মেনে নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক পরামর্শদাতা। কলকাতায় ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স (ICC)-এর বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন মুখ্য আর্থিক পরামর্শদাতা সঞ্জীব সান্যাল। তাঁর দাবি, কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। বছরে অন্তত ৮ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হার ধরে রাখা গেলেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব। নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের সওয়াল, শুধু সরকারের পক্ষে এই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয়। বেসরকারি বিশেষত, কর্পোরেট ও ক্ষুদ্র - মাঝারি ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। যদিও চাহিদা না বাড়লে সেটা কী ভাবে সম্ভব, তা দু’জনের কথাতেই স্পষ্ট হয়নি।
advertisement
আর্থিক সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, চলতি বছরে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। সঞ্জীবের দাবি, সমীক্ষায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার দাওয়াই রয়েছে।
সেই পথে চলতে মোদি সরকার বদ্ধপরিকর। আগামী দিনে কেন্দ্রের কাজে সেই প্রতিফলন দেখা যাবে বলেও দাবি তাঁর। এর মধ্যে আয় করে আমূল সংস্কার যেমন আছে, তেমনই রয়েছে রফতানি বাড়াতে একটি সুসংহত নীতি তৈরির পরিকল্পনা। আগামী মাসেই জমা পড়তে পারে ডাইরেক্ট ট্যাক্স কোড নিয়ে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট। দেশে আয়কর নীতি ও পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ সুপারিশ করতে চলেছে কমিটি। আয়কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি কর-বিরোধ নিষ্পত্তি ও মূল্যায়ন ও আইনি জটিলতা কমানোর ব্যাপারে সুপারিশ করবে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি।
পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি নিয়ে মাতামাতি করার বদলে বরং দেশের বুনিয়াদি ব্যবস্থার দিকে নজর ঘোরাক কেন্দ্র। অর্থনীতিবিদদের একটি অংশের এই সমালোচনারও জবাব দিয়েছেন মুখ্য আর্থিক পরামর্শদাতা। তাঁর দাবি, জনস্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, জীবনের মান বাড়ানো, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও রফতানির মতো ১২টি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র চিহ্নিত করেই ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার লক্ষ্যমাত্রা। সার্বিক উন্নতি না হলে এই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয় বলেই জানান তিনি। রাজীব কুমার ও সঞ্জীব সান্যাল - দু’জনেই মেনে নিয়েছেন, চিনের তুলনায় এখনও অধিকাংশ মাপকাঠিতেই অনেক পিছিয়ে ভারত। বিশেষত মূলধনের খরচ অত্যাধিক বেশি হওয়াতেই সমস্যায় পড়েন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা। বিদেশ থেকে মূলধন তুললে এই চড়া হার কিছুটা কমতে পারে বলে সওয়াল তাদের। বাজেটেও একই কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এনিয়ে প্রবল বিরোধিতা শুরু হলেও এতে আখেরে সুিবধা হবে বলেই মত তাদের।
জিএসটির পর আরও এক বৈপ্লবিক কর সংস্কারের পথে কেন্দ্র।