পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় ভ্রমণার্থীর সমাগম ঘটেছে। অথচ দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যটনের আশা ছিল, ওই সময়কালের মধ্যে ওই দেশে ৩৩ হাজার ৯০০-র কিছু বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে। আসলে ভ্রমণার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে কারণ বৈচিত্র্যপূর্ণ দুর্দান্ত ভ্রমণস্থল নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ষড়যন্ত্রে সত্যের ক্ষতি হয় না, হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে বিজেপি-র ভয় নেই: মুখ খুললেন অমিত শাহ
advertisement
এই কর্মসূচি অভিযানের গতি আরও বৃদ্ধি করার জন্য ৩৫ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল সঙ্গে নিয়ে কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং মুম্বইয়ের মতো ভারতের প্রধান শহরগুলিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রোড শোয়ের আয়োজন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যটন। ভারতীয় পর্যটক এবং বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য কী কী আকর্ষণ থাকবে, সেই বিষয়গুলি দেখানো হয়েছে ওই কর্মসূচিতে। গন্তব্যস্থল হিসেবে ওয়েস্টার্ন কেপ, কোয়াজুলুনেটাল, গ্যাউটেং, লিমপোপো এবং ইস্টার্ন কেপ প্রভৃতি অঞ্চলের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আবার কলকাতায় যে রোড শো হয়েছে, তার ফলে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে। যা ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রেও অনেক দিশা খুলে দেবে বলে আশা।
দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে পর্যটন বাড়ানোর কাজে সাহায্য করার নিরিখে ২০২২ সালে ভারত অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ফলে বর্তমানে ভারত সেই নিরিখে ষষ্ঠ বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সোর্স মার্কেটের জায়গা লাভ করেছে। ফলে চলতি বছরেও আশা বাড়ছে। পর্যটন বোর্ডের আশা, গত বছরের তুলনায় এই বছরে প্রায় ৭২ শতাংশ ভারতীয় ভ্রমণার্থী বৃদ্ধি পেতে চলেছে। ফলে ভারতীয় পর্যটকরা যাতে দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণের স্বাদ পুরোপুরি ভাবে লাভ করতে পারেন, তার জন্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে পর্যটন বোর্ড।
আরও পড়ুন- বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণেই ধনাগম, এই তিন রাশির জাতক-জাতিকারা দেখতে চলেছেন টাকার মুখ!
সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজমের MEISEA-র হাব হেড নেলিসওয়া এনক্যানি জানিয়েছেন, "এটা আমাদের বার্ষিক ভারতীয় রোড শোয়ের ১৯-তম সংস্করণ। দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতীয় পর্যটকদের থেকে যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পায়, তাতে আমরা সত্যিই আপ্লুত। ফলে সারা বিশ্বের বাজারের মধ্যে ভারতীয় বাজারই আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য রয়ে আসছে। কলকাতা, চেন্নাই এবং হায়দরাবাদের মতো উদীয়মান শহরের বাজারের ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে, শুধু তা-ই নয়, দিল্লি এবং মুম্বইয়ের মতো ট্র্যাডিশনাল মার্কেটের ক্ষেত্রেও বেশ রমরমাই বজায় রয়েছে।"
দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার একটাই সমস্যা হল, শুধু কলকাতা নয়, ভারতের কোনও শহর থেকেই কোনও ডিরেক্ট ফ্লাইট নেই সে দেশে ৷ তবে দুবাই, দোহা, আড্ডিস আবাবা, সেশেলস, কিংবা কেনিয়ার নাইরোবি হয়ে অনায়াসেই জোহানেসবার্গ বা কেপ টাউনের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বড় শহরগুলিতে পৌঁছনো সম্ভব ৷ একসময়ে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ মুম্বইতে আসলেও এখন সেই পরিষেবা বন্ধ ৷ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা চালু করতে অবশ্যই আগ্রহী সে দেশের সরকার ৷
এর পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার ট্যুরিস্ট বা বিজনেস ভিসা পাওয়াটাও ভারতীয়দের জন্য খুব একটা কঠিন কাজ নয় ৷ দক্ষিণ আফ্রিকা দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত হওয়ায় সে দেশে জুন-অগাস্ট মাস শীতকাল ৷ এবং ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি গ্রীষ্মকালই বলা যেতে পারে ৷ গোটা বছরের যে কোনও সময়তেই সে দেশে যাওয়া যেতে পারে তবে ফেব্রুয়ারির মতো প্রখর গরমে গেলে ক্রুগার পার্কের ‘জঙ্গল সাফারি’ করাটা খুব একটা আনন্দদায়ক নাও হতে পারে ৷ এ ছাড়া কেপটাউন, জোহানেসবার্গ, পোর্ট এলিজাবেথ, ডারবানের মতো দুর্দান্ত শহরগুলি আপনাকে ওয়েলকাম জানাতে সবসময়েই তৈরি ৷ একটু বেশি সময় হাতে নিয়ে বেরোলে ‘কালাহারি’ বা ‘হালাহারি’-র মতো মরুভূমি দেখে আসাটাও সম্ভব ৷ তাই আর দেরি কেন, এবছরই একটা সময় করে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা কিন্তু সেরে আসতেই পারেন ৷