তবে এই দুই ধরনের ঋণেরই কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা দুইই আছে। সুরক্ষিত ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার সাধারণত খুবই কম হয়। আর অসুরক্ষিত ঋণের ক্ষেত্রে উচ্চ হারে সুদ দিতে হয়। এই কারণে ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে বেশি টাকা গুনতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, খুব প্রয়োজন না-হলে ব্যক্তিগত ঋণ নেওয়া উচিত নয়। এই ঋণের জন্য যে কেউ আবেদন করতে পারেন, কিন্তু সকলেই যে এটা পাবেন, এমনটা একেবারেই নয়। যাঁদের বাঁধা বা স্থায়ী চাকরি আছে, প্রথমে তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। কারণ ঋণ ইস্যুকারী ব্যাঙ্ক বা নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলি (এনবিএফসি) প্রথমে যাচাই করে দেখে যে, ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে সক্ষম কি না। যদি তারা মনে করে যে, ঋণ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবে ঋণ গ্রহীতার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
advertisement
ঋণ দেওয়ার আগে এই বিষয়গুলো যাচাই করে নেয় কোম্পানি:
ফিনওয়ে এফএসসির সিইও রচিত চাওলার মতে, নির্দিষ্ট আয় রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের ছাড়া যদি অন্য কাউকে ঋণ দেওয়া হয়, তা-হলে টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। তবে বেতনভোগী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়ার আগেও অনেক বিষয় বিবেচনা করা হয়। এগুলি প্রধানত কোম্পানির উপর নির্ভর করে। এ-ছাড়া ব্যক্তির উপর ঋণ, সিবিল স্কোর, বার্ষিক আয় ইত্যাদিও দেখা হয়।
কোম্পানির সুনাম:
ঋণের আবেদনে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার আগে আবেদনকারীর যোগ্যতা মূল্যায়নের সময়, ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি আবেদনকারীর কোম্পানিও খতিয়ে দেখে। কোম্পানি খুব ছোট হলে অনেক সময় ঋণ প্রত্যাখ্যানের সম্ভাবনা থাকে। একটি ভাল কোম্পানিতে কর্মরত ব্যক্তিরা সহজেই ব্যক্তিগত ঋণ পেতে পারেন।
বকেয়া ঋণ:
বকেয়া ঋণ অর্থ হল ঋণের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির আগে কত ঋণ বাকি আছে, সেই বিষয়টা। যদি তা বাকি থাকে, তা-হলে ব্যাঙ্ক মনে করতে পারে যে, একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হবে এবং এমন পরিস্থিতিতে ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কম। বিপরীতে, যদি কারও কাছে ইতিমধ্যে কোনও ঋণ বকেয়া না-থাকে, তবে সেই ব্যক্তি সহজেই ঋণ মিটিয়ে দিতে পারবেন বলে মনে করে ব্যাঙ্ক।
সিবিল স্কোর:
ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (ইন্ডিয়া) লিমিটেড (সিআইবিআইএল) হল একটি ক্রেডিট রেটিং ফার্ম, যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৪০০-রও বেশি। এর মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনবিএফসি, ব্যাঙ্ক এবং হোম ফিনান্সিং ব্যবসা অন্তর্ভুক্ত। এটি ৫৫০ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহক এবং সংস্থার ক্রেডিট ইতিহাস পরিচালনা করে। যদিও সিবিল কোনও ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসিকে ঋণ দিতে বা না-দিতে বলে, তবে সেটা ঋণগ্রহীতার অবস্থা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়।
বার্ষিক আয়:
স্পষ্টতই, যদি এক জন ব্যক্তি ভাল উপার্জন করেন এবং ব্যক্তিগত ঋণ সহজে পরিশোধ করার ক্ষমতা রাখেন, তা-হলে তিনি সহজেই ঋণ পেয়ে থাকেন। এই কারণে কোম্পানিগুলি অবশ্যই ব্যক্তির বার্ষিক আয়ের উপরে নজর দেয়।
ঋণের জন্য কত বার আবেদন:
ব্যাঙ্ক অথবা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ অনুমোদনের আগে সেই ব্যক্তির আর্থিক ইতিহাসও বিবেচনা করে থাকে। যদি কেউ বারবার ঋণ নেন, তা-হলে সেই ব্যক্তির বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠান মনে করে যে, ঋণগ্রহীতার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়।