নিজে পরিবার অথবা সংসারের খরচ পুনর্বিবেচনা করে দেখতে হবে:
বছর শুরু করার সময়ে নিজের সংসার বা পারিবারিক খরচের বাজেটটা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। তার জন্য প্রথমে নিজেদের মাসিক উপার্জনের উপর নজর দিতে হবে। এর পাশাপাশি লক্ষ্য রাখতে হবে স্থায়ী এবং প্রয়োজনীয় কিছু খরচের উপরেও। এ-ছাড়াও গোটা বছরের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের বিষয়টাও দেখা উচিত। এই তিনটে দিক ভাল করে বিবেচনা করে দেখার পরেই কেউ নিজের পরিবারের জন্য উপযুক্ত বাজেট তৈরি করতে সক্ষম হবেন। নিজেদের বাজেটের পুনর্মূল্যায়ন এই পরিস্থিতিতে ভীষণই উপযোগী হতে পারে। আসলে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে মুদিখানার জিনিস এবং গ্যাস বা জ্বালানির দাম বেড়েছে। যার ফলে এই খাতে পরিবারগুলিকে আরও বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। তাই জমা এবং খরচের হিসেব কষে নিয়ে সহজেই বাজেট তৈরি করে ফেলা যাবে।
advertisement
আরও পড়ুন: চিকিৎসার খরচ দিন দিন বাড়ছে! এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য কত পরিমাণ স্বাস্থ্য বিমা নেওয়া উচিত?
এমার্জেন্সি ফান্ড পরীক্ষা করে নিতে হবে:
দুঃসময়ের জন্য আমরা সাধারণত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং অর্থ সরিয়ে রেখে দিই। সে রকমই সংসারের বাজেট করার ক্ষেত্রেও এটা মাথায় রাখতে হবে। জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে টাকা লাগলে সেই টাকা আলাদা করে সরিয়ে রাখা আছে কি না, সেটা এক বার যাচাই করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ধরা যাক, কোনও সময় অর্থনীতি ধুঁকছে, এমন পরিস্থিতি তৈরি হল। সেই সময়ের জন্য কী করণীয়। আসলে সেই সময়ই কাজে আসে এই ধরনের ফান্ড। যত ক্ষণ না অর্থনীতি আগের জোরালো জায়গায় ফিরছে, তত ক্ষণ রক্ষাকবচ হিসেবেই কাজ করে এমার্জেন্সি ফান্ড। তবে এটা শুধু এ-ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, তার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের অন্যান্য দুর্যোগের ক্ষেত্রেও দারুন ভাবে কাজে আসে। ধরা যাক, পরিবারের রোজগেরে সদস্যদের চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা চলছে, কিংবা কোনও কারণে চাকরি খোয়াতে হয়েছে। এই সময়েও কাজে আসবে এমার্জেন্সি ফান্ড।
ঋণের বিষয়টাও সামাল দিতে হবে:
ধরা যাক, কেউ ঋণ পরিচালনার বিষয়ে দারুন পারদর্শী। কিন্তু সেই ঋণের পরিমাণ আরও কীভাবে কমানো যায় এবং তা সঙ্কুচিত করা যায়, সেই দিকটাও দেখতে হবে। ধরা যাক, এক জন আয় বৃদ্ধি অথবা বর্ষশেষের বোনাসের আশা করছেন। তা-হলে উচ্চ সুদের হার-সহ যে কোনও ঋণ ওই অতিরিক্ত আয়ের মাধ্যমেই মেটানোর কথা বিবেচনা করতে হবে। এর পর বাকি থাকা ঋণের পরিমাণ সঙ্কুচিত করার কথাও ভাবতে হবে। একাধিক ঋণের উপর ভিন্ন ভিন্ন সুদের হার বিবেচনা করতে সাহায্য করবে। লোনের পরিমাণ কমিয়ে সহজ ভাবেই নিজের অর্থনৈতিক জীবন সুন্দর করে তোলা যাবে। আর আর্থিক চাপও কাটানো সম্ভব হবে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হলে আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গেও কথা বলে নেওয়া যাবে।
ভাল থাকার উপর গুরুত্ব দিতে হবে:
সমীক্ষা বলছে, অতিমারী সারা বিশ্বের মানুষের শরীরে এবং মনে বিস্তর প্রভাব ফেলেছে। নতুন বছরে তাই ব্যক্তিগত সুস্থতা এবং আর্থিক ভাবে ভাল থাকার বিষয়টাকে বেশি পরিমাণে গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য কাজের জায়গা থেকে পাওয়া সুযোগসুবিধাগুলিকে কাজে লাগাতে হবে। যেমন - অবসরকালীন পরিকল্পনা, ইক্যুইটি কম্পেনসেশন এবং গ্রুপ ইনস্যুরেন্সের দিকে নজর দিতে হবে।
নিজের লক্ষ্য স্থির রাখা জরুরি:
অবসরকালীন জীবন যাতে সুন্দর এবং মসৃণ হয়, তার জন্য নিজের লক্ষ্যও স্থির রাখতে হবে। আসলে আর্থিক লক্ষ্য পূরণের জন্য সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের উপর গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। যদি আর্থিক লক্ষ্য ঠিকঠাক থাকে, তা-হলে নতুন কোনও আর্থিক লক্ষ্য নেওয়া যাবে কি না, সেটা যাচাই করে দেখতে হবে। এর জন্য আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।
বিনিয়োগের উপায়:
এমন উপায়ে বিনিয়োগের কথা ভাবা উচিত, যা বিনিয়োগকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, বেশির ভাগ মানুষেরই বিশ্বাস, তাদের নিজেদের বিনিয়োগের পোর্টফোলিও-র সঙ্গে তাদের মূল্যবোধ, ভরসা ইত্যাদির সামঞ্জস্য থাকা উচিত। তাই গুরুত্ব অনুযায়ী বিনিয়োগের উপায় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক উপদেষ্টারও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।