কিন্তু টাকা ছেলের হাতের মোয়া নয়। চাইলেই পাওয়া যায় না। এর জন্য দরকার অধ্যাবসায় এবং সঠিক পরিকল্পনা। ইদানীং অনেকেই একাধিক চাকরি করছেন। যার পোশাকি নাম মুনলাইটিং। এতে সংসার কিছুটা সামাল দেওয়া যায়। কিন্তু সবার পক্ষে তো আর ডবল ডবল চাকরি যোগাড় করা সম্ভব নয়। তাঁরা কী করবেন? উত্তর, ইন্টারনেট। হ্যাঁ, উপার্জনের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে ইন্টারনেট। বাড়িতে শুয়ে-বসেই মোটা টাকা রোজগার এখন ‘বাঁয়ে হাত কা খেল’। কীভাবে? দেখে নেওয়া যাক সেটাই।
advertisement
আরও পড়ুন: আবারও অনেকটাই দাম বাড়ছে দুধের, চিন্তায় মধ্যবিত্ত
লিখিত নির্দেশিকা তৈরি করা: বিভিন্ন বিষয়ের স্টাডি গাইড তৈরি করে বিক্রি করা যায়। এমনই পরামর্শ দিচ্ছেন, ডিলনিউজের গ্রাহক বিশ্লেষক জুলি রামহোল্ড। তিনি বলছেন, ‘স্টাডি গাইড বিক্রি রোজগারের সহজ পন্থা। অ্যামাজনের (কিন্ডলে প্রকাশ করে) মাধ্যমে, ইটসি-তে ডিজিটাল ডাউনলোড হিসেবে বিক্রি করেও প্রচুর টাকা আয় করা যায়। এই নিয়ে টিকটকে প্রচুর ভিডিও রয়েছে’। সঙ্গে জুলি আরও জানিয়েছেন, ‘এই পৃষ্ঠাগুলো তৈরি করতে ক্যানভা বা অ্যাডোব প্রোগ্রাম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা চাই। তবে ক্যানভাতে বিনামূল্যের বিকল্প রয়েছে। প্যাসিভ ইনকামের এটা সত্যিই সহজ উপায়’।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শুরুতে কত হল সোনা-রুপোর দাম ? দেখে নিন এখনই!
টুইচ-এ লাইভ গেমিং: ভিডিও গেম যাঁদের ধ্যান-জ্ঞান, তাঁদের জন্য এটা আদর্শ। টুইচে লাইভ ভিডিও গেম খেলেন খেলোয়াড়রা। দর্শকরা হামলে পড়ে সেটা দেখে। চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে। এখান থেকেই মোটা টাকা রোজগার হয়। গ্যাজেট ফ্যাকসের প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল নিল বলছেন, ‘গেম খেলার আবেগ, ভালোবাসাই এখানে জীবিকা হয়ে উঠতে পারে। টুইচ এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যা গেমারদের জীবন গড়ে দেয়। টুইচে সাবস্ক্রিপশন পিছু ৪.৯৯ ডলার দিতে হয়। এর অর্ধেক গেমারের’।
ফেসলেস ইউটিউব চ্যানেল: অনেকে ভাবছেন, ফেসলেস ইউটিউব চ্যানেলটা আবার কী? চ্যানেলের মালিক বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে এখানে দেখা যায় না। অবশ্য এই সব চ্যানেলে যে ধরনের কনটেন্ট থাকে তাতে ক্রিয়েটরকে দেখার প্রয়োজনও হয় না। শুধুমাত্র ভয়েস আসে। অনেক সময় ভিডিও-ও থাকে। কিন্তু এই চ্যানেলের বিশেষত্ব হল, শুধু অডিও। এসইও অ্যান্টের সিইও রোনাল্ড অ্যান্ডার বলছেন, ‘এই ধরনের চ্যানেল থেকে মাসে ২০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। বিনামূল্যে ভিডিও এবং সাউন্ডট্র্যাক ডেটাবেসে ট্যাপ করে কনটেন্ট তৈরি করেন ক্রিয়েটররা’। তাঁর পরামর্শ, কোনও ভিডিও নয়, কালো পর্দার কনটেন্টের মাধ্যমে এই ধরনের চ্যানেল আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে। যেমন ঘুমপাড়ানি সঙ্গীত, বৃষ্টির শব্দ কিংবা ধ্যান করা নিয়ে আলোচনা।
লোকেশন ডেটা মনিটাইজ: ‘আজকাল প্রত্যেকেরই ফোনে এক ডজনের; বেশি অ্যাপ রয়েছে। আপনার প্রতিটা পদক্ষেপকে ট্র্যাক করছে’। বলছেন হ্যাপি হংকংগারের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা মিন টম। তাঁর কথায়, ‘এখন এটা থেকে আপনার টাকা রোজগারের সময়। ট্যাপেস্ট্রি ইউজাররা শুধুমাত্র নিজেদের লোকেশন ডেটা শেয়ার করেই প্রতি মাসে ২৫ ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন’। প্রসঙ্গত ট্যাপেস্ট্রি ইউজারদের আচরণ এবং কেনাকাটা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে বড় ব্র্যান্ডগুলোকে সাহায্য করে।
ছবি বিক্রি: ‘১৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমি এটাই করছি’। বলছেন ফুলসুটকেস ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা জুর্গা রুবিনোভাইট। তাঁর কথায়, ‘প্রথম দিকে এটা আমার শখ ছিল। কয়েক বছর পর এখান থেকেই মাসে কয়েক হাজার ডলার রোজগার করতে শুরু করি। এখন আমার নিজের ব্যবসা আছে। পাঁচ বছরের বেশি কোনও নতুন ছবি আপলোড করিনি। তাই রয়্যালটি কিছুটা কম পাই। কিন্তু এখনও মাস গেলে পুরনো ছবি থেকে ৩০০ ডলার মতো হাতে আসে। অথচ আমি এর পিছনে কোনও সময় দিই না’।
অ্যাপ টেস্টিং: অনলাইনে আয় করার আরেকটা উপায় হল অ্যাপ টেস্টিং। ইউজার টেস্টিং, ট্রাই মাই ইউআই-এর মতো কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যারা নতুন মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইট পরীক্ষা করে দেখার জন্য টাকা দেয়। কেন টাকা দেয়? প্রথমত তারা চায়, অ্যাপ বা ওয়েবসাইটগুলো সাধারণ মানুষ পরীক্ষা করে দেখুক। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষাকারী সংস্থার মাধ্যমে যাওয়ার চেয়ে এটা অনেক সস্তা। হার্ডব্যাকনের সিইও জুলিয়েন ব্রাল্ট বলছেন, ‘২০ মিনিটের পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের জন্য ১০ ডলার উপার্জন করা যায়’।