এই নিয়ে গত ৬ সপ্তাহেরও কম সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রণী বিনিয়োগকারীরা ৯২,২০২.১৫ কোটি টাকা লগ্নি করল জিও-তে৷ এই তালিকায় রয়েছে ফেসবুক (৪৩,৫৭৩.৬২ কোটি টাকা), সিলভার লেক পার্টনার্স (৫৬৫৫.৭৫ কোটি টাকা), ভিস্তা ইক্যুইটি পার্টনার্স (১১,৩৬৭ কোটি টাকা), জেনারেল অ্যাটলান্টিক (৬৫৯৮.৩৮ কোটি টাকা), কেকেআর (১১,৩৬৭ কোটি টাকা), মুবাদালা (৯০৯৩ কোটি টাকা) এবং সিলভার লেক (৪৫৪৫.৮০ কোটি টাকা)-র মতো সংস্থার বিনিয়োগ৷
advertisement
গোটা দেশজুড়ে সস্তায় উচ্চমানের ডিজিটাল পরিষেবা দেওয়াই জিও-র লক্ষ্য৷ এই মুহূর্তে সংস্থার ৩৮.৮০ কোটি গ্রাহক রয়েছে৷ ব্রডব্যান্ড, স্মার্ট ডিভাইস, ক্লাউড অ্যান্ড এজ কম্পিউটিং, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর মতো বিবিধ পরিষেবায় পা রেখেছে জিও৷ জিও-র লক্ষ্যই হল দেশের ১৩০ কোটি মানুষ এবং ছোট বড় ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং কৃষকদের কাছে পৌঁছে যাওয়া যাতে তাঁরা সামগ্রিক উন্নতির সুফল ভোগ করতে পারেন৷
সম্মিলিত ভাবে ৪০ বিলিয়ন ডলার সম্পদ থাকা সিলভার লেক তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম৷ বিশ্বমানের ম্যানেজমেন্ট টিম-গুলির সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসাধারণ প্রতিষ্ঠান তৈরি করাই সিলভার লেক-এর লক্ষ্য৷ Airbnb, আলিবাবা, ডেল টেকনোলজি, ট্যুইটার, Alphabet's Verily and Waymo Units-এর মতো অসংখ্য বিশ্বখ্যাত সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ রয়েছে সিলভার লেক-এর৷
সিলভার লেক-এর মোট বিনিয়োগ নিয়ে বলতে গিয়ে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ অম্বানি বলেন, 'ভারতের ডিজিটাল ব্যবস্থাকে প্রত্যেক ভারতীয়ের উন্নতির জন্য বদলে দেওয়ার দিশায় সিলভার লেক এবং তার সহকারী বিনিয়োগকারীরা আমাদের অত্যন্ত মূল্যবান অংশীদার৷ আমরা তাদের আস্থা এবং সমর্থন পেয়ে খুশি, একই সঙ্গে বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা উপকৃত হব যাতে আমরা ভারতে ডিজিটাল সমাজকেই বদলে দিতে পারি৷ আমি জোরের সঙ্গে বলতে চাই যে কোভিড ১৯ মহামারি সত্ত্বেও মাত্র পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে জিও-তে সিলভার লেক-এর অতিরিক্ত বিনিয়োগ ভারতীয় অর্থনীতির স্বকীয় শক্তিরই পরিচয় দেয়, ডিজিটাল শক্তির সঠিক বিকাশ হলে এই শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে৷
এই বিষয়ে বলতে গিয়ে সিলভার লেক-এর কো-সিইও এবং ম্যানেজিং পার্টনার ইগন ডারবান বলেন, 'আমাদের আরও বেশি সংখ্যক সহকারী বিনিয়োগকারীদের এই সুযোগটি দিতে পেরে এবং সস্তায় আরও ভাল মানের ডিজিটাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য জিও-র লক্ষ্যে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা খুবই খুশি৷ বিনিয়োগের এই ধারা থেকেই স্পষ্ট জিও-র ব্যবসার মডেল অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং মুকেশ অম্বানী এবং তার দলের প্রতি আমাদের মুগ্ধতার প্রমাণ যাঁরা বিশ্বের অন্যতম সেরা টেকনোলজি সংস্থা গড়ার সাহসী স্বপ্ন দেখে৷'
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বেসরকারি ক্ষেত্রে ভারতের বৃহত্তম সংস্থা৷ যার বাৎসরিক সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ৬৫৯,২০৫ কোটি টাকা৷ নগদ মুনাফার পরিমাণ ৭১,৪৪৬ কোটি টাকা এবং ৩১ মার্চ ২০২০-তে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে মোট লাভের পরিমাণ ৩৯,৮৮০ কোটি টাকা৷
RIL-এর সুবৃহৎ কর্মকাণ্ড হাইড্রোকার্বন উত্তোলন থেকে উৎপাদন, পেট্রোলিয়াম পরিশোধন এবং মার্কেটিং, পেট্রোকেমিক্যালস, রিটেল এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রে বিস্তৃত রয়েছে৷ বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাঁচশোটি প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা Fortune তৈরি করেছে, তাতে শীর্ষ ভারতীয় সংস্থা হিসেবে স্থান পেয়েছে RIL৷ রাজস্ব এবং মুনাফা উভয় মানদণ্ডেই সেই তালিকায় ১০৬ নম্বর স্থানে রয়েছে RIL৷ ২০১৯ সালের Forbes Global 2000 ক্রমতালিকায় ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে শীর্ষে থেকে ৭১তম স্থানে রয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড৷ ২০১৯ সালের সেরা কর্মস্থল হিসেবে ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে LinkedIn-এর বিচারে ১০ নম্বর স্থানে রয়েছে RIL৷
জিও প্ল্যাটফর্ম লিমিটেড রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি সহযোগী সংস্থা যারা সর্বশ্রেষ্ট 4G LTE প্রযুক্তি দিয়ে বিশ্বমানের all-IP ডেটা স্ট্রং নেটাওয়ার্ক গড়ে তুলেছে৷ ভবিষ্যতে যা সহজেই ৫জি, ৬জি এবং তার পরেও আরও উন্নত প্রযু্ক্তিতে উন্নত করা যাবে৷
জিও-র আগমনে ভারতীয় টেলিকম ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে৷ সারা দেশেই জিও গ্রাহকরা যে কোনও নেটওয়ার্কে বিনামূল্যে ভয়েস কল করতে পারেন৷ গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতে সর্বশ্রেষ্ঠ গুণমান এবং সস্তার ডেটা মার্কেট গড়ে তুলেছে জিও৷