয়ার শত আহ্বানেও কোনও সাড়া দেননি ৷ জানিয়ে দেওয়া হয় সরলা দেবীর শরীর খারাপ হওয়ায় তিনি ঘরে শুয়ে আছেন ৷
সরলা দেবী পুলিশের সঙ্গে কানপুর যেতেও অস্বীকার করেছেন , তিনি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি লখনউতেই ঠিক আছেন ৷ পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন ছেলের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ ছিল না ৷ এর আগে পুলিশ যখন বিকাশ দুবেকে ধরেছিল তখন তিনি বলেছিলেন , পুলিশ যা ঠিক মনে করবে সেটাই করবে ৷ ’
গ্যাংস্টার বিকাশের মৃত্যুর পর তার বাড়ির কোন সদস্যই হাসপাতালে পৌঁছয়নি ৷ বিকাশের বাবা কানপুরেই আছে ৷ তাই পোস্টমর্টেমের পর তার হাতেও দেহ তুলে দেওয়ার কথা ৷ কৃষ্ণানগরে বিকাশের বাড়ির বাইরে পুলিশের বড় দল মোতায়েন করা আছে ৷
হিস্ট্রি শিটার বিকাশ দুবে ২০০১ সালে দায়ের হওয়া রাজ্যমন্ত্রী সন্তোষ শুক্লার মৃত্যুর মূল অভিযুক্ত ছিল সে, ২০০০ সালে কানপুরের শিবলী থানার নারাচন্দ কলেজের সহায়ক প্রবন্ধক সিদ্ধেশ্বর পাণ্ডেয় হত্যায় সেই অভিযুক্ত ছিল ৷ কানপুরের শিবালী থানায় ২০০০ সালে রামবাবু যাদবের হত্যার প্ল্যানিং বিকাশ জেলের ভিতরে থেকে করেছিল ৷
২০০৪ সালে কেবল ব্যবসায়ী দীনেশ দুবের হত্যার আরোপও তার বিরুদ্ধে ছিল ৷ ২০০১ সালে কানপুর দেহাতের শিবলী থানার ভিতরে ঢুকে সে সময়ের রাজ্যমন্ত্রীদের গুলি করে ভরিয়ে দিয়েছিল ৷ কিন্তু কোনও সাক্ষ্য না পাওয়া যাওয়ায় এই কেস থেকে মুক্ত হয়ে যায় সে ৷
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ৮ জনকে এনকাউন্টারে মারার মূল অভিযুক্ত বিকাশ দুবে শুক্রবার সকালে কানপুরের কাছেই মারা যায়৷ উত্তরপ্রদেশের এসটিএফ -র গাড়ি উল্টে যাওয়ার পর সে এক পুলিশের পিস্তল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ৷সে সময় তাকে আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হয় ৷ কিন্তু গ্যাংস্টার দুবে সে সময় পুলিশের ওপর গুলি চালাতে শুরু করেছিল ৷ পুলিশের পাল্টা ফায়ারিংয়ে সে মারা যায় ৷
এরপর বিকাশ দুবের দেহ হৈলট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় , সেখানেই তার পোস্টমর্টেম করা হয় ৷ কিন্তু এরপর যখন শবদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয় তখন বিকাশের পরিবার তাঁদের খুনী ছেলের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করে ৷ পুলিশ বিকাশ দুবের বউকে ডেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করেছিল ৷ কানপুর এনকাউন্টারে তার কোনও যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছিল ৷ তবে এই জেরায় তাঁকে নির্দোষ পাওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ এই জেরার সময় বিকাশের স্ত্রী-র সঙ্গে তাঁর নাবালক পুত্র সন্তানও ছিল ৷