বীরভূমের দুই জমি ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাওয়া হয়েছিল ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ। তাঁদের একজনের বাড়ি সাঁইথিয়া এলাকায় ও অপর ব্যাক্তির বাড়ি বীরভূমেরই লাভপুর এলাকায়। সাঁইথিয়া এলাকার অপহৃত ব্যক্তির নাম জীবন কৃষ্ণ গঁড়াই। বয়স প্রায় ৫৩ বছর । তাঁর বাড়ি সাঁইথিয়া থানা এলাকার চক মহেশপুর গ্রামে। শনিবার সকাল ৮ টার সময় ডাক্তার দেখানোর জন্য ভাড়া গাড়িতে করে বের হন বোলপুরের উদ্দেশ্যে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন লাভপুরের আনাই শেখ।
advertisement
আরও পড়ুন: মেসেজ আসে 'মানিক যা তা ভাবে টাকা তুলছে', চাকরি বিক্রির 'ভাগ' নিয়ে রাগ হয়েছিল পার্থর: ইডি
এর পর দুপুর ২:১৫ নাগাদ ফোন আসে সাঁইথিয়ার অপহৃত ব্যক্তির ছেলে অনুপ গঁড়াইয়ের কাছে। ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। দু'টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেয় অপহরণকারীরা। বিকেলে ২ লক্ষ টাকা তাঁদের একটি অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়। ওই অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম মাধাই মন্ডল। তার ঠিকানা মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। বিকেল নাগাদ নিখোঁজও ফোন করে টাকা দিতে বলে তাঁর বাড়িতে। তারপরই গোটা বিষয়টি জানানো হয় সাঁইথিয়া থানায়।
আরও পড়ুন: তেল নয়, জল দিলেই জ্বলছে প্রদীপ! আশ্চর্য আবিষ্কার বাংলায়
পুলিশের তৎপরতায় অপহৃতদের উদ্ধার করা হয় গভীর রাতেই মুর্শিদাবাদের সালারের কাকগ্রাম থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, অপহৃতরা জমি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ক্রেতা সেজে আগেই এই দুষ্কৃতীরা এই জমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। যে অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণের ২ লক্ষ টাকা ঢুকেছিল সেই অ্যাকাউন্ট আগেই ফ্রিজ করেছিল বীরভূম জেলা পুলিশ । অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে চার সদস্যের পুলিশ টিম রাতেই রওনা দেয় সালারের কাকগ্রামের উদ্দেশ্যে। তাতে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার অভিষেক রায়, সি আই সদর কিশোর সিনহা , সাঁইথিয়া থানার ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত, রাজনগর থানার ওসি দেবাশিস পন্ডিত , নানুর থানার ওসি মিকাইল সেখ।
তাঁরা মুর্শিদাবাদের সালারের কাকগ্রামে গভীর রাতে পৌঁছে সেখানে একটি পাকা বাড়ি ঘিরে ফেলেন। সঙ্গে ছিল সালার থানার পুলিশও। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় অপহৃতরা। সেখান থেকেই গ্রেফতার পাঁচ দুষ্কৃতী। তাদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী, তার নাম আব্দুল হান্নান। তার বাড়ি বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার মাটপলশাতে। সাঁইথিয়ার অপহৃত ব্যক্তি জীবন কৃষ্ণ গঁড়াই-এর জামাই স্বপন মন্ডল বলেন , " লিভারের সমস্যা ছিল শ্বশুরের । তাই ডাক্তার দেখাতে বোলপুর যাচ্ছিলেন । কিন্তু কিচ্ছুক্ষণ পরই ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে আমার শ্যালকের কাছে। এমনকী বিকেল বেলায় আমার শ্বশুরও ফোনে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে দিতে বলেন। সেই সময় আমার শ্যালক আমায় ফোনে না পেয়ে ওদের পাঠানো অ্যাকাউন্টে ২ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমায় বললে আমরা সাঁইথিয়া থানায় জানাই। সারারাত পুলিশের খোঁজাখুঁজিতে ভোরবেলায় শেষমেশ বাড়ি আসেন আমার শ্বশুর। "
রবিবার ধৃত দুষ্কৃতিদের সিউড়ি আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল লোকেশান ট্র্যাক করেই অপরাধীদের ধরা হয়েছে।