কত টাকার তহবিল গড়লে অবসরকাল দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারে? এর কোনও নির্দিষ্ট হিসাব নেই। এটা মূলত চাহিদা ও জীবনযাত্রার উপর নির্ভর করে। যেমন পরের বছরই অবসর নেবেন এমন এক ব্যক্তি ১.৫ কোটি টাকা সঞ্চয় করেছেন। আলাদা বিনিয়োগে আরও ৫০ লক্ষ টাকা রয়েছে। তবে কোম্পানির থেকে তিনি কোনও পেনশন পাবেন না। নিজের বাড়িতে থাকেন। সন্তানরা বিদেশ সেটেলড। এখন এই ২ কোটি টাকা থেকে তিনি কীভাবে নিয়মিত আয় করতে পারেন?
advertisement
এক্ষেত্রে ‘বাকেট স্ট্র্যাটেজি’ অবলম্বন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। মোট মূলধনকে দুটি ঝুড়িতে রাখতে হবে। একটি ঝুড়ির টাকা নিয়মিত আয়ের প্রয়োজনগুলি মেটাবে। অন্য ঝুড়ির টাকা অবসরের দীর্ঘ বছরগুলিতে মুদ্রাস্ফীতি এড়িয়ে রিটার্ন জেনারেট করতে বিনিয়োগ করা হবে।
এখন হাতে আছে ২ কোটি টাকা। এই টাকা দুটি ঝুড়িতে ভাগ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: রেকারিং ডিপোজিট খুললে একাধিক সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু অসুবিধাও, জেনে নিন বিস্তারিত...
প্রথম ঝুড়ি (নিয়মিত আয় এবং আপদকালীন পরিস্থিতি): এখানে ৬০ থেকে ৭০ লাখ রাখতে হবে। এই টাকা ৪ থেকে ৫ টি উচ্চ মানের ডেবট ফান্ডে বিনিয়োগ করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যাতে এসডব্লিউপি-র মাধ্যমে মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করা যায়। এক্ষেত্রে অতি স্বল্পকালীন, কম মেয়াদী বা স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগ স্কিমগুলি বেছে নিতে হবে।
এভাবে বিনিয়োগ করলে আগামী ৯ থেকে ১০ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত। এটা আপদকালীন ফান্ড হিসেবেও কাজ করবে যেখান থেকে প্রয়োজনের সময় দ্রুত টাকা তোলা যায়। তবে মাথায় রাখতে হবে, এই বয়সে স্বাস্থ্যবিমা যথেষ্ট নয়। তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে খরচের জন্য আলাদা মূলধন সরিয়ে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। যাইহোক, ত্রৈমাসিক আয়ের জন্য এই ঝুড়ির একটা অংশ সরকারের সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিমেও বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই জেনে নিন কী কী সুবিধা মিলবে
দ্বিতীয় ঝুড়ি (উচ্চ রিটার্নের জন্য): দ্বিতীয় ঝুড়িতে অবশিষ্ট ১.৩-১.৪ কোটি টাকা থাকবে। মুদ্রাস্ফীতিকে পরাস্ত করে পোর্টফোলিও যাতে উচ্চ গতিতে বৃদ্ধি পায় সে জন্য ইক্যুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নিফটি ৫০ বা সেনসেক্স ভিত্তিক সূচক তহবিল, ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হাইব্রিড ফান্ড এবং বাকিটা নিরাপদ এসসিএসএস, প্রধানমন্ত্রী বয়ো বন্দনা যোজনা এবং আরবিআই ফ্লোটিং রেট বন্ডগুলিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
প্রথম ঝুড়ি থেকে নিয়মিত ব্যবধানে টাকা তোলা হবে। দ্বিতীয় ঝুড়ির টাকায় হাত দেওয়া হচ্ছে না। তাই যদি মাত্র ৯ শতাংশ গড় রিটার্ন ধরে নেওয়া হয় তাহলেও দ্বিতীয় ঝুড়ির টাকা ১০ বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা হয়ে যাবে। তখন এই ঝুড়ি থেকে কিছু টাকা (পরবর্তী ১০ বছরের খরচের জন্য যথেষ্ট) তুলে নিয়ে প্রয়োজন অনুসারে প্রথম ঝুড়িতে স্থানান্তর করা যেতে পারে।