আরও পড়ুন: ট্রেন বাতিল হলে কী ভাবে ফেরত পাবেন টিকিটের টাকা, জেনে নিন ....
প্রত্যেক দেশবাসী যাতে মাথার উপর ছাদ পান, তার জন্য ১৯৯০-এর দশক থেকেই নানা প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্র। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ১৯৯০ সালে ইন্দিরা আবাস যোজনা বা ২০০৯ সালে রাজীব আবাস যোজনার কথা। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের ১ জুন থেকে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা পিএমএওয়াই। এই প্রকল্পের আওতায় ভারতের গ্রাম এবং শহরের যে কোনও দুঃস্থ নাগরিক যদি প্রথম বারের জন্য বাড়ি কেনে বা তৈরি করতে যায়, তা হলে লোনের উপর ২.৬৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি লোন শোধ করার জন্য ২০ বছরের লম্বা সময় দেওয়া হয়, যাতে তাঁদের উপরে বাড়তি চাপ না-পড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন: মাত্র একবার প্রিমিয়াম দিয়ে সারাজীবন প্রতি মাসে পেয়ে যাবেন ১২০০০ টাকা !
বছরে যাঁদের ৩ লক্ষ টাকা বা তার কম আয়, তাঁদের ইডব্লিউএস বা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বিভাগ হিসেবে ধরা হয়। আর বছরে যাঁরা ৬ লক্ষ টাকা বা তার কম আয় করেন, তাঁদের নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি ক্যাটেগরিতে ধরা হয়। এই দুই ক্যাটেগরির মানুষই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ৬ লক্ষ টাকার লোনে ৬.৫০ শতাংশ সুদে ভর্তুকির সুবিধা পেতে পারেন। যাঁদের বার্ষিক আয় ৬ থেকে ১২ লক্ষ টাকা, তাঁদের ২০ বছরের জন্য ৯ লক্ষ টাকা লোনের সুদে ৪ শতাংশ সাবসিডি বা ভর্তুকি দিচ্ছে কেন্দ্র। হোম লোনের সুদ প্রায় ৯ শতাংশ৷ কিন্তু যে হেতু কেন্দ্র ৪ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে, তাই এই প্রকল্পের আওতায় গ্রাহককে বাকি মাত্র ৫ শতাংশ মেটাতে হয়।
আরও পড়ুন: সুখবর! সস্তায় বাড়ি কেনার সুযোগ দিচ্ছে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, দেখে নিন কী করতে হবে.....
তবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবেদন করতে গেলে কয়েকটি শর্ত রয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেই শর্তগুলি--
- এই প্রকল্পের জন্য একমাত্র সেই সমস্ত ব্যক্তি নির্বাচিত হবেন, যাঁদের বাস করার জন্য বাড়ি নেই অথবা যাঁদের কাঁচা বাড়ি রয়েছে।
- এই প্রকল্পের জন্য অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বিভাগ বা ইডব্লিউএস বা EWS (বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ টাকা বা তার কম) অথবা নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি বা LIG (বার্ষিক আয় ৬ লক্ষ টাকা বা তার কম) বিভাগের যে কোনও একটির অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
- আবেদনকারী যদি আগে কখনও ভারত সরকারের কোনও প্রকার হাউজিং স্কিমের আওতায় (সে কেন্দ্র হোক বা রাজ্য) সরকারি সাহায্য লাভ করে থাকেন, তা হলে তিনি আবেদন করতে পারবেন না।
- সম্পত্তির অবস্থানটি ২০১১ জনগণনা অনুসারে এবং সংলগ্ন প্ল্যানিং অঞ্চলের (সরকারের দ্বারা নির্ধারিত) সকল বিধিবদ্ধ শহরতলির মধ্যে হতে হবে।
- পরিবারের কেউ সরকারি কর্মচারি হলে আবেদন করা যাবে না।
- প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পর ৩৬ মাসের মধ্যে যদি ঘর সম্পূর্ণ না-হয়, তা হলে পরবর্তী কিস্তির টাকা মিলবে না।
- যে কোনও রাজ্য বা যে কোনও শহর অথবা গ্রাম থেকেই আবেদন করা যাবে। তবে সেই গ্রাম বা শহরের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- সরাসরি ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্টে বাড়ির জন্য আর্থিক সহায়তার টাকা ঢুকবে।
- বাড়ি তৈরি হবে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে যাতে বাড়ি সুরক্ষিত থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা হয়।
- প্রায় ২৫ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে বাড়ি তৈরি করার সুযোগ রয়েছে।
- এই প্রকল্পের অধীনে নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিকে শৌচালয় তৈরির জন্য অতিরিক্ত ১২ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য করে কেন্দ্র।
- এই প্রকল্পের আওতায় পরিবারের মহিলার নামে বাড়ি করতে চাইলে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
- একটি পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক উপার্জনকারী সদস্যদের একটি পৃথক পরিবার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ফলে কোনও যৌথ পরিবারের বিবাহিত ২ ভাই আলাদা আলাদা ভাবে এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
- এসসি (SC), এসটি (ST) এবং ওবিসি (OBC) শ্রেণির মানুষজন এবং ইডব্লিউএস (EWS) ও এলআইজি (LIG)-র অন্তর্ভুক্ত মহিলারাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PMAY) সুবিধা গ্রহণের জন্য যোগ্য।
যাঁরা অর্থের অভাবে নিজের বাড়ি তৈরি করতে পারছেন না, তাঁরাও এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে পারবেন। এই প্রকল্পের আরও একটি সুবিধে হল, বাড়ি মেরামতির জন্য ৩ শতাংশ সুদের হারে লোন পাওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। এ জন্য অনলাইনেই আবেদন করা যায়।