লে চকোলেট বক্স
লেক ফরেস্ট কনফেকশনস এবং সাইমন জুয়েলার্সের লে চকোলেট বক্স হল বিশ্বের সবথেকে দামি চকোলেট। যার এক বাক্সের মূল্যই ১৫ লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটির টাকারও বেশি। কিন্তু কেন এমন দাম? দুর্দান্ত স্বাদ তো বটেই, তার সঙ্গে চকোলেটের বাক্সে থাকে আরও কিছু চমক। আসলে মিসৌরির সেন্ট লুইসের সাইমন জুয়েলার্সের মালিক সাইমন কাটজ-এর বিলাসবহুল সামগ্রীর ব্যক্তিগত কালেকশন থেকে কিছু অলঙ্কারও থাকে এই চকোলেটের বাক্সে। কিন্তু কেমন ধরনের গয়না থাকে ওই বাক্সে? জানা গিয়েছে যে, দুর্মূল্য চকোলেটের বাক্সে থাকে হলুদ ও নীল হিরে, পান্না, নীলা এবং আরও নানা মূল্যবান পাথরখচিত কানের দুল, নেকলেস, ব্রেসলেট এবং আংটি।
advertisement
আরও পড়ুন: ক্ষণিকের জন্য হলেও সোনার দামে স্বস্তি, ঠিক কততে এসে থেমেছে আজকের বাজারদর?
ফ্রোজেন হট চকোলেট
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সেরেনডিপিটি ৩-এর সিগনেচার ফ্রোজেন হট চকোলেটের হাই-এন্ড ভার্সন। যার মূল্য ২৫ হাজার ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ২০ লক্ষ টাকার উপরে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর তথ্য বলছে, বিশ্বের সবথেকে দামি ডেজার্ট হিসেবে পরিচিত এটি। আর দামের কারণ লুকিয়ে আছে এই ডেজার্টের ডেকোরেশনেই। রীতিমতো স্বর্ণখচিত এই চকোলেট। শোনা যায়, ফ্রোজেন হট চকোলেট সাজাতে ব্যবহার করা হয় ৫ গ্রাম ভোজ্য ২৩ ক্যারাটের সোনা। এর সঙ্গেই পরিবেশন করা হয় ১৮ ক্যারাটের একটি সোনার ব্রেসলেট এবং ১ ক্যারাটের সাদা হিরে। এটা গ্রাহক নিজের কাছে রেখে দিতে পারেন।
গোল্ডেন স্পেকলড চকোলেট এগ
বিশ্বের তৃতীয় মূল্যবান চকোলেটের হাতে রয়েছে আবার এক্সক্লুসিভ রেকর্ড। অলঙ্কারবিহীন এই মূল্যবান চকোলেট এগ বিক্রি হয়েছে একটি নিলামে। যার ওজন ছিল ১১০ পাউন্ডেরও বেশি। বিশ্বের সবথেকে দামি এই চকোলেট এগের নাম দেওয়া হয়েছে গোল্ডেন স্পেকলড এগ। এটি বিক্রি হয়েছে ১১ হাজার ১০৭ ডলারে। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ৯ লক্ষ টাকার উপরে। ব্রিটেন এবং জাপানের মোট ৭ চকোলেট প্রস্তুতকারী সংস্থা এটি বানিয়েছে। ডিমের আকৃতির এই চকোলেট বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে আমাদেই চকোলেট, ভোজ্য সোনার পাতা এবং ক্যুচর চকোলেট ফিলিং।
আরও পড়ুন: ফের বদল জ্বালানি তেলের দামে! কলকাতায় আজ কত হল দেখুন
স্যোয়ারভস্কি স্টাডেড চকোলেট
২০০৮ সালে এই চকোলেট লঞ্চ করেছিল হ্যারড। এর দাম ছিল ১০ হাজার ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ৮ লক্ষ টাকার উপরে। এক্সক্লুসিভ উপায়ে ডিজাইন করা এই প্যাকেজ তৈরি করেছিল লেবানিজ চকোলেট প্রস্তুতকারী প্যাচি। স্যোয়ারভস্কি স্টাডেড চকোলেটের বাক্সে থাকে ৪৯টি চকোলেট। যা ভারতীয় সিল্কের কাপড় দিয়ে মোড়া হয়। আর তার উপর স্যোয়ারভস্কি স্ফটিক খচিত থাকে। শুধু তা-ই নয়, এর প্যাকেজিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় আসল চামড়া এবং হাতে বোনা সিল্ক।
ক্যাডবেরি উইস্পা গোল্ড চকোলেট বার
ক্যাডবেরির কথা কে না-জানেন। ১৯৯৫ সালে বিখ্যাত এই চকোলেট সংস্থা উইস্পা গোল্ড বার ফের লঞ্চ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইভেন্টে প্রচারের জন্য স্পেশাল উইস্পা গোল্ড বার তৈরি করে, যার মূল্য ছিল ১৬০০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ১ লক্ষ টাকার উপরে। এটি তৈরি করা হয়েছিল মাদাগাস্কারের প্রিমিয়াম কোকো বিনস থেকে। আর চকোলেট বারটি মুড়তে ব্যবহার করা হয়েছে ভোজ্য সোনার পাতা।
অ্যান্টিক সুইস স্বর্ণমুদ্রা-সহ ডেল্যাফি গোল্ড চকোলেট বক্স
এই বাক্সে থাকে আটটি চকোলেট। আর তা হাইলাইট করার জন্য ব্যবহার করা হয় ২৪ ক্যারাটের ভোজ্য সোনা। শুধু তা-ই নয়, চকোলেটের এই বাক্সটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এর মধ্যে দেওয়া হয় একটি আসল সুইস স্বর্ণমুদ্রা। যা ১৯১০ থেকে ১৯২০ সালের। এর মূল্য ৫১৭ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ৪২ হাজার ৭১৮ টাকা। যদিও প্রস্তুতকারীরা স্বীকার করেছেন যে, ভোজ্য সোনার তেমন স্বাদ নেই। তবে এটা ডার্ক চকোলেটের উপর একটা উষ্ণ ছোঁয়া আনে। আর দেখতেও বেশ ভাল লাগে।
আর্ট সিরিজ গুআয়্যাস্যামিন
ইক্যুয়েডরের চকোলেট প্রস্তুতকারী টোয়াকই এই আর্ট সিরিজটি তৈরি করেছে। ফলে নিজেদের এই সৃষ্টিকে তাঁরা ব্যয়বহুল বলতে নারাজ। বরং তাঁরা এটাকে মহার্ঘ্য হিসেবেই দেখতে চান। এই চকোলেটের ৫০ গ্রামের দাম ৪৫০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ৩৭ হাজার ১৭৮ টাকা। এই চকোলেট এক লহমায় তৈরি হয় না। বিরল প্রজাতির ক্যাকাও বিনসকে তিন বছর ধরে রাখা হয় ফ্রেঞ্চ ওক কনিয়াক কেসের মধ্যে। এর ফলস্বরূপ হাতে আসে ৭৭ শতাংশ ক্যাকাও বিনস-সহ ইক্যুয়েডোরিয়ান ডার্ক চকোলেট। অর্ডার করলে ছয় সপ্তাহ পরে সেটা হাতে আসে। আর এত সময়ের অপেক্ষার কষ্ট এটা মুখে দিলে এক নিমেষেই দূর হয়ে যায়, তেমনটাই অন্তত বলে থাকেন বিশ্বের ধনকুবের চকোলেটপ্রেমীরা।