সেই তিনের দশক থেকেই প্রতিটি ভারতীয় পরিবারের রান্নাঘরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বনস্পতি। আবার বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বলতে গেলে বনস্পতি হচ্ছে হাইড্রোজেনেটেড উদ্ভিদজাত ভোজ্য তেল। এর অতুলনীয় স্বাদ, গন্ধ খাবারে একটা আলাদা মাত্রাই যোগ করতো। আর দামও বরাবরই নাগালের মধ্যেই থাকতো। ফলে আগের প্রজন্মের মানুষদের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছিল বনস্পতি ডালডা। কিন্তু আটের দশকের শেষ দিক থেকে বনস্পতির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়তে শুরু করে। কারণ সেই সময় প্রকাশ্যে আসে, এর মধ্যে রয়েছে এমন ধরনের ফ্যাট বা ট্রান্স-ফ্যাট (TFA), যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেই থেকেই বনস্পতির মধ্যে থাকা ট্রান্স-ফ্যাট কমিয়ে যাতে এটাকে আরও স্বাস্থ্যকর বানানো যায়, তার জন্যই নিরলস গবেষণা চালিয়ে গিয়েছে প্রস্তুতকারক সংস্থা। অবশেষে সেই প্রচেষ্টায় সফল হল ডালডা বনস্পতি।
advertisement
কলকাতায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে ডালডা বনস্পতি। তাদের তরফে জানানো হয়েছে যে, ডালডা বনস্পতি এখন ট্রান্স-ফ্যাট মুক্ত। ওই অনুষ্ঠানে একটি আলোচনা চক্রেরও আয়োজন করা হয়েছিল। ব্র্যান্ড মার্কেটিং প্রতিনিধির পাশাপাশি সেই আলোচনায় ভার্চুয়াল ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন ভারতীয় রন্ধনের রাজা সেলিব্রিটি শেফ সঞ্জীব কাপুর (Sanjeev Kapoor) এবং বিখ্যাত পুষ্টিবিদ নৈনি শেতলওয়াড় (Naini Setalvad)।
Bunge India মূলত তৈলবীজ এবং শস্য কেনা-বেচা, সঞ্চয় এবং পরিবহণ করে। সেই সঙ্গে কমার্শিয়াল গ্রাহকদের জন্য ভোজ্য তেলের প্রক্রিয়াকরণ এবং বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতকারক সংস্থার জন্য উপকরণও তৈরি করে। Bunge India-র জিএম মার্কেটিং মিলিন্দ আচার্য বলেছেন, “ডালডা ভারতের বনস্পতি। বরাবরই আমরা লাভের থেকে সুরক্ষাকেই গুরুত্ব দিয়ে এসেছি। তাই ডালডায় থাকা ট্রান্স-ফ্যাটের পরিমাণ কী ভাবে কমানো যায়, সেটাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। আর গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ডালডা বনস্পতি এখন ট্রান্স-ফ্যাট মুক্ত- অব সেহত কে সাথ, স্বাদ চখেগা ইন্ডিয়া!”
আবার আলোচনায় ট্রান্স-ফ্যাট বা ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেছেন পুষ্টিবিদ নৈনি শেতলওয়াড়। তাঁর কথায়, “বিগত কয়েক দশক ধরে ট্রান্স-ফ্যাটের বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। যা হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের রোজকার খাবারের মধ্যে ট্রান্স-ফ্যাট লুকিয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, পশুজাত খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত ট্রান্স-ফ্যাট উপস্থিত থাকে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র গাইডলাইন অনুসারে, রোজ এক শতাংশেরও কম পরিমাণ ট্রান্স-ফ্যাট খাওয়া উচিত। আর FSSAI গাইডলাইন মেনেই ডালডা বনস্পতিতে সীমার মধ্যে ট্রান্স-ফ্যাট (TFA) কন্টেন্ট থাকে। তবে প্রস্তুতকারক সংস্থা এ বার FSSAI-এর নির্দেশ অনুযায়ী ট্রান্স-ফ্যাট মুক্ত পণ্য বাজারে আনতে চলেছে। ফলে ডালডা বনস্পতিকে রান্নার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এখন আমাদের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।”
পুরনো দিনের স্মৃতি হাতড়ে শেফ সঞ্জীব কাপুর বলেন, “উৎসবের মরশুমে স্পেশ্যাল খানাপিনা থেকে শুরু করে রোজকার লাঞ্চবক্সের খাবারে ডালডা বনস্পতি আলাদাই স্বাদ যোগ করে আসছে। আমার মনে পড়ে, আমার বাড়ির বড়রা ডালডা বনস্পতি ছাড়া কোনও খাবারের কথা ভাবতেই পারতেন না। কারণ এটি স্বাদে-গন্ধে সত্যিই অতুলনীয়। শুধু রান্নার মাধ্যম হিসেবেই নয়, নানা রকম ভাবেই ডালডা ব্যবহার করা যায়। নতুন প্রজন্মের মধ্যেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বনস্পতি ডালডা। আর সংস্থার এই ঘোষণা ডালডা বনস্পতির উপর আস্থা আরও বাড়িয়ে দেবে। আমি তো নিজেই চেখে দেখেছি, আর এ বার আপনারাও চেখে দেখুন!” জানালেন উৎসব স্পেশাল একটি রেসিপির কথাও ৷ ডালডা-সহকারে গাজর, বীটরুট এবং গুড় দিয়ে বাড়িতে হালুয়া তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন সঞ্জীব কাপুর ৷