মাত্র ২ টাকায় কেনা সাধারণ প্রদীপই তাঁর শিল্পীসত্তার ছোঁয়ায় হয়ে ওঠে শিল্পকর্ম। বাজারের সাধারণ প্রদীপ যেখানে বিক্রি হয় ২–৫ টাকায়, সেখানে স্বাগতার হাতে আঁকা প্রদীপ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। আবার একসঙ্গে সেট আকারে বিক্রি হলে তার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। এত কম মূলধনে শুরু করা এই কাজ আজ তাঁর বড় সহায়ক আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: দিঘার ঝাউবনে পড়ে ঢিবির মতো ওটা কী…! কাছে যেতেই চমকে উঠল পর্যটকরা, আতঙ্কে কাঁটা সৈকত শহর
শুরুটা হয়েছিল নিছক শখ থেকে। নিজের হাতে তৈরি প্রদীপগুলোর ছবি প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেন স্বাগতা। কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলি ভাইরাল হয়ে যায়। দেশ-বিদেশের মানুষ তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে অর্ডার দিতে শুরু করেন। এখন তাঁর প্রদীপ ও ডিজাইন করা অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে। ভিনরাজ্যের গ্রাহকরাও তাঁর তৈরি মাটির পণ্য লুফে নিচ্ছেন।
তবে এখানেই থেমে নেই তিনি। শুধু দীপাবলির প্রদীপ নয়, দুর্গাপুজো, রাখি বন্ধন, বড়দিন, নববর্ষ, এমনকি বিয়েবাড়ি বা গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠান, প্রতিটি উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা থিমে তৈরি করছেন নানান রঙিন সামগ্রী। এই সৃজনশীলতার মাধ্যমেই তিনি এখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।
আরও পড়ুন: দিওয়ালির আগেই ধামাকা! মেদিনীপুরে উদ্ধার হল টন টন…! বিশেষ অভিযানে সাফল্য পুলিশের
স্বাগতার কথায়—“আমি ছোটবেলা থেকেই রং-তুলি ভালোবাসি। আগে ভাবতাম এটা শুধু একটা শখ। কিন্তু এখন বুঝেছি, ভালোবাসার কাজকেও যদি মন দিয়ে করা যায়, সেটাই হয়ে ওঠে জীবনের রোজগারের পথ। আমি চাই, অন্য মেয়েরাও যেন বুঝতে পারেন, বাড়িতে বসেও নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে কিছু করা সম্ভব।”
আজ তাঁর এই গল্প বহু গৃহবধূ, ছাত্রছাত্রী এবং কর্মহীন যুবক-যুবতীদের কাছে এক জীবন্ত উদাহরণ।
কারণ, এই কাজের জন্য প্রয়োজন নেই কোনও বড় যন্ত্রপাতি বা বেশি পুঁজি, শুধু দরকার একটু ধৈর্য, রং তুলির স্পর্শ আর কিছু নতুন ভাবনার ইচ্ছে।
স্বাগতা প্রমাণ করেছে, যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে ঘরে বসেই শুরু করা যায় এক নতুন ভবিষ্যৎ। মাত্র ২ টাকায় শুরু করা তাঁর এই ছোট ব্যবসা আজ আত্মনির্ভরতার বড় দৃষ্টান্ত, যা প্রতিদিন আরও অনেক নারীকে শেখাচ্ছে, চাইলে আমরাও পারি।