TRENDING:

পোস্ট অফিসের ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিমের বিকল্প নেই, ব্যাঙ্কের তুলনায় কোথায় ভাল দেখে নিন

Last Updated:

যেহেতু সরকার এই সঞ্চয় প্রকল্পগুলোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করে তাই টাকা থাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। মেয়াদ শেষে রিটার্ন নিশ্চিত।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে একাধিক স্মল সেভিংস স্কিম নিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে পিপিএফ, ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (এনএসসি), সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম (এসসিএসএস), পোস্ট অফিস রিকারিং ডিপোজিট, ৫ বছরের টাইম ডিপোজিট এবং সুকন্যা সমৃদ্ধি স্কিম অন্যতম। যেহেতু সরকার এই সঞ্চয় প্রকল্পগুলোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করে তাই টাকা থাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। মেয়াদ শেষে রিটার্ন নিশ্চিত।
advertisement

২০২১-২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে কেন্দ্রীয় সরকার ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট, পাবলিক পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের মতো প্রকল্পগুলিতে সুদের হার কমানোর আদেশ প্রত্যাহার করেছে। ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে গণনা করা হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বৃহস্পতিবার একটি ট্যুইটে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হার ২০২০-২১ অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিকের (জানুয়ারি-মার্চ) মতোই থাকবে। অর্থাৎ সুদের হারে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। এখানে কয়েকটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের হদিশ দেওয়া হল, এখানে টাকা রাখলে লাভবান হওয়া সম্ভব।

advertisement

ট্যাক্স সেভিংস বেনিফিট: ন্যূনতম ঝুঁকিতে যাঁরা ট্যাক্স সেভিংস বিনিয়োগের বিকল্প খুঁজছেন তাঁদের জন্য ট্যাক্স সেভিংস ফিক্সড ডিপোজিট, ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট, সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট স্কিম, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, এবং পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড আদর্শ। এই বিনিয়োগ মাধ্যমগুলির সঙ্গে বাজারের ওঠানামার কোনও সম্পর্ক নেই। ফলে টাকা থাকে নিরাপদ। নির্দিষ্ট হারে সুদ মেলে। ফলে মেয়াদ শেষে নিশ্চিত রিটার্নের গ্যারান্টি থাকে। বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে আয়কর আইনের ৮০সি ধারার অধীনে ট্যাক্স ছাড়ও পাওয়া যায়। বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৫ বছরের ট্যাক্স সেভিং ফিক্সড ডিপোজিটে মাত্র ৫.৪ শতাংশ হারে সুদ দিচ্ছে। কিন্তু পোস্ট অফিসের সেভিংস স্কিমে ট্যাক্স সুবিধার সঙ্গে সুদের হার অনেক বেশি।

advertisement

যেমন পোস্ট অফিসের টাইম ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে ১ থেকে ৩ বছর মেয়াদে ৫.৫ শতাংশ হারে সুদ মিলছে। মেয়াদ ৫ বছরের বেশি হলে সুদের হার ৬.৭ শতাংশ। ন্যূনতম ১০০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করা যায়। বিনিয়োগ করতে হয় ১০০-র গুণিতকে। ১৯৬১-র আয়কর আইনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়।

সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে ৭.৪০ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যাচ্ছে। ১০০০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ১৫ লাখ টাকা। এই স্কিমেও ১৯৬১-র আয়কর আইনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়।

advertisement

পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিপিএফ-এ ১৫ বছরের মেয়াদে ৭.১০ শতাংশ হারে সুদ মিলছে। ৫০০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। বার্ষিক বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ১.৫ লাখ। দেড় লাখ বিনিয়োগের উপর আয়কর আইনের ৮০ সি ধারার অধীনে কর ছাড় পাওয়া যায়।

ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটে বর্তমানে ৬.৮০ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যাচ্ছে। ১০০০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। টাকা রাখতে হয় ১০০-র গুণিতকে। বিনিয়োগের কোনও উর্ধসীমা নেই। ৮০সি ধারার অধীনে আয়কর ছাড় পাওয়া যায়।

advertisement

সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্টে ৭.৬০ শতাংশ হারে সুদ দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। ২৫০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। বার্ষিক বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ১.৫ লাখ। ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ৮০সি ধারার অধীনে আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। পাশাপাশি মেয়াদপূর্তিতে প্রাপ্ত সুদ এবং রিটার্ন করমুক্ত।

প্রত্যাহারের সুবিধা: পোস্ট অফিস, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থায় ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। প্রয়োজনীয় কাজগপত্র পূরণ করে এই সব স্কিমে বিনিয়োগ শুরু বা টাকা তোলা যায়। এসবিআই-এর মতো ব্যাঙ্কগুলোতে অনলাইনেই এই ধরনের স্কিম শুরু করা যায়। এসবিআই ছাড়াও, এইচডিএফসি, অ্যাক্সিস এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মতো ব্যাঙ্ক রয়েছে যা বিনিয়োগকারীদের অনলাইনে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলতে দেয়। অন্যদিকে ফিক্সড ডিপোজিটে অকাল প্রত্যাহার করলে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায় না। পোস্ট অফিসে প্রথম ৬ মাসে এফডি থেকে টাকা তোলাই যায় না। আর ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে তুলে ফেললে পোস্ট অফিসের সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতো সুদ মেলে। বর্তমানে যা ৪ শতাংশের কাছাকাছি।

ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের থেকে বেশি রিটার্ন: পোস্ট অফিসের ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলোতে ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের চেয়ে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়। এসবিআই, আইসিআইসিআই, অ্যাক্সিস, এইচডিএফসি এবং কোটাক মহিন্দ্রার মতো দেশের সেরা ৫টি ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার ২.৫৫ শতাংশ থেকে ৫.৭৫ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হার এর চেয়ে অনেক বেশি। প্রতি ত্রৈমাসিকে আপডেট করা হয়। কিছু প্রকল্পে শুরুতেই সুদের হার লক করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ পরবর্তীকালে হার কমে গেলেও নির্ধারিত হারেই সুদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার পোস্ট অফিসের ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলির তুলনায় কম এবং কর ছাড়ের সুবিধাও এখানে মেলে না।

ফিক্সড ডিপোজিটে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প। কিন্তু ৫ বছরের মেয়াদে ব্যাঙ্ক এফডি-র থেকে পোস্ট অফিস এফডি-র অনেক পার্থক্য। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এফডি-তে ৫.৪ শতাংশ হারে সুদ দিচ্ছে। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে ৫ বছর মেয়াদি এফডি-তে সুদের হার ৫.৫ শতাংশ, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কে সুদের হার ৫.৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে পাঁচ বছর মেয়াদি পোস্ট অফিসের ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে ৬.৭ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যাচ্ছে। আবার পাঁচ বছর মেয়াদি ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটে সুদ মিলছে ৬.৮ শতাংশ হারে। ১৫ বছর মেয়াদি পাবলিক প্রভিডেন্টের ফান্ডের সঙ্গে এফডি-র খুব একটা পার্থক্য নেই। কিন্তু সুদের হার আলাদা। পিপিএফে ৭.১ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়। প্রবীণ নাগরিকরা ব্যাঙ্কে ০.৫ শতাংশ বেশি সুদ পান। তাঁরা ৫ বছরের সিনিয়ার সিটিজেনস সেভিংস স্কিমের সুবিধাও পেতে পারেন। এই স্কিমে ৭.৪ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়। এসসিএসএস পাঁচ বছর মেয়াদি। তবে আরও তিন বছর বাড়ানো যেতে পারে। ট্যাক্স স্ট্যাটাস ব্যাঙ্ক এফডি-র মতোই সরকার পোস্ট অফিস এফডি-র নিশ্চয়তা দেয়। তবে পোস্ট অফিসের স্কিমে নেট ব্যাঙ্কিং কিংবা অনলাইনে বিল পেমেন্টের মতো সুবিধা মিলবে না।

প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধা: গত সপ্তাহে ভারতের দুটি শীর্ষ স্থানীয় ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং এইচডিএফসি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তাদের বিশেষ ফিক্সড ডিপোজিট স্কিমগুলো জুন মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের সিনিয়ার সিটিজেন কেয়ার ফিক্সড ডিপোজিট হল প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ডিজাইন করা বিশেষ এফডি স্কিম। এতে সুদের হার অনেক বেশি। এই স্কিমে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বেশি সুদ দেয়। সিনিয়র সিটিজেন কেয়ার এফডি-এর অধীনে একজন প্রবীণ নাগরিকের করা স্থায়ী আমানতের সুদের হার হবে ৬.২৫ শতাংশ। এই হার ২০ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। খুচরো টিডি বিভাগে, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য একটি বিশেষ এসবিআই ওয়েকেয়ার ডিপোজিট যুক্ত করা হয়েছে, যাতে ৩০ বেসিস পয়েন্টের অতিরিক্ত প্রিমিয়াম (বিদ্যমান ৫০ বেসিস পয়েন্টের উপরে) প্রবীণদের প্রদান করা হবে। তবে এটা শুধুমাত্র ‘৫ বছর এবং তার বেশি' মেয়াদের খুচরো টিডি-র ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ডিপোজিট স্কিম ‘এসবিআই ওয়েকেয়ার’ স্কিমো ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য স্টেট ব্যাঙ্কের বিশেষ ফিক্সড ডিপোজিটে স্কিমে ৮০ বেসিস পয়েন্ট বেশি সুদ পাওয়া যায়। সাধারণ জনগণ ৫.৪ শতাংশ হারে সুদ পান। প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই সুদের হার ৬.২০ শতাংশ। যদিও এই দুটি ব্যাঙ্কের বিশেষ এফডি স্কিমের সময়সীমা জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, তবে কিছু পোস্ট অফিস স্কিম রয়েছে যেমন সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, পোস্ট অফিস মাসিক ইনকাম স্কিম, যা বর্তমানে যথাক্রমে ৭.৪ শতাংশ এবং ৬.৬ শতাংশ উচ্চ হার প্রদান করছে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

পরিশেষে: ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিমগুলোতে ঝুঁকি নেই। উচ্চ সুদের হার এবং নিশ্চিত রিটার্ন মেলে। কিছু স্কিমে করছাড়ও পাওয়া যায়। অবসর, সন্তানের পড়াশোনা, উচ্চশিক্ষা বিয়ের মতো একাধিক আর্থিক লক্ষ্যে পৌঁছতে এই প্রকল্পগুলো বড় হাতিয়ার হতে পারে। এগুলো দীর্ঘ মেয়াদি মূলধন তৈরির জন্য উপযুক্ত। কারণ নির্দিষ্ট লক ইন পিরিয়ড এবং মোটা অঙ্কের রিটার্ন। সরকারি স্কিম হওয়ায় টাকা মার যাবার সম্ভাবনা নেই। সর্বোত্তম পছন্দ বাছাই করতে, বিভিন্ন স্কিমের সুদের হার, ট্যাক্স সুবিধা এবং লক-ইন পিরিয়ড মাথায় রাখতে হবে।

বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
পোস্ট অফিসের ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিমের বিকল্প নেই, ব্যাঙ্কের তুলনায় কোথায় ভাল দেখে নিন
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল