আজকাল যে কোনও পরিবারেরই প্রাথমিক চাহিদা হয়ে উঠেছে একটা গাড়ি। অনেকে আবার প্রথমেই নতুন গাড়ি কেনেন না, পুরনো বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়িই কিনে থাকেন। এ বার যে হেতু বড় কেনাকাটা করার জন্য নানান ধরনের লোন পাওয়া যায়, তাই গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে অনেকে গ্রাহকই বুঝে উঠতে পারেন না যে, কেমন ধরনের লোন নেবেন। আর গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে পার্সোনাল লোন না কার লোন নেওয়া হবে, সেটা বোঝার জন্য আগে জেনে নিতে হবে, এই দুই ধরনের লোনের বৈশিষ্ট্যাবলী এবং এর সুবিধা-অসুবিধা। এর মধ্যে পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে সে রকম কোনও বাধ্যবাধকতা থাকে না। যে কোনও বড় কেনাকাটার ক্ষেত্রে এই ধরনের ঋণ নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কার লোন বা গাড়ির ঋণ শুধুমাত্র গাড়ি কেনার উদ্দেশ্যেই নেওয়া যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: PM Kisan: কৃষকদের জন্য বড় খবর! মোদি সরকারের পক্ষ থেকে বিরাট স্বস্তি
পার্সোনাল লোন এবং কার লোনের তুলনা--
ঋণের ধরন:
পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত ঋণ হল অসুরক্ষিত ঋণ। তাই এই ঋণ নেওয়ার জন্য কোনও রকম জামানত (collateral) লাগে না।
আবার অন্য দিকে, গাড়ির লোন সুরক্ষিত লোন (Secured Loan)। এ ক্ষেত্রে ঋণদাতার কাছে গাড়ি বন্ধক দিতে হয়।
সুদের হার:
জামানত-সহ সুরক্ষিত লোনের তুলনায় অসুরক্ষিত লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার সাধারণত বেশি হয়। অসুরক্ষিত লোনের অনুমোদনের ক্ষেত্রে নিয়ম বেশ আঁটোসাটো।
চট করে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক, পার্সোনাল লোন এবং কার লোনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর--
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীবারেই কোটিপতি হওয়ার সুযোগ ! দেখুন লটারির রেজাল্ট
পার্সোনাল লোনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
- এটা অসুরক্ষিত লোন।
- পার্সোনাল লোনের মেয়াদ সাধারণত কম হয়।
- অর্থের পরিমাণ হতে পারে ৫ হাজার থেকে ৪০ লক্ষ পর্যন্ত।
- লোন নেওয়ার জন্য কোনও রকম জামানতের প্রয়োজন হয় না।
- ব্যাঙ্ক, যে কোনও নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি এবং অনলাইন ঋণদাতা-সহ নানা ধরনের ঋণদাতার কাছ থেকে এই লোন নেওয়া যায়।
- সুরক্ষিত লোনের তুলনায় সুদের হার চড়া।
- লোন হিসেবে নেওয়া অর্থরাশি যে কোনও উদ্দেশ্যসাধনের জন্য ব্যবহার করা যায়।
কার লোনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
- শুধুমাত্র গাড়ি কেনার উদ্দেশ্যেই কার লোন নিতে হবে।
- লোনের অর্থরাশি দিয়ে কেনা গাড়িটিই এ ক্ষেত্রে জামানত হিসেবে কাজ করবে।
- লোন পুরোপুরি শোধ না-করা পর্যন্ত গাড়িটির মালিকানা থাকে ঋণদাতার কাছে।
- কার লোনের মেয়াদ ৭ বছর পর্যন্ত হতে পারে।
- কম ক্রেডিট স্কোর থাকলেও এই লোনের সুবিধা পেতে পারেন গ্রাহক।
- শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক এবং নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি থেকেই গাড়ির ঋণ পাওয়া যাবে।
তবে এই দুই ধরনের ঋণের ক্ষেত্রেই কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা থাকে। তবে সে দিক থেকে দেখতে গেলে পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রেই বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। এই বিষয়ে আরও বিশদে বুঝতে দেখে নেওয়া যাক, পার্সোনাল লোন এবং কার লোনের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি কী কী।
পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত ঋণের সুবিধা-অসুবিধা--
সুবিধা:
- পার্সোনাল লোনের উপর কোনও রকম বাধ্যবাধকতা থাকে না। পার্সোনাল লোনের অর্থ দিয়ে যে কোনও কিছু কেনা যেতে পারে।
- এই ধরনের লোন শোধ করার ক্ষেত্রেও নমনীয়তার সুবিধা পাওয়া যায়।
- কোনও রকম জামানত ছাড়াই এই লোন পাওয়া যায়।
- আর ব্যক্তিগত লোন নিয়েও গাড়ি কেনা যায়।
অসুবিধা:
- পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার সাধারণত বেশি হয়, কারণ এটি অসুরক্ষিত লোন।
- এই ঋণের ধরন অসুরক্ষিত হওয়ায় ঋণ নেওয়ার সময় বেশ কঠোর নিয়মের উপর দিয়ে যেতে হয় গ্রাহককে।
- গ্রাহকের ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা নির্ভর করে তাঁর ক্রেডিট স্কোরের উপর। ভালো ক্রেডিট স্কোর না-থাকলে পার্সোনাল লোন পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: সন্তানের শক্তপোক্ত ভবিষ্যত গড়তে বিনিয়োগ করুন এই ভাবে, মোটা টাকায় সুন্দর জীবন
কার লোন বা গাড়ির ঋণের সুবিধা-অসুবিধা--
সুবিধা:
- কার লোন বা গাড়ির ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার সাধারণত কম হয়।
- কার লোন পেতে খুব একটা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় না।
- যে হেতু এটি সুরক্ষিত ধরনের লোন, তাই মাঝারি ক্রেডিট স্কোর রয়েছে, এমন গ্রাহকও এই লোন পেতে পারেন।
- আর এই লোনের ক্ষেত্রে গাড়িটিই সিকিওরিটি হিসেবে কাজ করে।
অসুবিধা:
- কার লোনের ক্ষেত্রে ঋণ হিসেবে নেওয়া অর্থ গাড়ি কেনা ছাড়া আর অন্য কাজে ব্যয় করা যাবে না।
- এই লোনের ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্ট জমা দিতে হবে গ্রাহককে।
- কার লোন নিয়ে সব রকম গাড়ি কেনা যায় না। গাড়ির ঋণ নিয়ে পুরনো গাড়ি কিনতে গেলে সমস্যা হতে পারে। কারণ গাড়িটি কতটা পুরনো সেটার উপর ভিত্তি করেই ঋণদাতা ঋণ দেবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ পুরনো ক্লাসিক গাড়ি নতুন করে সারিয়ে ব্যবহার করতে চাইছেন, সে ক্ষেত্রে তিনি কার লোনের মাধ্যমে সেই গাড়ি কিনতে পারবেন না।
- কার লোনের সাহায্য নিয়ে কেনা গাড়িটি ব্যাঙ্কের কাছে বন্ধক হিসেবে থাকবে। যত ক্ষণ না-লোন পরিশোধ করা হচ্ছে, তত ক্ষণ গাড়ির মালিকানা পুরোপুরি ভাবে গ্রাহক পাবেন না। অর্থাৎ লোন শোধ হওয়ার পরেই গাড়ির মালিকানা পাবেন গ্রাহক।