সিঁথি থানায় ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউকে মারধর ও ইলেকট্রিক শক দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গুরুতর এই অভিযোগে জোরদার তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান ও বর্তমানে অতিরিক্ত কমিশনার দময়ন্তী সেনকে।
কিন্তু তদন্তের শুরুতেই ধাক্কা খেতে হল তদন্তকারীদের। কারণ, যে ঘরে গোটা ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ সেখানে নেই কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা। অর্থাৎ যে গুরুতর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে তার প্রত্যক্ষ কোনও প্রমাণ নেই। তাহলে কী হয়েছিল সেই ঘরে ? কী কারণে মৃত্যু হল রাজকুমারের তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। এই অবস্থায় তদন্তকারীদের কাছে একমাত্র ভরসা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। কারণ ওই রিপোর্ট বলে দিতে পারে মৃত্য়ুর আসল কারণ। চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও আসেনি।
advertisement
সূত্রের খবর, সোমবার সিঁথি থানার তদন্তকারী অফিসারদের যে ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল রাজকুমারকে সেই ঘরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। সূত্রের দাবি, কোনও থানায় থাকেও না। তদন্তকারী অফিসারেরা সাধারণত এই রকম ঘরেই অভিযুক্তকে জেরা বা তদন্তের প্রয়োজনে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে থাকেন। তাই এ ক্ষেত্রে মারধর বা ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল কিনা তা জানা মুশকিল। রাজকুমারের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, থানার অন্যান্য জায়গায় যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে সেখানে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না ? মৃতের পরিবারের আইনজীবী অর্মত্য় দে বলেন, "আমার মক্কেলকে তদন্তকারী অফিসারদের রুমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ওখানে সিসিটিভি থাকে না। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। ওই রিপোর্ট হাতে পেলেই স্পষ্ট হবে কী হয়েছিল।"
যদিও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনও পৌঁছয়নি তদন্তকারীদের হাতেও। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত হলেও যেহেতু পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাই এক্ষেত্রে প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশকে জানানো হয়নি। কাস্টডিয়াল ডেথের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে ময়নাতদন্তের সময় পুলিশকে রাখা হয়নি। তিনজন ডাক্তারের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়েছে। কী ভাবে মৃত্যু সে ব্যাপারে তিন ডাক্তার সম্মত হওয়ার পর চূড়ান্ত রিপোর্ট পাঠানো হবে। সেই রিপোর্টের উপরেই ভাগ্য নির্ভর করছে অভিযুক্ত অফিসারদের।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত তিন অফিসারকে ইতিমধ্যেই ক্লোজ করা হয়েছে। তদন্তে মারধরের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে লালবাজার। বুধবার শিয়ালদহ আদালতে অভিযোগকারী সহ চার সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের সঙ্গে কথাও বলেছেন তদন্তকারীরা।
Sujoy Pal