রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সম্পত্তির পরিমাণ হিসেব করেছে বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফরচুন। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় তা প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। বিগত ৭০ বছর সিংহাসনে আসীন ছিলেন রানি। সেই সময়েই এই পরিমাণ সম্পত্তি অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ২৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে, যাকে রয়্যাল ফার্ম বলা হয়। রাজা ষষ্ঠ জর্জ (George VI) এবং প্রিন্স ফিলিপ (Prince Philip) এটিকে পারিবারিক ব্যবসাও বলে থাকেন।
advertisement
আরও পড়ুন: রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যোগ কেন করবেন? দুর্নীতির হদিশে চাঞ্চল্য দেশে!
রানি কীভাবে রোজগার করলেন: করদাতাদের তহবিল থেকে সার্বভৌম অনুদানের আকারে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা পেতেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটিশ সরকার রাজপরিবারকে এই টাকা দেয়। কেন এই বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়? কিং জর্জ তৃতীয় এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাজা জর্জ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি সংসদকে দিয়ে দেন। তার বদলে রাজ পরিবারকে ব্রিটিশ সরকার প্রতি বছর থোক একটা টাকা দেয়। একে আগে ‘নাগরিক তালিকা’ বলা হত। ২০১২ সাল থেকে যা ‘সার্বভৌম অনুদান’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
এবার একটা চমকে দেওয়ার মতো হিসেব দেওয়া যাক। ২০২১-২০২২ সালে এই ‘সার্বভৌম অনুদান’-এর পরিমাণ ছিল ৮৬ মিলিয়ন পাউন্ড। রানির প্রসাদ বাকিংহাম প্যালেসের (Buckingham Palace) রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই টাকা রাজপরিবারকে দেওয়া হয়। তবে হ্যাঁ, রানিকে আলাদা করে কোনও টাকা বা বার্ষিক অনুদান দেওয়া হয় না।
আরও পড়ুন: মাত্র ৫০ হাজার টাকায় বিদেশ সফর! IRCTC-র এই প্যাকেজে চমকে যেতে পারেন আপনিও
রয়্যাল ফার্মের মূল্য ২.২৪ লক্ষ কোটি টাকা: ব্রিটেনের রয়্যাল ফার্ম মনার্ক পিএলসি নামেও পরিচিত। এর আনুমানিক সম্পদ মূল্য ২৮ বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ২.২৪ লাখ কোটি টাকা। এই ব্যবসায়িক ফার্মে রানি এলিজাবেথের নেতৃত্বে রাজ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। অনেক ইভেন্ট এবং পর্যটনের মাধ্যমে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মিলিয়ন পাউন্ড জোগান দেয়। ফার্মের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কিং চার্লস (King Charles) এবং তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম (Prince William) এবং তাঁর স্ত্রী কেট, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স এডওয়ার্ড (Prince Edward) এবং তাঁর স্ত্রী সোফি। ফোর্বসের মতে, ২০২১ সাল নাগাদ রাজপরিবারের রিয়েল এস্টেটের সম্পদ ছিল প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার।
যদিও ক্রাউন এস্টেট মারফত জমি এবং অন্যান্য হোল্ডিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর একটি বিশাল তহবিল আসে, তবে এটি রানি বা অন্য কোনও সদস্যের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। ক্রাউন এস্টেট আধা-স্বাধীন পাবলিক বোর্ড দ্বারা পরিচালিত। ২০২১-২২-এর জুনে ক্রাউন এস্টেট থেকে ৩১২.৭ মিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার বেশি। প্রকৃতপক্ষে, সার্বভৌম অনুদানের আকারে প্রাপ্ত পরিমাণ এই রাজস্বের অংশ, যা শুরুতে ১৫ শতাংশ ছিল, ২০১৭-১৮ সালে তা বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এখন ২০২৮ সালের মধ্যে ফের তা ১৫ শতাংশে কমিয়ে আনা হবে।
রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তি: রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগ, শিল্প সংগ্রহ, গয়না এবং রিয়েল এস্টেট থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করেছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। মায়ের কাছে থেকে ৭০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পারিবারিক সম্পত্তিও পেয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে দামি পেইন্টিং, গয়না, স্ট্যাম্প সংগ্রহ, ঘোড়া ইত্যাদি। বলা হচ্ছে, রানির পর কিং চার্লস সরাসরি বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত হবেন না, তবে রানির সম্পত্তিতে তাঁর অধিকার থাকবে, কিন্তু সীমিত।